somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাকলীদ বা অন্ধ অনুকরণ করা হারাম। হোক সেটা কোন বড় পীর, বুজুর্গ, ফকির ইত্যাদি ইত্যাদি।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যারা ৪ ইমামের তাকলীদ করি সেই ইমামগণ তাকলীদ করতেন না কেন?

‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’
গত কয়েকদিন ধরে যে বিষয়টি পিস ইন ইসলামে পড়ছি সেটা হলো তাকলিদ।
আসলেই কী তাকলীদ করেতই হবে । আর আমরা যারা সাধারনরা আমাদের অবস্থানই বা কোথায় ?
আসুন দেখি তাকলিদ মানে কী এবং ইমামদের অবস্থান এ ব্যাপারে কী ?

তাকলীদের শব্দগত মানে হলো ‘জানোয়ারের গলায় রশি বাধার পর তাকে রশি ধরে টানা এবং রশির টানে টানে চলা ।’(আল মুনজিদ ৬৪৯পৃ,মিসবাহ ৭০২)

শরীয়াতের পরিভাষায় তাকলিদ হল-’বিনা দলীলে কারো কথার উপর চলা।’ (মুসাল্লামুস-সুবুত ৬২৪পৃ,নল কিশোরী)

‘দলীল ব্যতীত কারো কথা গ্রহন করাকে বলা হয় তাকলীদ।” (শরহে কাসী দায়ে আমালি -মুল্লা আলী ক্বারী হানাফী ৩৪পৃ ইউসুফী প্রেস,দিল্লী )

শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী বলেন, “একমাত্র রসুল (সঃ) ছাড়া আর কারো কথা বিনা দলীলে মানা যাবে না ; (কারন রসুল সঃ নিজেই দলীল) এ ব্যাপারে কোন মত বিরোধ মুসলমান এবং মুজতাহিদ আলেমের মধ্যে কোন কালেই ছিল না।” হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ১ম ১৫২-১৫৩ পৃ, রশিদীয়াহ দিল্লী) ।


শাহ সাহেব আরো বলেন, “তাকলীদ করার মানে হলো সহাবা, তাবেয়িন,তাবে তাবেয়িন অথবা গোটা মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধচারন করে অমুসলিমদের পথ অনুসরন করা।” হুজ্জাত ১৫৫।

এছাড়া তিনি আরো বলেন,” সহাবা ,তাবেয়ি,তাবে তাবেয়িন তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই একমত ছিলেন যে, কোন মানুষ কোন মানুষের তাকলীদ করতে পারে না। তাই তারা কঠোরভাবে তাকলীদ করতে নিষেধ করেছেন। ” হুজ্জাত ১৫৪পৃঃ


হাদীসের ইমামগণ এজন্য তাকলীদ করেন নাই যে, তারা গোটা উম্মতের বিরুদ্ধচারন করে অমুসলিমদের পথ ধরতে চান নাই ।” ঐ-১৫৫ পৃঃ ।

--------------------------------------------------------------------------
ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বার বার বলেছেন, “আমি কোন দলীলে কথা বলেছি, সেই দলীল না জেনে আমার ফতোয়া মুতাবিক যদি কেউ ফতোয়া দেয় তাহলে তা হবে হারাম ।” (মিযান-শারানী ১ম ৫১পৃঃ ।)

তিনি আরো বলতেন , “হে আমার ছাত্র এবং ভক্তগণ ! তোমরা মানুষের ইজমা বা সম্মিলিত মতামত কখনো মানবেনা বরং তা থেকে সর্বোতভাবে দূরে থাকবে।” ( মিযান-শারানী ১ম ৫২ পৃঃ)। ”

তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে কারো কিয়াস মানবে না, তোমরা অবশ্যই হাদীস মেনে চলবে । যারা হাদীস বর্জন করে অন্য কিছু মানবে তারা ভ্রষ্ট হবে।” ঐ-৫১পৃঃ । ” তোমরা অবশ্যই মানুষের মতামত বর্জন করে চলবে এবং আহলে হাদীসদের পথের অনুসরন করে চলেব ।” ঐ-৫৩ পৃঃ।

--------------------------------------------------------------------------

ইমাম আহমদ (রঃ) বলেন,” তুমি আমার অন্ধ অনুসরন করো না এবং ইমাম মালিক, শাফেয়ী,আোযায়ী এবং ছাোরী প্রমুখের অন্ধ অনুসরন করোনা বরং তাঁরা যেখান থেকে গ্রহন করেছেন তুমিো সেখান হতে গ্রহন করো ।” ( ইমাম ইবনুল কাইয়ূম-ই’লামুল মু’আককিঈন-২/৩০২ পৃঃ) ।
--------------------------------------------------------------------------

ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেন, আমি যেসব ফতোয়া দিয়েছি এর বিপরীত নাবী (সঃ) হতে সহীহ হাদীস প্রমানিত হলে নাবী (সঃ) এর হাদীসই গ্রহনযোগ্য এবং প্রাধান্য পাবে, অতএব আমার কোন অন্ধানুকরন করো না ।” ( ইবনু আবি হাতিম-আদাবুশশাফেয়ী-৯৩ পৃঃ) ।

--------------------------------------------------------------------------
ইমাম মালিক (রঃ) বলেন, আমি একজন মানুষ মাত্র । চিন্তা গবেষনায় ভুল ো হয় আবার সঠিক ো হয়। সুতরাং তোমার আমার অভিমত পরীক্ষা করে দেখ, আমার যে অভিমত কুরআন এবং সুন্নাহর অনুকূলে পাো তা গ্রহন করো ।আর যেঅভিমত কুরআন এবং সুন্নার অনুকূলে নেই তা প্রত্যাখান করো ।” ( ইবনু আব্দিল বার-আল জামি-২/৩২পৃঃ) ।
--------------------------------------------------------------------------

আমরা যারা মাযহাবের অনুসরন করি, তারা যদি আমরা স্ব-স্ব ইমামের কথাগুলোকে সঠিকভাবে মেনে চলতাম ,তাহলে আমাদের মধ্যে এত পার্থক্য থাকত না ।

আমি মনে করি প্রত্যেক মাযহাবের গোড়া অনুসারীরাই এর জন্য মূখ্যভাবে দায়ী । মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ প্রদর্শন করুন । আমীন ।

মূল লেখা: http://www.peaceinislam.com/bagerhat/6202/
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×