মৌচাক মোড় থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তাটুকু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সায়েদাবাদ-গাজীপুর, গুলিস্তান-গুলশান, সদরঘাট-গাজীপুর, মতিঝিল-ফার্মগেট, মাওয়া-নরসিংদী, কমলাপুর-গাবতলী এবং নিউমার্কেট-উত্তরা রুটের যাত্রী ও মালমালবাহী বাস ও ট্রাকগুলো এ রুটে নিয়মিত চলাচল করে। এ ছাড়া এ রুটে চলাচল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল, ভিকারুন-নিসা-নূন স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুলসহ অসংখ্য স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বহনকারী ব্যক্তিগত ও স্কুল বাস। সচিবালয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টসহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যতম যাতায়াতের রাস্তা এটি।
প্রতিমঞ্চ টিম সরেজমিন গিয়ে দেখতে পায়, এ রুটে যাতায়াতকারী পরিবহন শ্রমিক এবং যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। দুর্ঘটনা, পরিবহনের ক্ষতি এবং দীর্ঘ যানজটের কারণে এ রুটে যাতায়াতকারী পরিবহন শ্রমিকদের কাছে এ রুটটি এখন আতংকের নাম। গর্তে পড়ে যাওয়া সিএনজি টেনে তুলতে তুলতে এমনটাই জানালেন এর চালক হিরক খান। তিনি বলেন, ফ্লাইওভার করে আমাগো ভালোর জন্য কিন্তু মৌচাক এলাকার অবস্থা দেখে মনে হয় ফ্লাইওভার না করাই ভালো ছিল। এদিকে আসতে চাই না যাত্রীদের অনুরোধে আসলেই গাড়ির কোনো না কোনো একটা ক্ষতি হবেই।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কর্মচারী মো. শাহজালাল বলেন, প্রায় প্রতিদিনই মৌচাক মোড়ে বিশ থেকে পঁচিশ মিনিট জ্যামে আটকে থাকতে হয়। ফ্লাইওভারের কাজ চলার কারণে রাস্তাটি এতটাই সরু করা হয়েছে যে একটির বেশি গাড়ি যেতে পারে না। ফলে প্রায়ই বিলম্বে কর্মস্থলে পৌঁছতে হয় আমাদের।
অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরাও- মৌচাক-মালিবাগ এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি শপিংমল এবং বিপণি বিতান। নির্দিষ্ট সময়ে ফ্লাইওভারের কাজ শেষ না হওয়ায় কাজের ধীরগতি এবং রাস্তা-ঘাটের দুরাবস্থার কারণে এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও বলেছেন হতাশার কথা। লাখ লাখ টাকা লগ্নি করেও কোনো ক্রেতা না পেয়ে এখন তারা দিশাহারা।
আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত সাফা কালেকশন্স নামের পাঞ্জাবি দোকানের স্বত্বাধিকারী খোরশেদ আলম রানা বলেন, এ ফ্লাইওভারের কাজে ধীরগতি এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতার কারণে আমাদের বেচাকেনা একেবারেই। যদি আগামী রোজার আগে এর কোনো সুরাহা না হয় তাহলে এ এলাকার ব্যবসায়ীদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
মালিবাগ মোড়ে অবস্থিত মারুফ গ্লাসের স্বত্বাধিকারী আবদুল খালেকও ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন তাদের ব্যবসা মন্দার কথা। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় অতিক্রম হলেও কাজের তেমন উন্নতি চোখে পড়ছে না। ক্রেতা এখন আর এদিকে আসতে চায় না।
হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ
মালিবাগ মোড়ে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হয় যানজট মোকাবেলায়। বিশেষত অফিসের সময়ে তাদের যেন দম ফেলার ফুরসত মেলে না। নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে বারবার বলেও কাজ না হলে তারা নিজ দায়িত্বেই স্বেচ্ছাশ্রমে ভরাট করেন খানাখন্দ। এ প্রসঙ্গে ট্রাফিক সার্জেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অফিসের সময়ে আমাদের পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক বেগ পেতে হয়।
মগবাজার-মৌচাক ও মালিবাগ অংশের কাজ করছে তমা গ্রুপ। মালিবাগ অংশের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তমা গ্রুপের অফিসে গিয়ে একটি মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করেন এ প্রতিবেদক। কিন্তু কল দিয়ে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তমা গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা তো আমাদের সাধ্যমতো রাস্তাঘাট ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসারও এখানে দায়িত্ব রয়েছে তারা এ ব্যাপারে আমাদের তেমন কোনো সহযোহিতা করছে না। আমরা ইট-সুরকি ফেলে রাস্তাগুলো মেরামত করলেও ড্রেনের পানি উপচে অনেক জায়গায় জমে গিয়ে সকলের অসুবিধা সৃষ্টি করছে। - See more at: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:১০