তাঁর ভাষায় "কারো মতের সাথে আমার মত মিলেনা"। "প্রথাবিরোধী" তরিকা দিয়েও তারে ট্যাগিং করা সম্ভব নয়, কারনএই প্রথাবিরোধিতাও কারো না কারো সংগে যায় ।আসুন কবি, সমালোচক, একমেবাদ্বীতম ভাবনাকার রইসুদ্দিন রাইসু থুক্কু ব্রাত্য রাইসুরর কাছে থেকে কিছু সময় নিয়ে নিই আমরা ।
আহাশি: রাইসু ভাই কেমন আছেন?
ব্রা,রা: আপনার প্রশ্নটা অপ্রয়োজনীয়।
আহাশি: ইয়ে.... রাইসু ভাই,আমি তো কোন প্রশ্ন করি নাই।শুধু কুশল বিনিময় করতে চেয়েছি।বাংগালী রীতি তো এমনি!
ব্রা,রা: বাংগালী রীতির গুষ্টি কিলাই!
আপনি সাক্ষাৎকার নিতে আসছেন।সুতরাং কাউকে দেখেই সে ভালো আছে কি নাই,এইটা বোঝার ক্ষমতা আপনার থাকা উচিত।যদি থাকে, তাইলে প্রশ্নটা অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়।আর যদি না থাকে, তাইলে আপনি নির্বোধ।নির্বোধদের আমি সাক্ষাৎকার দিইনা।
আহাশি: হুমম.....বুঝলাম।তো সাম্প্রতিক সময়ে কি নিয়ে লেখালেখি করছেন?
ব্রা,রা: এইটাও একটা ফাও কোয়েশ্চেন।
আহাশি: জ্বি...ঠিক বুঝলাম না
ব্রা,রা: সাম্প্রতিক লেখালেখি বলে কিছু নাই।লেখালেখিতে আমার প্রথম বয়সের সন্তান, মধ্য বয়সের সন্তান, শেষ বয়সের সন্তান এইরকম কিছুই নাই। সাম্প্রতিক সময়ে যা কিছুই পঠিত হয়, সবই সাম্প্রতিক লেখা।
আমার অনেক পুরণো লেখা এখণো অনেকেই পড়ে।আপনার কথা মানলে তো ওগুলোকে ফেলে দিতে হয়,নাকি! দস্তোয়েভস্কি সেই কবে মরে ভূত হয়ে গেছে।কিন্তু তার লেখা এখনো সাম্প্রতিক।
আহাশি: যাইহোক, বিডি নিউজে আহমেদ ছফাকে নিয়ে আপনার একটা সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে।ইদানিংকালে "কবিতা,রিভিউ" তেমন করে পাচ্ছিনা আপনার কাছ থেকে।কিংবা অন্যকোন মৌলিক লেখা...
ব্রা,রা:কেন সাক্ষাৎকার'কে আপনার কি মৌলিক বলে মনে হয়না!কবিতার প্যানপ্যানানি ১৯ শতকেই শেষ,ছোটগল্প আর উপন্যাসের মৃত্য ঘটেছে ২০ শতকে,২১ শতকে এসে প্রবন্ধের অবস্থাও মরোমরো।বোদ্ধাদের সময় এসেছে সাক্ষাৎকার'কে স্বীকৃতি দেওয়ার।মানুষকে জানতে এরচেয়ে ভালো উপায় আর নাই।
আহাশি: সাক্ষাৎকার কি আসলেই মৌলিক কিছু কি?উপন্যাস কিংবা ছোট
গল্পের মতো..
ব্রা,রা: আচ্ছা..মৌলিক লেখা বলতে আপনি কি বুঝেন?কোন লেখাই মৌলিক নয়।লিখতে খাতা কলম কিংবা কম্পিউটার লাগেনা। এতোগুলোর
টুলসের সহায়তায় যে বস্তু তৈরি হয়,সেটা আবার মৌলিক হয় কিভাবে!
আহাশি: আহমেদ ছফার সাথে সাক্ষাৎকারে আপনি বেশ প্রাইভেট প্রশ্ন করেছেন যেমন উনি মাষ্টারবেশন করতেন কিনা, নারীদের সাথে যৌনসম্পর্ক এসব বিষয় নিয়ে।কোন মানুষকে জানতে এই একান্ত গোপনীয় বিষয়গুলি কি জানা জরুরী?কতটুকু বা প্রাসংগিক আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে?
