নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি আমাকে আবারো তাবলীগ জামাত সংক্রান্ত চলমান পোষ্টের ৩য় পর্ব লেখার তৌফিক দান করেছেন।
অতীতের মতোই আমাদের আগে শিরক সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আল্লাহ শিরক সম্পর্কে কোরআন বলেছেন-
=> আল্লাহ শিরক এর গুনাহ মাফ করেন না। (সূরা নিসা-৪:৪৮)
=> শিরক সম্বন্ধে মহানবী সাঃ কে বাদ দিয়ে ১৮ জন নবীর নাম উচ্চারণ করে বলেছেন, তারা যদি শিরক করতো আল্লাহর সাথে তাহলে তাদের আমলগুলো বরবাদ হয়ে যেতো। (সূরা আনআম-৮৮)
=> এবার নবী মোহাম্মদ সাঃ কেই বলা হইছে, (হে নবী) যদি তুমি আল্লাহর সাথে শিরক করো তোমার আমলও বাতিল এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাবে। নবীকেও ছাড় দেওয়া হয় নাই। (সূরা যুমার-৬৫)
=> সর্বশেষ যারা শিরক করে তাদের জন্য জান্নাত হারাম করে দেওয়া হইছে। (সূরা মায়িদাহ-৫:৭২)
============================================
জেনে নিলাম শিরক এর কুফল। নবী মোহাম্মদ সাঃ যদি শিরক করেন তাহলে উনার আমলই যদি বাতিল হয়ে যায় তবে আমাদের আমল কি টিকে থাকবে। আমরা যত বড় আমলদারই হই না কেন? যতবড় আলেমই হই না কেন? যদি শিরক করি সব আমল বাতিল।
ফাজাযেলে আমল পড়লে অনেক আমল শিখা যায়। কিন্তু যদি শিরকও করি আমলও করি। তাহলে সেই আমলের কোন মূল্য নাই আল্লাহর নিকট। সত্য সঠিক অল্প আমলই এনাফ। কারণ আল্লাহর নিকট এখলাসপূর্ণ শিরকমুক্ত ইবাদাতও গ্রহণযোগ্য। (সূরা যুমার-৩)
=============================================
কি কি বিষয় তাবলীগ বা প্রচার করবো আমরা?
আল্লাহ আমাদের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবীর উম্মত করেছেন এবং আমাদের জানিয়েছেন কি কি বিষয় তাবলীগ বা প্রচার করতে হবে।
সূরা মায়িদাহ-৫:৬৭> হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে।
এখানে যা অবতীর্ণ হয়েছে বলতে কোরআন ও সহীহ হাদিসকে বুঝানো হয়েছে পৃথিবীর সকল আলেমদের মতে।
এছাড়াও সূরা আরাফ-৩> অনুসরণ কর যা তোমার প্রতি নাজিল হইছে তোমার রবের পক্ষ থেকে। অনুসরণ করো না আউলিয়াদের (আলিম, বুজুর্গ, পন্ডিত ইত্যাদি)।
যদি নবী কোরআন বাদ দিয়ে অন্তর বা মনের বা খেয়ালখুশির অনুসরণ করতেন তাহলে কি হত?
