টুকটাক ঔষধ গিলেও মনে হলো কোন কাজ হচ্ছে না।
প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে
সুজন তাঁর বাবার কাছে সে কথা বললো।
তাঁর বাবা অর্থাৎ জনাব মহিউদ্দীনের মনে হলো,
সুজন ঠিক কথাই বলছে।
তাঁর দাঁতে সত্যি সত্যি খুব ব্যাথা করছে।
জনাব মহিউদ্দীনের মনে হলো, সুজনকে এখনি
ডাক্তার সিদ্দিকের কাছে নিয়ে যাওয়াটাই
বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে।
তাঁর আগে মনে হলো, একটা ফোন করে দেখা যাক্।
সময়টা ফ্রি আছে কিনা।
জনাব মহিউদ্দীনের পুরনো বন্ধু ডাক্তার সিদ্দিকের মনে হলো,
এই সময়টাতেই কিছু ফাঁকা যাচ্ছে তাঁর সিডিউল।
জনাব মহিউদ্দীনের মনে হলো, তাহলে ঝটপট বেরিয়ে পড়া যাক্।
সুজনের মনে হলো তাঁর সারা মুখ ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছে।
পথে বেরুতেই তাদের মনে হলো,
ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম সারা শহরে।
একটা সি.এন.জি ভাড়া করলো তারা।
ডাক্তার সিদ্দিকের চেম্বার অব্দি ভাড়া বড়জোর ষাট কি সত্তর।
চালকের মনে হলো, এই ভীড় ভাট্টায় বিশ ত্রিশ টাকা বাড়িয়ে চাইলেও
প্যাসেন্জার যেতে বাধ্য।
জনাব মহিউদ্দীনের মনে হলো, এ ছাড়া আর উপায় কী।
ডাক্তার সিদ্দিকের চেম্বারে ভীড় মনে হলো কিছু কম।
সুজনের মনে হলো, সে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।
মনে হলো, ব্যাথায় তাঁর মাথা ঝিম্ ঝিম্ করছে।
সময় নিয়ে ডাক্তার সিদ্দিক সুজনের দাঁত দেখলেন।
তাঁর মনে হলো, এ দাঁত ফেলে না দিয়ে কোন উপায় নাই।
একবার মনে হলো সুজনকে প্রশ্ন করবেন,
"এত সিগারেট খাও কেন?"
অন্য আর কয়েকটা দাঁতের কন্ডিশানও ভালো মনে হলো না।
কিন্তু পরে কি যেন মনে হলো বলে সিগারেটের প্রসঙ্গটা
তুললেন না তিনি।
দাঁত ফেলে দেওয়ার কথা শুনে
জনাব মহিউদ্দীনের মনে হলো, সিদ্দিক হয়ত ঠিক কথাই বলছে।
বেশ ভালো ডাক্তার সে।
সুজনের মনে হলো, যা: শালা! এখন!
তবু মনে হলো, রেহাই!
সুজনের মনে হলো, আর একটু হলে ব্যাথায় সে মরে যাবে।
ফোকলা দাঁতে কেমন দেখাচ্ছে সুজনকে?
আয়নায় দাঁড়িয়ে সুজনেরই একেক বার একেক কথা মনে হলো।
আর বন্ধুদের মনে হলো,
একেক জনের একেক কথা মনে হলো।
সুজনের মনে হলো, উফ্, গড্!
সবটাই তো দেখছি মনে হলো এইখানে।
আমার যদি মনে হ্য়, দাঁতটা এখানে মুখ্য কোন বিষয় না,
আপনি আপত্তি করবেন? ...
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ৭:১৯