মনে পড়ে কি রত্নদীপা সেই যে রাধা হলে কৃষ্ণলীলায়?
কী অবলীলায় করে গেলে অভিনয় কৃষ্ণের সাথে!
হাতে হাত, চোখে চোখ, ঠোঁটের ডগায় মায়াবী হাসি...
তুমি জানো না ঈর্ষার বিষে পুরেছি সেদিন আমি!
মনে কি পড়ে সেই যে পুকুর ধারে শেষ বিকেলে,
জাবটে ধরে প্রথম চুম্বন তোমার কপোলে?
তারপর বুকে মাথা, ঠোঁটে ঠোঁট, আমায় বললে,
ওগো তোমায় আমি দেবতা বলে জানি!
অনন্তকাল এমনি করে পূজবো তোমায়,
মন হবে মন্দির, চুম্বন হবে অর্ঘ্য...
আরও কতো কি যে বলতে তুমি! সে সবকিছু কি মনে পরে তোমার?
বলতে জল জোছনায় ভিজবো দুজনে...
শিশিরসমুদ্রে কাটবো নগ্ন সাঁতার...
ঝরা বাদলের ফুলে সাজাবো বাসর,
জোনাকপোকার দেবো মালা তোমার গ্রীবায়...
শোনাবো গান...আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়...
আজ এত দিন পর সেদিনের কথা কি মনে আছে তোমার?
সেই যে মেঘের দলে রাজ্যের হতাশা... পাখিদের অবেলা ঘরে ফেরা...
কাঠ ফাটা ভাদ্রেও আকাশ থেকে গড়িয়ে পরলো দুফোঁটা জল...
তোমার আমার ভালোবাসার অকাল সমাপ্তি...?
জানো রত্নদীপা এখন আমার কী করে রাত কাটে?
এখন জেগে জেগে কেউ মুঠোফোনে আমায় আর ঘুমপাড়ানি গান শোনায় না...
ঘুমপরীরা চোখের পাতায় এসে নাচে না আর...
এখন আমি রাত কাটাই পাশ বালিশের গল্প শুনে,
কিংবা আঙ্গুলের নকশায় বিষাদের প্রহর গুনে...
রত্নদীপা, না হয় তখন খড়কুটোই ছিলাম, বৃক্ষ কি হইনি?
প্রেমের ভেলায় ভেসে তোমার জন্যে কি স্বপ্ন তুলে আনিনি?
এখন আর আমি বিষবৃক্ষ হয়ে বাঁচতে চাইনা...
আবার তবে খড়কুটোই হবো...
ভাসতে ভাসতে আস্তে আস্তে নিজেকে হারাবো...
তাই তো বাড়ন্ত স্বপ্নতরুর সমস্ত ডালপালা ছেঁটে দিয়েছি...
দারুচিনি দ্বীপে কেনা স্বর্গখানা বেচে দিয়েছি...
ভালবাসা সেঁচে মনকে করেছি আরব্য মরুভূমি...
রত্নদীপা, তোমার কাছে পূজো তো চাইনি, প্রেম চেয়েছি,
প্রেম দাওনি, দিয়েছ প্রেমের প্রতিবিম্ব।
এটাও কি তবে তোমার লীলাই ছিল?