আগের পর্বে আমরা জেনেছি, SA node থেকে সৃষ্ট depolarisation wave, আগে atria ও পরে ventricle এ ছড়িয়ে পড়ে। atria এবং ventricle আগে depolarised হয়, তারপর সংকুচিত হয়। তারপর আবার তারা repolarised হয়ে প্রসারিত হয়।
এই যে পুরো হৃদপিণ্ডের ছান্দিক depolarisation আর repolarisation, সাথে সাথে depolarisation wave এর সবখানে ছড়িয়ে পড়া, পুরো ব্যাপারটাই কিন্তু বৈদ্যুতিক প্রবাহ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সুতরাং আমরা ধরে নিতে পারি হৃদপিণ্ড হল অজস্র বৈদ্যুতিক তারের সমষ্টি, যেগুলো দিয়ে একটু পরপরই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে।
(হলুদ রঙ দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে মনে আছে তো? conducting system of heart. কিন্তু শুধু conducting system নয়, পুরো হৃদপিণ্ড জুড়েই চলছে বৈদ্যুতিক প্রবাহ, আনাড়ি হাতে আঁকা গুলো টিক চিহ্ন বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক নির্দেশ করছে)
মনে করুন, আপনি মাটিতে দাঁড়িয়ে একটা বৈদ্যুতিক তারে হাত দিয়েছেন। কি হবে বলুন তো? হুম, ঠিকই ধরেছেন। বিদ্যুৎ আপনার শরীরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হবে, আপনি শক খাবেন। কারণ, আপনার দেহ বিদ্যুৎ সুপরিবাহী।
ঠিক একইভাবে চিন্তা করুন, আপনার শরীরের ভিতরে হৃদপিণ্ড নামক ছোট্ট একটা যন্ত্রে অজস্র বৈদ্যুতিক তার দিয়ে সবসময় বিভিন্ন পরিমাণের বিদ্যুৎ পরিবাহিত হচ্ছে। শরীর যেহেতু সুপরিবাহী, তাই হৃদপিণ্ডের চারপাশের এলাকা দিয়ে এই বিদ্যুৎ বাইরের দিকে একেবারে চামড়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। চারপাশের এলাকা বলতে আমরা বোঝাব সফট টিস্যু, পাঁজরের হাড়, পেশি ইত্যাদি।
হৃদপিণ্ডকে এক পাশ থেকে দেখুন এই ছবিতে। এর আশেপাশে কি আছে ধারণা পাবেন...
এবার দেখুন সামনে থেকে। কালো তীর দিয়ে ইলেকট্রিক সিগন্যাল বুঝিয়েছি, যেটা হৃদপিণ্ড থেকে উৎপন্ন হয়ে আশেপাশের এলাকা দিয়ে পরিবাহিত হয়ে চামড়ায় পৌঁছায়।
এই যে হৃদপিণ্ডের সৃষ্ট বিদ্যুৎ চামড়া পর্যন্ত চলে আসছে, কল্পনা করুন এমন একটা যন্ত্রের, যে কি না চামড়া থেকে এই বিদ্যুৎ শনাক্ত করে পরিমাপ করতে পারবে। আর স্বাভাবিকভাবেই, চামড়া হতে পরিমাপকৃত বৈদ্যুতিক কার্যক্রম হতেই হৃদপিণ্ডের আসল বৈদ্যুতিক কার্যক্রমের উপরেও একটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। আর হ্যাঁ, প্রিয় পাঠক, এটাই ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম, সংক্ষেপে ইসিজি।
লক্ষ্য করুন, ইলেক্ট্রোড, মানে যেটা বিদ্যুৎ শনাক্ত করবে, গুলো কিন্তু লাগানো আছে চামড়ার সাথেই।
সুতরাং, সহজ ভাষায়, ইসিজি হচ্ছে চামড়া থেকে বিদ্যুৎ পরিমাপ করে হৃদপিণ্ডের বৈদ্যুতিক অবস্থা সম্বন্ধে ধারণা করার একটা নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
বুঝেছেন সব? এই পোস্টটা এখানেই শেষ, কেউ কিছু বুঝতে অক্ষম হলে আবার পড়ে দেখতে পারেন। কমেন্টে জিজ্ঞেসও করতে পারেন। ভুলভ্রান্তি থাকলে ধরিয়ে দিলে বাধিত হব। ধন্যবাদ।