ব্রা,রা: আলবৎ জরুরি।দেখুন নাচতে নেমে ঘোমটা দেওয়ার লোক আমি না।ওইসব সামাজিকতা-টামাজিকতার কথা আমাকে বলে লাভ নাই।কোন মানুষকে জানতে এইধরণের জিজ্ঞাস্য জরুরী।কোন মানুষের প্রাত:কৃত্য নিয়মিত এবং টাইমমত হয় কিনা, তার আদৌ কোষ্টকাঠিন্য আছে কিনা, পায়ুপথে ব্যাথা ইত্যাদি তার শারিরীক এবং সেই মানসিক স্বাস্থের হদিস দেয়।সাক্ষাৎকারদাতার পুরা অবয়ব বোঝা যায়।
আহাশি: আচ্ছা ..আপনি ব্লগে ছদ্মনিক নেওয়া কেন্দ্রকরে বেশ একবার ঝড় তুলে ছিলেন।ছদ্মনিকের ব্যাপারে আপনার বেশ গা ঘিনঘিন ভাব আছে।কিন্তু যতদুর জানি আপনার বাবা-মার দেয়া নাম রইসুদ্দিন রাইসু, আপনি সেটা ব্রাত্য রাইসু'তে পরিবর্তন করেছেন।এইটাও তো একধরনের ছদ্মনিক।অন্যদের বেলায় হইলে সমস্যা কোথায়?
ব্রা,রা: আরে অন্যরা আর আমি এক হইলাম নাকি।বিভিন্ন মহলে আমি চলনসই টাইপের বিখ্যাত মানুষ ।অন্যকেউ যদি এইরকম পর্যায়ে আসতে পারে তাইলে তার নিকের ব্যাপারে আমার আপত্তি নাই।
আহাশি: প্রথম আলো, সচলায়তন ইত্যাদি নিয়ে আপনার গা-চুলকানি মনোভাবের সাথে আমরা বেশ পরিচিত।ব্লগে এইগুলোর কেচ্ছাকাহিনী নিয়ে আপনি দু-একটি পোষ্টওদিয়েছেন।নিন্দুকেরা বলে এইসব জায়গায় স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় আপনার কপাল খুলে নাই।তাই আপনার এতো গা চুলকানি?তাদের যুক্তি হলো আপনি প্রথম আলো ছেড়ে দেয়ার পরই সেটার দোষ-ত্রুটি ধরা পড়ে শুধু আগে পড়েনি কেন?
ব্রা,রা: আই ডোন্ট কেয়ার সিম্পলি! পাছে লোকে কি বলে তাতে আমার কিছু যায় আসে না।কোন কিছু অপছন্দ হলেই সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবেনা, আমি আগের বর্তমানের পজিশন নিয়ে ভাবতে হবে, এইসব বালছাল যুক্তির আমি গুল্লি মারি।
আহাশি: আপনি বিডিনিউজ২৪ -এর আর্টসের এডিটর।বিডি নিউজ সম্পর্কে আপনার কোন অভিযোগ আছে কি নাকি চাকরি ছেড়ে দিলেই তবে দোষত্রুটি নির্মোহ দৃষ্টিতে ভালো বোঝা যায়।
ব্রা,রা: আসলে নির্মোহ দৃষ্টিটা নির্ভর করবে আমি চাকরি স্বইচ্ছায় নাকি পরইচ্ছায় ছেড়ে দিচ্ছি তার উপরে।পরইচ্ছায় ছাড়লেই তবে ওই প্রতিষ্ঠান
সম্পর্কে মোহমুক্তি ঘটে তথা নির্মোহ হওয়া যায়।
আহাশি: লেটস সে, আপনি বিডিনিউজ২৪ ছেড়ে দিলেন।তাইলে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বাংলায় শিল্পসাহিত্যের দাদা সাজতে চায় অভিভাবক সাজতে চায় কিন্তু সাহিত্য পাতার নাম "আর্টস"।এইধরণের গাধা-গরু দিয়ে আর যাই হোক অন্ত:ত বাংলা সাহিত্য হবেনা -এই ধরনের উক্তি আপনার কাছে থেকে কি শুনতে পাবো?
ব্রা,রা: পাইতে পারেন।আমি সব সম্ভাবনার দরজাই খোলা রাখি।
আহাশি: ব্লগে আপনি বেশিরভাগ সময় শীতনিদ্রায় থাকলেও কোন উপ্তত্ত ইস্যুতে ঠিক পোষ্ট দেন আর প্রতিফল হিসাবে প্রচুর মাইনাস পান।আপনি ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখেন?
ব্রা,রা: আপনি বুইঝ্যা নেন।এতক্ষণ কথা বলার পর আপনার বোধবুদ্ধির কিছুটা উন্নতি হওয়া উচিত।সবকিছুই কি আমাকে পরিস্কার করে বলে হবে নাকি?
আহাশি: ধন্যবাদ রাইসু ভাই!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪৯