মানুষের সাধ্য নাই যে ঈমান আনে আল্লাহর অনুমতি ব্যতিত (ইউনুসঃ১০০)
আল্লাহ যদি ঈমান আনার অনুমতি নাই দেন তবে কাফের, মুশরিক, নাস্তিকদের দোষ কি?
-
-
-
-
--
নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা আল্লাহতায়ালার যার হাতে আমাদের জীবন, যিনি বিশ্ব জগতের রব। অসংখ্য দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী মোহাম্মদ সাঃ এর উপর।
বাংলাদেশে একটা পীরের দরবার আছে যেটা কাদেরীয়া দরবার শরীফ নামে পরিচিত। সেই দরবারের একজন মুরীদ রয়েছেন যিনি ব্লগার শুধূ প্যাচাল নামে পরিচিত। উনার পোষ্ট এ গিয়ে দেখতে পেলাম তিনি উপরোক্ত কোরআনের আয়াত দিয়েছেন এবং বলেছেন “কাজেই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া ঈমান আনা ফাসেকী ও খোদাদ্রোহীতা”।
আজ এ ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। শুধূ ”শুধু প্যাচাল না, অসংখ্য নাস্তিক ও সাধারণ মানুষ এই আয়াত পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে যান এবং এই আয়াতটি পীরের দরগাগুলোতেও বেশী প্রচলিত। যেমন আটরশির দরবারে হিন্দুদেরও মুরীদ করা হয়। এই আয়াত দিয়েই অনেক কাফের মানুষকে পথভ্রষ্ট করে এবং তাদের নির্দোষ বুঝানোর চেষ্টা করে।
তারা বলে, মানুষের সাধ্য নাই যে তারা ঈমান আনবে আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। তাই যেহেতু আল্লাহই তাদের অনুমতি দেন না। তাই তাদের অর্থ্যাৎ হিন্দু, বোদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ কাফের মুশরিকদের কোন দোষ নাই। তাদেরই বা দোষ কি যদি আল্লাহই অনুমতি না দেন?
=============================================
বাহ্যিকভাবে দেখলে তাদের কথাটা ১০০% যৌক্তিক। তবে তারা পুরো কোরআন পড়ে দেখে না এবং এটাই সমস্যা।
প্রথমত ধরে নেই যে, এটাই চূড়ান্ত যে আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কেউ ঈমান আনতে পারে না। তো আল্লাহ কাকে অনুমতি দেন বা দেবেন সেটাও দেখা দরকার।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন যে তিনি কাদের কাদের অনুমতি দিবেন।
সূরা রা’দ-১১> আল্লাহ্ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।
অতএব আল্লাহ কোন জাতির বা কোন ব্যক্তির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের অবস্থার পরিবর্তণ করে।
যেমন উদাহরণ স্বরূপ, কোন নাস্তিক যদি কখনোই সত্য বুঝার চেষ্টা না করে এবং নিজের অবস্থানেই অটল থাকার চেষ্টা করে তাহলে আল্লাহ তাকে হেদায়েত দিবেন না। ভাল কোন মুসলিম ব্যক্তিও যদি দলিল প্রমাণ পাওয়ার পরও তার কুফুরী, শিরকী কাজ থেকে বিরত না থাকে, তবে কিভাবে তার অবস্থার পরিবর্তন হবে।
কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা সেটা অবশ্যই স্রষ্টা প্রদত্ত জ্ঞান খাটিয়ে বের করতে হবে। দুটো গ্লাসের একটিতে ভাল এবং অন্যটিতে ময়লা পানি থাকলে আমাদের ভাল টাই গ্রহণ করতে হবে।
আল্লাহ কোরআনে জ্ঞানীদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে-
সূরা যুমার-১৮> যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অত:পর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ্ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।
উপরোক্ত আয়াত অনুযায়ী সৎপথ, উত্তম পথ পেতে হলে পূর্বশর্ত হলো মনোনিবেশ সহকারে শুনা এবং উত্তমটা গ্রহণ করা। তারাই হলো বুদ্ধিমান।
অধিকাংশ কাফেরাই জ্ঞান খাটাতে চায় না। তাদের চোখ আছে দেখে না, কান আছে শুনে না, হৃদয় আছে বুঝতে চায় না। তারা কিভাবে তাহলে ঈমান আনার অনুমতি পেতে পারে? অথবা কেনই বা আল্লাহ তাদের অনুমতি দিবেন।
সবশেষে উপরের সেই আয়াতটা বাকি অংশটুকুও তুলে ধরিঃ-
সূরা ইউনুস- ১০০> আর কেউ ঈমান আনতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহ্র হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন তাদের উপর যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না ।
অতএব, আল্লাহর হুকুম তখনি হয় যখন ব্যক্তি নিজে নিজের অবস্থান চিন্তা করে। সত্য জানার চেষ্টা করে। সত্য পেলে নির্দিধায় মেনে নেয়।
সর্বদাই সর্বদাই এটা কামনা করি যে,
সূরা আল ইমরান-৮> হে আমাদের রব! সরল পথ/সত্য পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা।
আল্লাহ আমাদের ঈমানদার হিসেবে কবুল করুন এবং মুসলিম হিসেবে মৃতু দান করুন।
সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়াতুবু ইলাইক।