কলেজছাত্রী নূপুর আক্তার শীলা (১৭) মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৫ই নভেম্বর রাজধানীর শাহ আলী থানাধীন তুরাগ সিটির ৩১ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে শীলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত্যুর পর শীলার পিতা-মাতা বলেছিলেন, স্থানীয় বখাটেরা শীলাকে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। পরে বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য আত্মহত্যার কথা প্রচার করেছে। এ ঘটনায় শাহ আলী থানায় মামলা হয়। মামলার আসামিরা হচ্ছে- বনি আমীন ওরফে সাকিব, ময়না, জগলু, লুনা ও লিঙ্কন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই সিদ্দিক আহমেদ বলেন, শীলার মৃতদেহের
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে শীলা হত্যাকাণ্ডের শিকার না আত্মহত্যা করেছে তা আরও তদন্তের পর পরিষ্কার হবে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, মিরপুর মধ্য পাইকপাড়ায় মামার বাসায় থাকতেন নূপুর আক্তার শীলা। পড়ালেখা করতেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষে। রুনা নামে কিন্ডারগার্টেনের একজন শিক্ষিকার মাধ্যমে সাকিবের পরিচয় হয় শীলার। এর সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গত ৪ঠা নভেম্বর বিকালে শীলাকে ফুঁসলিয়ে তুরাগ সিটির ফরিদ উদ্দিন লিংকনের ৩১ নম্বর বাড়িতে নিয়ে যায় সাকিব। তেতলায় ময়না ও জগলু নামে এক দম্পতির বাসার একটি কক্ষ সাবলেট নিয়ে আটকে রাখে শীলাকে। পরে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালায়। দুপুর দেড়টার দিকে ওই ভবনের নিচতলার সিঁড়ির কাছ থেকে রক্তাক্ত শীলার লাশ উদ্ধার করা হয়। শীলার পিতা আবদুল খালেক বলেন, মৃত্যুর আগের দিন বিকাল ৫টার দিকে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় শীলা। রাত ৮টা পেরিয়ে গেলেও মেয়ে না ফেরায় সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করি। পরে রাত ৮টার পর শীলা তার মামার মোবাইল ফোনে জানায়, তুরাগ সিটির একটি বাসায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য আকুতি জানায়। এমন কথা শোনার পর সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। বাসার ঠিকানা বলতে না পারায় তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরের দিন নিহতের মা গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। ওইদিন সকাল ৯টার দিকে শীলা ফের তার মাকে ফোন করে জানায়, ‘মা আমি এক প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি। আমাকে বাঁচাও।’ আবদুল খালেক বলেন, এ কথা শুনে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। দুপুরের দিকে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করেছে। এদিকে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করলে ওই আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা এখন আমাদেরও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। হুমকির ঘটনায় শাহ আলী থানায় জিডি করা হয়েছে। সূত্রমতে, শীলার লাশ উদ্ধার করার সময় তার নাক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। গলায় অর্ধচন্দ্র আকৃতির দাগ পাওয়া গেছে।