কুরবানী দেওয়া “ওয়াজিব”। কুরবানী শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- উৎসর্গ বা ত্যাগ। আরবী জিলহাজ্ব মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে আল্লাহ-তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় গরু, ছাগল,ভেড়া,দুম্বা,মহিষ,উট, এই ছয় প্রকার জন্তু জবাই করাকে সাধারন ভাষায় কোরবানী বলা হয়ে থাকে। প্রতি বছর সারা বিশ্বের ইসলাম ধর্মের অনুসারি ধর্মপ্রাণ ও সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহকে খুশি করারা জন্য কুরবানী দিয়ে থাকেন। সবার উপর কোরবানী দেওয়া ওয়াজিব নহে। যে সব সামর্থ্যবান ব্যাক্তির সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ন্য বা সমপরিমান অর্থ সম্পদ আছে তার উপরই কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব । আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন-সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যে ব্যাক্তি কুরবানী করল না ,সে যেন আমার ঈদগাহের কাছেও না আসে। ছাগল ,ভেড়া,ও দুম্বা একজনের পক্ষ থেকে এবং গরু,মহিষ এবং উট সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া যায়। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন- জীবিত ব্যাক্তির নামে কুরবানি দিতে হয়, মৃত ব্যাক্তির নামে কখনো কুরবানী দেওয়া যায় না।
আসুন এখন আমরা দেখি, কি কি ত্রুটিগুলো থাকলে কুরবানী দেওয়া বৈধ নয়:-
১. খোঁড়া থাকলে
২. দাতঁহীন থাকলে
৩. লেজ বা কান কাটা থাকলে
আবু হানীফা (রঃ)মতে কানের অর্ধেক বা ততোধিক কাটা হলে যে কোন পশু দ্বারা কুরবানী দেয়া উচিত নয়।
কুরবানীর পশু কুরবানীদাতা নিজ হাতে জবাই করা উত্তম । আল্লাহর রাসুল (সঃ) কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করেছেন । অন্য লোক দ্বারাও জবাই করানো যায় । তবে সকল নিয়ম কানুন জানা থাকতে হবে । কারও দ্বারা জবাই করানোর সময় কুরবানীদাতাকে উপস্থিত থাকা উত্তম । জবাই করার সময় মুখে “ বিছমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ” বলতেই হবে । জবাই করার সময় পশুর মাথা দক্ষিন দিকে এবং জবাইকারী পশ্চিম দিকে মুখ করে জবাই করবে কুরবানী গরু জবাই করার মেয়াদকাল তিন দিন-এক. ঈদের দিন দুই. ঈদের ২য় দিন এবং ৩য় দিন।
কুরবানীর গোস্ত সম-পরিমানে তিনভাগে করা উত্তম । এক. নিজ পরিবার বর্গের জন্য দুই. আত্মীয় স্ব-জনের জন্য, তিন. গরীব ,অসহায়, এতিমদের জন্য ।
যাদের দিয়ে কুরবানীল পশু কাটানো হয় তাদেরকে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানীর গোশত দেয়া বৈধ নয় । এটা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ এবং কঠিন গুনাহের কাজ । এ সকল মজুরদেরকে টাকা পয়সা বা অন্য কিছু দিতে হবে ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল অসামর্থ্যবান এবং সামর্থ্যবান ব্যাক্তিদের কুরবানী দেওয়ার হুকুম মত পালন করার তফিক দান করুন সকলে বলি আমীন ।