সূরা রা'দ-১৩> এমনিভাবেই আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। যদি আপনি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পর, তবে আল্লাহর (আজাব) কবল থেকে আপনার না কোন সাহায্যকারী আছে এবং না কোন রক্ষাকারী।
মুসলিমরা, চিন্তা করেন নবীকে কতবড় থ্রেট। যদি মনো বাসনা বা প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন তো আল্লাহর আজাব উনাকেও ঘিরে ধরবে।
=============================================
এবার আসি সেই বহুল প্রতিক্ষিত ফাযায়েলে আমল এ। আজ বর্ণনা করছি এর ৩য় পর্ব। পূর্বের পর্বে অসংখ্য মন্তব্য ও তার জবাব দিতে দিতে অনেক দিন পেরিয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে ৩য় পর্ব প্রকাশের। আলহামদুদিল্লাহ আল্লাহ আমাকে ৩য় পর্ব প্রকাশের তৌফিক দিয়েছেন। আজও ফাজায়েলে আমলের ফাজায়েলে হজ্জ নিয়ে আলোচনা করব। আরেকটা পর্ব হবে জাল হাদিস নিয়ে।
মূলত:- আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি নবী সাঃ কে প্রেরণ করা হয়েছিল আমাদের শিরক মুক্ত করানোর জন্য, সত্য প্রকাশের জন্য, সুসংবাদ জানানোর জন্য এবং জাহান্নাম সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য। তিনি উনার কাজ সম্পন্ন করে গেছেন এবং বিদায় হজ্জ্বের শেষে সোয়া লাখ মুসলিম সাহাবা সমস্বরে সেটার স্বাক্ষী হয়েছেন এবং মহান আল্লাহও স্বাক্ষী যে তিনি উনার দায়িত্ব সম্পন্ন করে গেছেন। কিন্তু ফাজায়েলে আমল পড়লে দেখতে পাবেন সেখানে নবীজি সাঃ এর দায়িত্ব শেষ হয় নাই। তিনি এখনও বিচার কাজ করে থাকেন । শালিশী করে থাকেন। এমনকি মানুষকে মৃতু দন্ডও দিয়ে থাকেন।
মক্কার কাফেরদের মুর্তি যখন ভাঙ্গা হয়েছিল তারা সাহাবাদের বলছিল যে মুর্তি গুলো ভেঙ্গো না, ভাঙ্গতে গেলে অদৃশ্য শক্তি বাধা দেবে তোমাদের। এটা ছিল তাদের কুসংস্কার। ঠিক তেমন কুসংস্কার হলো নবী সাঃ কবর থেকে শালিশী করেন, মৃতুদন্ড দেন।
কারণ কবর থেকে কেউ সাহায্য করতে পারে, শালিশী করতে পারে, বিচারকাজ করতে পারে, সাহায্য করতে পারে, সন্তান দিতে পারে এমন আক্বিদাহ পোষণ করা শিরক। কারণ সন্তান দেওয়ার মালিক আল্লাহ। কবর থেকে নবী যদি বিচার করতেই পারতেন তবে ইয়াজিদের বাহিনী, খারেজীদেরও বিচার করতে পারতেন। ওসমান রাঃ কে যারা হত্যা করছে তাদের বিচার করতে পারবেন, আলী রাঃকে যারা হত্যা করছে তাদেরও বিচার করতে পারতেন।
এখন আবার বিরোধীতাকারীরা বলবে না না, আমরা নবীর কাছে চাব, নবী আল্লাহকে এনে দিবেন। এটা শিরক হয় না। তারা এখানে মাধ্যম ধরতে চায়। ঠিক তেমনি মুর্তি পুজারীদের ব্যাপারেও আল্লাহ বলেছেন সূরা যুমার এর ৩ নং আয়াতে যে তারা মুর্তি পূজা করে আল্লাহর নৈকট্য পাবার জন্য মাধ্যম হিসেবে। এখন তারা যদি মাধ্যম ধরার কারণে অংশীদার স্থাপন করে মুশরিক হয়, তবে আমরা যারা কবরকে মাধ্যম ধরি তারা কি শিরক করি না? মুশরিক বললাম না কারণ মুশরিক বলার অনেক শর্ত আছে। চলুন কাহিনীটা প্রত্যক্ষ করি।
=============================================
কাহিনী নং-১
ছাবেত বিন আহমদ বলেন, তিনি একজন মোয়াজ্জেনকে মসজিদে নব্বীতে আজাত দিতে দেখিয়াছিলেন। মোয়াজ্জেন যখন আচ্ছালাতু খায়রুম মিন্নাওম বলিল, তখন এক খাদেম আসিয়া তাঁহাকে একটি থাপ্পড় মারিল। মোয়াজ্জেন কাঁদিয়া উঠিয়া আরজ করিল, ইয়া রাসুলুল্লাহ, আপনার উপস্থিতিতে আমার সাথে এইরূপ হইতেছে ? (মানে বিচার দিল) সঙ্গে সঙ্গে সেই খাদেমের শরীর অবশ হইয়া গেল। লোকজন তাহাকে উঠাইয়া ঘরে লইয়া গেল এবং তিন দিন পর সে মরিয়া গেল।
---------------------------------------------------(ফাজায়েলে হজ্জ্ব ২৬২পৃ)
>>>চিন্তা করেন। নবীর উপস্থিতিতে বেয়াদবি করল। যেই বিচার দিল নবীর কাছে অমনী অবশ ও নিহত। ঠিক একই আক্বিদা রাখা হয় মাজারগুলোতে। যেমন মাজারের বুজুর্গের কবরের দিকে পিঠ দেওয়া যাবে না, বেয়াদবী। শুনেছি শাহপরান এর মাজারেও নাকি পিঠ দিয়ে বের হতে দেয় না। তেমনি জীবিত পীরদের বেলাও একই কাহিনী। পীরদের দিকে পিঠ দেওযাকে বেয়াদবী মনে করা হয়।
