সামষ্টিক অর্থনীতির একটি অন্যতম ব্যাধি হছে মূল্যস্ফীতি। বিগত কয়েক বছর যাবৎ নিত্য- প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধি বিশেষভাবে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত, শ্রমিক-কর্মজীবী, পেশাজীবী ভোক্তাশ্রেণীকে একটা বিপর্যয়কর অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। মূল্যস্ফীতি চক্র থেকে যেন বেরিয়ে আসা যাচ্ছেই না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বড় কয়েকটি দেশে খাদ্য ও দুগ্ধ উৎপাদনে বিপর্যয়, বিপুল পরিমাণ দানাদার শস্য থেকে জ্বালানি তেলের সংগ্রহ ও মার্কিন ডলারের মূল্য-পতন, ২০০৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে চলতি সালের প্রথম কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতি, বিশেষভাবে কৃষি অর্থনীতি একটা বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছে। সৌদি আরবের মত তেল রপ্তানিকারী দেশের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায় ২৫ শতাংশ। ভারত, চীন, ভিয়েতনামের মত দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল দেশেও মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়ায় দুই অংকে। আন্তর্জাতিক বৈরি অর্থনৈতিক পরিবেশ ছাড়াও এসবক’টি দেশেই মূল্যস্ফীতি এখন নিম্নমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য এখন নিম্নমুখী (প্রায় ১০৭ ডলার প্রতি ব্যারেল, ২ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। পরপর দুইবার বন্যা ও ‘সিডর’র মত প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলার পরেও বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার বিগত দুই বছরে ১০ শতাংশের উপর উঠেনি। রাজনৈতিক ডামাডোল বা হরতাল-ধর্মঘটে কবলিত অর্থনীতি হলে মূল্যস্ফীতি আরো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারতো। উন্নয়নশীল দরিদ্র দেশ হিসেবে গড় ১০ শতাংশ বা তার উপর মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য অবশ্যই অসহনীয়। মূল্যস্ফীতি চক্রে একবার নিপতিত হলে সে চক্র থেকে বের হয়ে আসা কঠিন। কারণ ব্যবসায়ী কিংবা পণ্য উৎপাদকদের মনে আরো মূল্যবৃদ্ধির প্রত্যাশা জন্মে- যা থেকে এরা বেশী মূল্য চাইতেই থাকে। খাদ্যপণ্য ঘাটতি বাংলাদেশে ব্যাপক। লবণ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, তেল, চিনি, ডাল, মশল্লা-সবই বাংলাদেশকে আমদানী করতে হয়। কাজেই বহির্বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ঘটলে তা বাংলাদেশ পরিহার করতে পারে না। দেশ জ্বালানি সামগ্রীতে আমদানী নির্ভর হওয়ায়- জ্বালানি সামগ্রীর ব্যয় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন ও পরিবহনে মূল্যবৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়ে। আমাদের খাদ্যপণ্যসামগ্রীতে মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ হল, প্রথমতঃ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত। সে কারণেই এবার দেশে আমন, বোরো, আলু, সরিষা, ভুট্টার বাম্পার ফলন হলেও দর-দাম তেমন কমে আসেনি। অত্যধিক উৎপাদন খরচ ও সেই সংগে গ্যাসের প্রতি ইউনিটে দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহনে খরচ বৃদ্ধি পায় শতকরা ৪০ শতাংশ, সে কারণে ভাল ফলন পাওয়া সত্ত্বেও দাম তেমন কমে আসছে না। আমাদের মূল্যস্ফীতির দ্বিতীয় প্রধান কারণ ঘাটতিজনিত কারণ। যেমন, ডাল, খাবার তেল, মশল্লা, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পণ্য মূল্যবৃদ্ধি বা সময়ে সময়ে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে থাকে বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে। অর্থাৎ কোন পর্যায়ে বাজার অপ্রতিযোগিতামূলক যেমন অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমদানী পর্যায়ে বা কোন কোন ক্ষেত্রে পাইকারী বাজার পর্যায়ে অত্যধিক দাম বৃদ্ধি ঘটিয়ে থাকে। পরিবহন সংকট, উৎসব-পুজা, পার্বনে, সাময়িক চাহিদা আকস্মিক বৃদ্ধি পেলে সাময়িকভাবে নির্দিষ্ট স্থানীয় পর্যায়ে দর-দাম বৃদ্ধি ঘটে থাকে। কারণ হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধির সংগে সংগে পচনশীল কৃষি পণ্যের সরবরাহ বাড়ে না।
আলোচিত ব্লগ
বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !
"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমিত্ব বিসর্জন
আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।
"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন