somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভার্সেস গণমাধ্যম

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায় প্রতিবেদন , (বিশাল হরফে লেখা) ইয়াবার ভয়ঙ্কর থাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ! আবার শেষ পৃষ্ঠায়(বিশাল গুরুত্ত্ব এবং লাল কালিতে)" শিক্ষকরাই যেখানে অপরাধী" - "পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতন" ! লেখা দুটি পড়লাম । গণমাধ্যমগুলো "টি এস সি", " ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়" এইগুলার ব্র্যান্ড ভাল্যু বা এদেরকে এতো নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার ঘটনা নতুন নয়, বহু পুরনো ।কারণটা একটু ভেবে দেখলেই হয়তো বের করা যায় । তার আগে বলে নেই,আগে হলে একটু হেসে এভোয়েড করতাম । আজকে কেন পারলাম না ব্যাখ্যা দেব। তার আগে কোন বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কোন ব্যাক্তিকে অচেতন ভাবেও হেয় করে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করছি ।

প্রথমত , ঢাবিতে ইয়াবা পাওয়া গেছে । হ্যাঁ , অনেকের কাছেই হয়তো আছে ।ধরা পড়েছেন ১০ জন । তারপরেও এর সংখ্যা কেমন হতে পারে? ঢাবির প্রায় ৩০,০০০ ছাত্র-ছাত্রি, সহস্র শিক্ষক - কর্মচারীর মধ্যে ৫% ? কিছু ছাত্রলীগ , কিছু শিক্ষক , কিছু শিক্ষার্থী? অবশ্যই এদের সকলের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া উচিত ,কোন দ্বিমত নেই। এখন বলুন , দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে যদি ইয়াবার " ভয়ংকর থাবা" হয়, তাহলে সেই সমাজের আসল চিত্রটা কেমন? দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর কি অবস্থা? সেখানে সমস্ত যুবসমাজ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর অবস্থা বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন কি করা যেত না? "ইয়াবার ভয়ংকর থাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে" এখানে ঢাকা বিস্ববিদ্যালয় ব্র্যান্ডটাকে ব্যাবহার করে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেস্টা না করে , এই ইয়াবা গুলো কোথা থেকে আসে , যুবসমাজ বা অন্যান্য প্রাইভেট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে আমরা আরো অনেক করুণ চিত্রই দেখতাম বলে আমার বিশ্বাস । বিশেষ করে যে জায়গা গুলোর মূল্যবোধ অনেকটা এমন যে ,এগুলো করা স্টাইল এবং যাঁদের এগুলো ক্রয়ের সক্ষমতা গড়ে বেশী সেসব ইউনির চিত্র দেখতে পারলে হয়তো সমাজে মাদকের থাবার আসল চিত্রই উঠে আসতো ।

দ্বিতীয়ত , একই পত্রিকার আরেকটা হেডলাইন "আল-কায়েদা স্টাইলে তৎপর আন্সারুল্লাহ" । এখানে একটি সারিতে লেখা " মূলত নর্থ - সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেদোয়ানুল আহমেদ রানার নেতৃত্তে চলছে আন্সারুল্লাহ বাংলা জঙ্গী সংগঠনের কার্যক্রম । তাঁর মানে নর্থ - সাউথ ইউনিতে অনেকেই বিভিন্ন জঙ্গি কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ! তাহলে আমি একজন সাংবাদিক হিসেবে কি শিরোনাম দেবো ? "নর্থ - সাউথে জঙ্গি সংগঠনের ভয়াল থাবা!" ?? সেটা কতোটা যুক্তিযুক্ত হবে???

ধরা যাক , ইনি ঢাবিতে পড়েন । আমি শতভাগ নিশ্চিত হেডলাইন হতো " ঢাকা বিস্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি আস্তানা " অথবা " ঢাবিতে জঙ্গি সংগঠন" ( লাল কালিতে বোল্ড ইয়া মোটা হরফে লেখা থাকবে ) । সেখানে অবশ্যই ভিসির জবাবদিহিতা তো থাকবেই ! আমার মনে হয় যে কোন সাংবাদিক ঢাবির প্রতিনিধি হওয়ার পর ভিসির একটু স্টেটমেন্ট নেয়াটা বাধ্যতামুলক মনে করেন, সেটা যত ফালতু ইস্যুই হোক । তারপর থাকবে প্রশাসন কিভাবে যুক্ত , ছাত্রলীগও কিভাবে মদদ দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি । অতঃপর পত্রিকার প্রথম পেইজ নিশ্চিত !

" পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতন " - এখানেও স্বাভাবিকভাবে ভিসির স্টেটমেন্ট । হ্যাঁ , এটা খুবি স্পর্শকাতর বিষয় । এখানে এটি তাঁর দায়বদ্ধতা যে তিনি এর শাস্তি নিশ্চিত করবেন এবং সে জন্য তিনি জবাবদিহিতা করতে বাধ্য । আমার সমস্যাটা অন্য জায়গায় । "পাবলিক" এই কথাটায় এতো এফোরট দেয়ার কারণটা কি? প্রাইভেটে কিছুই কি এমন হয় না? হয় । অবশ্যই হয় এবং সেটা কারো অজানাও না। তাহলে পত্রিকাগুলোর এতো " পাবলিক" ঘটিত সমস্যা থাকার কারণ কি? লুক্স লাইক উপরআলা পাবলিক ইউনি গুলাতে জগতের সমস্ত সমস্যা স্পেসালি পাঠাইসেন !

কারণ দুটি । একঃ এই পত্রিকাগুলো বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের । আর বেশিরভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমন স্বনামধন্য অনেক প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের । তাঁরা চায় মানুষের ভেতর এক ধরনের নেগেটিভিটি বা নেতিবাচকতা ঢুকিয়ে পাবলিক ইউনি "আকামের কারখানা" এই মনোভাবটা সাধারনের ভেতর প্রতিষ্ঠা করতে। তাহলে তাঁদের ব্যাবসার লাভ, মুনাফা অফুরন্ত । শিক্ষা ব্যাবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং হচ্ছেও ! দলে দলে মানুষ প্রাইভেট ইউনিগুলোতে পড়ছেন , ভর্তি হচ্ছেন ।

দুই ঃ "টি এস সি" , "ঢাবি" , " জাবি" এই ধরণের ব্র্যান্ড ভাল্যুকে কাজে লাগিয়ে সংবাদের বিক্রি বাড়াতে ।এই জন্য টি এস সির কাছে ধারে কোন একটা সুতো নড়লে সেই সুতো বুড়িগঙ্গা থেকে আসলেও সেটা টি এস সির ই দোষ!সেটা ঢাবিরই দোষ! এছাড়াও সাংবাদিকদের সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেস্টাটাও থাকে বলে আমার মনে হয় ।

ঢাবির ছাত্র হিসেবে এক ধরণের খারাপ লাগা থেকে কথাগুলো লেখা । আবেগের অতিশায্য থাকতে পারে , কিন্তু এই ধরনের ইরিস্পন্সিবল সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সচেতনতার সময় এসেছে । পত্রিকার প্রথম পেইজকে মানুষ এখনো বিশ্বাস করে , সেই জায়গা থেকে আরো রেস্পন্সিবিলিটির আশা রইল সাংবাদিকদের কাছ থেকে ।এমন " পাবলিক ইউনি" এফোরট থামবে না জানি , তবু নিজেকেই খানিকটা শান্ত করা আর কি!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:২৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×