অনেক বিশেষজ্ঞ বলিলেন, আরে এটা তো জাস্ট কাহিনী, বিধান না (কর্ণেল ছামুরাই)। কিন্তু তারা চিন্তা করে না এই কাহিনীর চরিত্রে কারা আছে। এটা সাধারণ মানুষের কাহিনী হলে সমস্যা ছিল না। কিন্তু যখন নবীকে এ্যাড করা হইছে তখনই আমাদের মুসলিমদের সমস্যায় পরিণত হইছে। কারণ নবীর নামে মিথ্যা বলা বা বানিয়ে অবাস্তব কাহিনী বলা, কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কাহিনী বর্ণনা করা, আক্বিদা বিনষ্টকারী কাহিনী প্রচার করা মুসলিমরা কখনো মেনে নেয় না। এই কাহিনী নিশ্চিতভাবে কবরপূজারী, মাজারপূজারীদের কর্মকান্ডকে সমর্থন করে। এই কাহিনী নিশ্চিতভাবেই মুসলিমদের কবর পুজায় উৎসাহিত করে।
এখন আবার একদল বিশেষ অজ্ঞ বলিবেন বুঝলাম তাবলীগ জামাতের বইতে মাজারপুজা শিখানো হইছি কিন্তু তারা কি মাজারে যেতে বলে (কর্ণেল ছামুরাই)? তাদের উচিত নিচের চিত্রটা দেখা।
আউলিয়া কেরামের মাজারে যাওয়া জায়েজ। যাওয়ার পর বাকি কাজ শয়তানই বলে দেয়, কিভাবে অভদ্রতা না হয়, কিভাবে সন্তান চাইতে হয়? নবীজি সাঃ কবরে থেকে যদি বিচার করতে পারেন, সাহায্য করতে পারেন তো ওলী আউলিয়াগণ কেন সাহায্য করতে পারবেন না?
অথচ কবর বিষয়ক ইসলামী আক্বিদা হলো-
হাদিসে এসেছে— عن أنس رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزوروها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجرا ( صحيح الجامع رقم الحديث : ৪৫৮৪) আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর জিয়ারত করবে। কারণ কবর (১) জিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, (২) নয়নকে অশ্র“সিক্ত করে ও (৩) পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে সেখানে কিছু বলবে না। (সহিহুল জামে, হাদিস নং ৪৫৮৪)
=> হাদিস অনুযায়ী কবররে যাওয়ার একটাই কারণ পরকালকে স্বরণ, মৃতুকে স্বরণ। আমরা নবীজি সাঃ এর কবরের নিকটও যাব আমাদের পরকালকে স্মরণ করতে, মৃতুকে স্মরণ করতে, নবীজি সাঃ এর কবরকে জিয়ারত বা দর্শন করতে।
=> নবী যেখানে বলছেন বেদনা প্রকাশ করতে কিছু বলবে না, সেখানে মহিলা গিয়ে বিচার দেয়, শরীর অবশ হয়, মারা যায়। চিন্তা করেন। এই কাহিনীরে কোন ক্যাটাগরিতে ফালামু বুঝতে পারছি না।
=============================================
এক কাহিনী লিখতেই পোষ্ট অনেকবড় হয়ে গেল। এবার ২য় কাহিনী।
কাহিনী নং-২
ইউসুফ বিন আলী বলেন, জনৈক হাশেমী মেয়েলোক মাদীনায় বাস করিত। তাহার কয়েকজন খাদেম তাহাকে বড় কষ্ট দিত । সে হুজুরের দরবারে ফরিয়াদ লইয়া হাজির হইল (বিচার চাইতে হাজির)। রওজা শরীফ হইতে আওয়াজ আসিল, তোমার মধ্যে কি আমার আদর্শের প্রতি আনুগত্যের আগ্রহ নাই। তুমি ছবর কর যেমন আমি ছবর করিয়াছিলাম। মেয়েলোকটি বলেন, এই সান্তনাবাণী শুনিয়া আমার যাবতীয় দুঃখ মুছিয়া গেল। ঐদিকে বদ আখলাক খাদেমগুলো মরিয়া গেল।
--------------------------------------------------(ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৯ পৃ)
সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা! উল্লেখিত ঘটনাদ্বয় পড়ুন আর একটু ভেবে দেখুন, নাবী সাঃ ক্ববরে থেকেও মানুষের মুসিবত দূর করেন এবং বেয়াদবীর কারণে মানুষ মেরেও ফেলেন। জীবদ্দশায় নবী সাঃ কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন, দাঁত শহীদ হল, মাথায় হেলমেট ঢুকে গেল। তখনতো নবী সাঃ এভাবে কাফিরদের মেরে ফেলতে পারতেন। কিন্তু তাতো করলেন না। কিন্তু মরার পরে এ জাতীয় ক্ষমতায় বিশ্বাস তো মাজার ভক্তরা করে থাকে। যা বিবেকেরও পরিপন্থী। মৃতুর পর যে লোকটারে চারজনে ধরে কবরে রাখতে হল, অতঃপর ক্ববরে রেখে মাটি চাপা দিলে তার সমস্ত শক্তি এসে যায়। যার সাধারণ জ্ঞান আছে সেও কি এ জাতীয় বিশ্বাস করতে পারে?
=> সাহাবারা কখনো কবর থেকে বিপদের ফায়সালা পেল না, আর সাধারণ খাদেম রা গিয়ে বিপদের কথা বললেই শুধু গায়েবী আওয়াজ আসে। এই ধরণের আক্বিদাহ একমাত্র সূফীবাদীদেরই হয়ে থাকে। এমদাদউল্ল্যাহ মক্কী, রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী সহ উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ মোটামুটি সবাই ছিলেন সূফীবাদী। তাই তাদেরও দোষ দেওয়া যায় না। কারণ সূফীরা মিথ্যা বলে না, মিথ্যা অটোমেটিক তাদের মুখ দিয়ে বের হয়।
মাত্র একটা উত্তর দেন, বিপদ থেকে উদ্ধারকারী নবী সাঃ না আল্লাহ?
সূরা ফাতিহা-৪ নং আয়াতে আমরা বলি, আমরা তোমারই ইবাদাত করি, তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।
কিন্তু এখানে কবরবাসীর নিকট সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। অদৃশ্য বা গায়েবের নিকট কিছু চাইতে হলে সেটা একমাত্র আল্লাহর নিকটই চাইতে হবে। হ্যা এমনে পৃথিবীতে আমরা মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে পারি। কিন্তু """গায়েবী ভাবে সাহায্য""" একমাত্র আল্লাহর নিকটই চাইতে হবে। আরো পড়ুন সূরা বাকারাহ-১৬০, আনআম-১৭-১৮, আরাফ-৩৭, ১২৮, ১৯৭।
=> আল্লাহকে বাদ দিয়ে নবীকে বিপদ থেকে রক্ষাকারী, গায়েবী সাহায্যকারী হিসেবে নির্ধারণ করা কি শিরক? নাকি সওয়াব?
