-তুমি আবার সিগারেট খেয়েছো?
-হুম।খেয়েছি।গোল্ড লিফ।দাম এক টাকা বাড়ছে।আফসোস
- কেন সিগারেট খাও জানতে পারি?
- হুম।জানতে পারো।আমি বৃদ্ধ বয়সে আমার নাতী-নাতনীদের পিঠে চড়িয়ে নিয়ে বেড়াতে চাই।
-এই জন্য সিগারেট খেতে হবে কেন?
-সিগারেট খেলে হাড় বাকে না।হাড় বাকা ঘোড়ার পিঠে কেউ উঠবে না।
- তুমি আর সিগারেট খাবে না।আজকে থেকে বন্ধ।ঠিক আছে?
- না ঠিক নাই।আমি খাবো।মাঝে মধ্যে আগুন না ধরায় চাবায় চাবায় খাবো।ভিটামিন আছে।
-তুমি খাওয়া বাদ না দিলে আমি ও খাবো।
-আচ্ছা খাইয়ো।আমি কিনে দিব।তবে আসল মজা সিগারেটে নাই।আসল অজা গাজায়।চরস গাজায়।মাটির কলকিতে ভরিয়ে দুজনে খাবো।আকাশে পূর্ন চন্দ্র।আমরা ছাদে বসে গাজা খাচ্ছি।অদ্ভুত না?
-তুমি আমাকে একটুও ভালবাসো না।একটু ও না।ভালবাসলে অন্তত আমার কথা চিন্তা করে সিগারেটটা বাদ দিতা।
-কথা সত্য।তোমাকে খুব ই ঘৃনা করি।খুব।
তিতলীর কান্না পেতে গেল।নাবিল এ সব কি বলছে?তাকে সিগারেট খেতে বলছে?গাজা খেতে বলছে?যে আজিবন তাকে ভালবেসে গেল সে বলছে সে তাকে ঘৃনা করে?
তিতলী ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদা শুরু করলো।
- ওই দিকে মুখ ফিরিয়ে কাদো।ক্রন্দনকুমারীর মুখ দেখতে ইচ্ছা করে না
তিতলীর কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল।নাবিল তাকে এই সব কিভাবে বলতে পারে?কিভাবে?
তিতলী মুখ ফিরিয়ে কাদছে।তাকে বোদহয় আজিবন ই কাদতে হবে।
তবে সে যদি মুখ টা নাবিলের দিকে একটিবার ফিরিয়ে নিত তাহলে যে দৃশ্য সে দেখতো সেই দৃশ্য দেখার পর তিতলী কাদতো নাকি হাসতো আমি জানি না।তবে তার বুকটা আনন্দে ভরে যেত।ভালবাসায় ভরে যেত।নাবিল তাকে এই জন্য মুখ ঘোরাতে বলে নি যে তার বিরক্ত লাগছে বলে।মুখ ঘোরাতে বলেছিল কারন নাবিলের চোখটাও তিতলীর কান্নার জন্য ছলছল করে উঠেছিল।সে চায় না তিতলী তার দূর্বলতা জানুক।সে তিতলীকে কতটুকু ভালবাসে এটা জানুক।পুরুষ মানুষ সবার জন্য কাদে না।কাদে শুধু মাত্র একজনের জন্য।নাবিলের ওই একজন হল তিতলী।তিতলীর জন্য কি এটা কম সুখের ব্যাপার?কিন্তু পরিতাপের বিষয় তিতলী এটা কখনো জানবে না।তিতলী নাবিলের আরো একটা কথা কখনো জানবে না যেটা নাবিল এই মূহুর্তে প্রতিজ্ঞা করলো।নাবিল প্রতিজ্ঞা করলো সে আর কখনো সিগারেট খাবে না।কখনো না।কেউ যদি সিগারেট খেতে বলে তার মাথা মটকায় দিবে।তিতলীর জন্য তাকে বাচতে হবে।অনেকদিন বাচতে হবে।কিন্তু তিতলীকে এটা কখনো সে জানাবে না।তিতলীর কাছে সে আগের সেই পাগলাটে নাবিল ই না হয় থাকলো।মেয়েরা তাদের ভালবাসার মানুসটার পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া পছন্দ করে না।তারা চায় তাদের ভালবাসার মানুষটা আগের মতই থাক।এক চুল ও যেন পরিবর্তন না ঘটে।সেই পরিবর্তন ভালই হোক আর খারাপ ই হোক।ভালবাসার মানুষ পরিবর্তিত হয়ে গেলে তাদের ভালবাসার ধরন ও পরিবর্তিত হয়ে যায়।নাবিল চায় না তার প্রতি তিতলীর ভালবাসা পরিবর্তিত হয়ে যাক।