দু’ দশক আগেও শুধু আল কায়েদা এবং তালেবান নামে দুটি জঙ্গি সংগঠনের বিশ্বব্যাপী পরিচিত ছিল। এখন এই দুই সংগঠনসহ নাইজেরিয়াতে বোকো হারাম, সোমালিয়াতে আল-শাহব, সিরিয়াতে আইএস, বিন লাদেন-ফ্রন্ট লাইন ও আল নুসরা এবং লিবিয়াতে আনসার আল-শরিয়ার মতো বহু জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। পশ্চিমা গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ছোট বড় সর্বমোট জঙ্গি সংগঠনের সংখ্যা পাঁচ হাজার।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার শুরু হয় ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর।তখন আফগান ফেরত অনেক ইসলামি যোদ্ধা বাংলাদেশে ঘাটি করতে শুরু করে।জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% মুসলিম হিসেব করে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করে।প্রথম দিকে তাদের দৃষ্টি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় হলেও আস্তে আস্তে শহরেও তারা কার্যক্রম শুরু করে।তখন তাদের সদস্য সংগ্রহ হত কাওমি মাদ্রাসা থেকে।১৯৯২-৯৩ দিকে মুফতি হান্নানের পরিচালনায় গঠন করা হয় হরকাতুল জিহাদ।এটি বাংলাদেশের প্রথম জঙ্গি সংগঠন।দুর্গম পাহাড়ি ও অনুন্নত জনপদে শাররিক ও অস্ত্রের ট্রেনিং দিত তারা।এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের হাটহাজারি ও নাজিরহাট কাওমি মাদ্রাসা ছিল তাদের মুল ঘাঁটি ।
২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরন অনুষ্ঠানে, সিপিবির সামাবেশে ও ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট আওয়ামিলিগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা সহ, দেশে প্রায় ২০টি জঙ্গী গ্রেনেড ও বোমা হামলার সাথে জড়িত ছিল হরকাতুল জিহাদের মুফতি হান্নানসহ আরও অনেক সদস্য যাতে অনেক লোক হতাহত হয়েছে।
২০০৪ সালে ২১শে বইমেলাই কুপিয়ে গুরতর আহত করল ডঃ হুমায়ন আজাদ কে ‘পাকসার জমিন সাদবাদ’এই বইটি লেখাছিল তার আপরাধ!
বিশ্বে এখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানই জঙ্গি গোষ্ঠীর সবচেয়ে নিরাপদ আস্তানা এবং এই দেশ দুটিই বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদ ‘রপ্তানি’ করে বেড়াচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনের অধিকাংশই পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান-কেন্দ্রিক। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও রাজনৈতিক সুবিধাবাদের জন্যই কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আদর্শিক এবং সামাজিকভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীগুলোকে। তাই এ দেশেও এক সময় এই উগ্রবাদ জঙ্গিবাদে রূপ নিয়েছে।
শায়খ রহমান বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানিদের পতনের পর এখন আনসার উল্লাহ, আল্লাহর দল, ইসলামি আইন বাস্তবায় ও ভিবিন্ন নামে তাদের কিলিং মিশন সক্রিয় রেখেছে।
২০১৩ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারী গনজাগরন মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার রাজিব হায়দার কে কুপিয়ে হত্যা করা হল যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাওয়া ছিল তার অপরাধ ! । তারপর নাস্তিক আখ্যাদিয়ে হত্যা করা হল লেখক অভিজিৎ রায়’কে বিজ্ঞান মনষ্ক বই লেখা ছিল তার অপরাধ!
তারপর একে একে ওয়াসিকুর রহমান বাবু অনন্ত বিজয় দাশ ও নিলাদ্রী চট্টপদ্যায় কে হত্যা করা হল নাস্তিক ব্লগার আখ্যা দিয়ে।ব্লগার হওয়া ছিল তাদের অপরাধ!
তারপর হত্যাকরা হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সফিউর হরমান’কে। লালন ভক্ত হওয়া ছিল তার অপরাধ!
তারপর ফয়সল আরেফিন দিপন কে হত্যা করা হল তার প্রকাশনায় অভিজিতের বই ছাপা্নো ছিল তার অপরাধ!।আহত করা হল শুদ্ধেস্বরের আহমেদ রশিদ টুটুল কে।
তারপর তারা হত্যা করল নাজিমুদ্দীন সামাদ’কে সে নাস্তিক ব্লগার নয় তারও তাকে হত্যাকরা হল!, কারন সে ছিল ধর্মান্ধের বিপক্ষে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর ও সিলেট গনজাগরন মঞ্চের কর্মী।
তারপর হত্যাকরা হল প্রফেসর রেজাউল সিদ্দিকিকে;তার কি অপরাধ? সে কি ব্লগার? সে কি নাস্তিক ? সে কি লেখালেখি করত ? ...না...না । তাহলে সে কি করেছিল যে তাকে জঙ্গির কোপে মরতে হবে?
তার অপরাধ সে সেতারা বাজাত ! মস্তবড় এক অপরাধ।
তারপর হত্যাকরা জুলহাস ও তনয় কে ।
জুলহাসের অপরাধ সে সমকামী অধিকারের পক্ষের কর্মী ছিল !
তাহলে তয়ন কেন হত্যা করা হল? কারন সে জুলহাসের বন্ধু ও নাট্যকর্মী ছিল!!
এই জঙ্গির দেশে; বইলিখা অপরাধ, বইপড়া অপরাধ,বই ছাপা অপরাধ,ব্লগার বা সাংবাদিক হওয়া আপরাধ,ধর্ষন হত্যা কিংবা লুন্ঠনের বিচার চাওয়া আপরাধ,যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়া অপরাধ,মোল্লা মুলুবির অপরাধের কথা বলাও অপরাধ।সেতারা বাজানো অপরাধ রবীন্দ্র ভক্ত হওয়া অপরাধ, লালন ভক্ত মস্তবড় অপরাধ কারন লালনের কোন ধর্ম ছিলনা সে গভীর রাত পর্যন্ত কোন ভন্ড পিরের মত এলহু এলহু করতেন না। তাইত ২০০৮ সালে আমাদের মহান শান্তিকামিরা আল্লহর নামে ভেঙ্গেছে লালনের মুর্তি! যেমন ভেংগেছিল কাবা শরিফে।এদেশে নাটক দেখা অপরাধ নাটক বানানো অপরাধ পর্ন দেখা অপরাধ সমকামিদের অধিকারের পক্ষে ক অপরাধ ।
এদেশে যাহা অপরাধ নয়ঃ
ঘুষ খাওয়া, ১০০ খুনকরা,১০০০০ ধর্ষন করা,২০০০০০লুন্ঠন করা, ১০০০০০ বই পুড়ানো,মিথ্যা বলা,বিদেশে ১০০০০০০০০০০০০ টাকা প্রাচার করা,দৈনিক ১০০ বোতল মদ খাওয়া, স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর জেগে জেগে ঘুম যাওয়া ও আবালামি করা, ধর্মের নামে ১০০০০০০০ খুন করা,২০০০০০০০০০০০০০ মিথ্যাচার করা, পর্নদেখে হস্তমৈথুন করা, অ্যাঅ্যা .......ইত্যাদি ইত্যাদি।
--রুদ্র রক্তিম।