=============================================
কাহিনী নং-৩
শায়েখ আহমেদ বলেন, আমি তের মাস পর্যন্ত ময়দানে, জঙ্গলে ঘুরিতে ফিরিতে থাকি। উহাতে আমার চামড়া পর্যন্ত খসিয়া যায়। অবশেষে হুজুর ও শায়খাইনের খেদমতে সালাম করিতে যাই। রাত্রি বেলায় স্বপ্নে হুজুর সাঃ আমাকে বলেন, আহমদ তুমি আসিয়াছ? আমি বলিলাম, হুজুর আমি আসিয়াছি। আমি বড় ক্ষুদার্ত, আমি হুজুরের মেহমান। হুজুর বলিলেন, দুই হাত খুল। আমি দুই হাত খুলিলে দেরহাম দিয়া দুইহাত ভরিয়া দিলেন। জাগ্রত হইয়া দেখি আমার হাত দেরহাম দিয়া ভর্তি। আমি উহা দ্বারা কিছু খাইয়া আবার জঙ্গলে ফিরিয়া আসিলাম।
--------------------------------------------------ফাযায়েলে হজ্জ-২৬২ পৃঃ
ভাইয়েরা, উপরোল্লিখিত ঘটনা কি এ শিক্ষা দেয়। শিক্ষা দেয় সব জায়গা থেকে ফিরিয়া গেলেও অলী আল্লাহগণের কবর থেকে ফিরার চান্স চাই। শায়খ আহমদ কাজ কাম না কইরা জঙ্গলে জঙ্গলে মোরাকাবা করে ঘুরে বেড়াইছে। পরে নবীর কবরে যেয়ে দেরহাম নিয়া আসছে। তাহলে যারা বলে নিচের কথাগুলো তাদের কি দোষ,
কেউ ফিরে না খালি হাতে, খাজার বাবার দরবার হতে
আল্লাহর ধন রাসূলকে দিয়ে, আল্লাহ গেছেন খালি হয়ে
রাসূলের ধন খাজারে দিয়ে, রাসুল গেছেন খালি হয়ে
রাসূলের ধন খাজায় পেয়ে, লুকিয়েছে আজমীরে
কেউ ফিরে না খালি হাতে, খাজা বাবার দরবারে। (নাউজুবিল্লাহ)
ওই কাহিনী যদি ঠিক হয়, তবে এই কবিতার কাহিনীও তো ঠিক। যদি কেউ বলে আজমীর শরীফে খাজার দরবারে কিছু চাওয়া শিরক, তবে নবীর রওজায় গিয়েও কিছু চাওয়া শিরক। দলিল প্রমাণ ছাড়া রাসুল সাঃ কে এমন কাহিনী বর্ণনা করা রাসূল সাঃ এর বিপ্লবী জীবনের উপর একটা মিথ্যারোপ। এই কাহিনী শিখায়
=>কবরবাসী সাহায্য করে
=> কোথাও কিছু না পেলে ক্ষুদার্থ হলে মাজারে যেতে হবে
=> কিছু না কিছু পাওয়া যাবেই, সেটা পেলেই দৌড় জঙ্গলে।
=> জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে ফিরতে হবে, চুলে জট লাগলে ব্যবসা বাম্পার।
=> কবর থেকেও টাকা পয়সা দেওয়া যায়।
ভাগ্যভাল নবীর সময় ফ্লেক্সীলোড ছিল না। থাকলে এটা নিয়াও কাহিনী শুরু করত যে নবী তার মোবাইলে ৫০০ রিচার্জ করছে, হের মোবাইলে ১০০০ রিচার্জ করছে।
মোট কথা কবরের কাছে কিছু চাওয়া যদি শিরক হয়, কবরবাসী সাহায্য কবর থেকে সাহায্য করতে পারে এমন আক্বিদা রাখা যদি শিরক হয়, তবে নবীর ব্যাপারে এই কাহিনীগুলোও ষ্পষ্ট শিরক। কারণ কবরে যাব পরকালকে স্মরণ করতে, বিচার দিতে না, ক্ষুদার্থ জানাতে না। =============================================
পরিশেষে পবিত্র কোরআনের খুবই প্রিয় একটি আয়াত শেয়ার করছি:-
সূরা যুমার-১৮> যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ দেখান এবং তারাই বুদ্ধিমান।
অতএব কেউ যদি আল্লাহর নিকট থেকে সৎপথ পেতে চায় এবং আল্লাহর নিকট বুদ্ধিমান হিসেবে বিবেচিত হতে চায় তার উচিত উপরের আয়াত অনুযায়ী মনোযোগ সহকারে কথা শুনা, আমার কথাও শুনা, তাবলীগের হুজুরদের কথাও শুনা। অতপর যা কোরআন ও হাদিসের সাথে মিলবে অর্থ্যাৎ যেটা উত্তম তার অনুসরণ করা। আমি বলছি না আমারটা মানতে। উত্তমটা মানা উচিত।
আশা করি সকল তাবলীগি ভাইয়েরা যারা সত্যিকার অর্থেই তাবলীগের কাজ করতে চান তারা আমার বক্তব্য বুঝতে পারবেন। দলিল সহ কোরআন ও সহীহ হাদিস নাম্বার সহকারে শিখার চেষ্টা করেন এবং ছড়িয়ে দেন একটি আয়াতও যদি ভালো ভাবে ও উত্তম রূপে শিখে থাকেন। ১০০% শিউর না হয়ে হাদিস বলে চালিয়ে দিবেন না কিছু।
আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
এখান থেকে মূল ফাজায়েলে আমল ডাউনলোড করে চেক করে নিতে পারেন ।