সবার জীবনেরই সবচে মজার এবং অন্যরকম একটা দিন হল তাঁর নিজের জন্মদিন। বাবা-মার সাথে আনন্দ করা, বন্ধুবান্ধবদের সাথে মজার অভিজ্ঞতা, প্রথমবার কোন কিছু করার অভিজ্ঞতা, বিশেষ কারো কাছ থেকে বিশেষ কিছু পাওয়া, কোথাও ঘুরতে যাওয়া আরও কত কি...... আমরা আর কিছু মনে রাখার চেষ্টা করি আর না করি, এই দিন ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মনে হয়ে যায়।
আজ আমার ২১তম জন্মদিন। অনেকটাই বড় হয়ে গেছি। অনেক পথ পাড়ি দিয়েছি, অনেক কিছু দেখেছি, অনেকের সাথে পরিচিত হয়েছি, অনেকের সাথে অনেক রকম বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি, অনেক মজার সময় পার করেছি, অনেক কষ্টের সময়ও পার করেছি। হরেক রকম ঘটনার সাক্ষী হয়েছি, নিজে থেকে অংশগ্রহণও করেছি।
আমার জীবনে আমার যতগুলা জন্মদিনের কথা মনে পরে তার মধ্যে সবচে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ২০১০ সালের জন্মদিনটা। সম্পূর্ণ অন্যরকম এবং কিছুটা অদ্ভুতভাবে কেটেছিল সেবারের জন্মদিনটা। আমার কলেজ জীবন পুরাটাই কেটেছে আমার এক নিকট আত্মীয়ের বাসায়। ২০১০ সালের ১৩ জুন, কোন একটা কারণে ওই দিন আমি আশ্রয়হীন ছিলাম। আমার বইপত্র, কাপড়চোপড় সব কিছু আমানের বাসায়। আমার ওইদিন এক (তখন, মোটামুটি) বন্ধুর সাথে উঠার কথা ছিল। সে ঢাকার বাইরে। সে আসবে পরের দিন। এদিকে আমি আমার আত্মীয়র বাসা থেকে বের হয়ে গেছি। কি করি কি উপায়! বন্ধু বলতে আমান আর মেহেদী। কি করি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমানের সাথে সকালে অনেক্ষন ছিলাম। মেহেদী কোন এক কাজে ব্যস্ত। আমি শালা কি করি???? অনেক্ষন রাস্তায় রাস্তায় ভবঘুরের মত ঘুরলাম। কোন কিছুই মাথায় আঁটছে না। সাইদ গোপীদের সাথে তখনও পরিচয় নাই তেমন। দুপুরে খেলাম আমানের সাথে ওর চাচার বাসায়। আমান চলে গেলো গুলশান। আমি একা। বনশ্রীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি আর মাথায় চিন্তার সম্রাজ্য। কি করব? কোথায় রাতে থাকব? পরের দিন কি হবে? শালার পকেটেও তখন অর্থ সঙ্কট। চা-ও খাইতে পারতাছি না ঠিক মত। পেটে ক্ষুধা আর মাথায় চিন্তা নিয়ে সারা বিকাল সন্ধ্যা একা একা রাস্তায় ঘুরলাম। বনশ্রীর এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত হাঁটি, কাজী বাড়ির সামনে ড্রেজারের পাইপে রোদে বসে বসে নৌকা দেখি, এই সব আজাইরা কাজ করে টাইমপাস করছি। আম্মু আর ভাইয়াকেও ফোন দিতে পারসি না ভয়ে আর ......তে। রাতে ৯-৯:৩০টার দিকে আমান আসলো। একটু পর মেহেদীও আসলো। মেহেদী বলল ওর বাসায় থাকতে যতদিন সমস্যা থাকে। আমি কিছুটা স্বস্তি পেলাম। গেলাম মেহেদীর সাথে ওর বাসায়। রাতের খাওয়া মেহেদীর বাসায়। ওইদিন মেহেদীর আম্মু আমাকে আদর করেছিল। রাতে আমি আর মেহেদী অনেক গল্প করেছিলাম। মেহেদী আমাকে একটা কথা বলেছিল, "সজল, তুই জীবনে আর কিছু মনে রাখস আর না রাখস আজকের দিনটা তোর আজীবন মনে থাকবে।"
আমান আর মেহেদী , তোদের কোন দিন ধন্যবাদ বলি নাই ওই দিনের জন্য। কারণ আমার কাছে কেন জানি মনে হয়েছে ধন্যবাদ শব্দটা তোদের ওই দিনের ওই সাহায্য আর উপকারের কাছে অনেক তুচ্ছ আর নগণ্য। ভালো এবং সুন্দর থাকিস সারাটা জীবন। এই অধম তোদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
আর বাকি সবাইকে ধন্যবাদ এই অধমকে সহ্য করার জন্য।
I was angry with my friend;
I told my wrath, my wrath did end.
I was angry with my foe;
I told it not, my wrath did grow.
A poison Tree. . .
এই ছবিটা গুগল আমাকে উপহার দিয়েছে। জিনিসটা ভালো লাগলো
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