somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাওমি মাদ্রাসা ও বাংলাদেশ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বেঙের ছাতার মত কোচিং সেন্টার বলি কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মত কাওমি মাদ্রাসা বলিনা।সঠিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে কাওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ঠিক কতগুলো তা কেউ বলতে পারেনা।
কোন পরিসংখ্যানে ১৫০০০। এটি ২০০৮ সালের হিসাব অনুযায়ী।বর্তমানে ২০/২৫ হাজারের কম হবেনা।বেশির ভাগ জেলা উপজেলায় স্কুল কলেজের চেয়ে কাওমি মাদ্রাসার সংখ্যা অনেক বেশি বিষেশ করে চট্টগ্রাম জেলায় কাওমি মাদ্রাসা ভয়ংকর রূপে বেশি।
চট্টগ্রামের যেসব সংসদীয় আসনে কাওমি মাদ্রাসা সংখ্যা বেশি তাহলঃ
(১)হাটহাজারী (২) ফটিকছড়ি (৩)বাশখালি (৪)সন্দ্বীপ
কাওমি মাদ্রাসা কি? কাওমি মাদ্রাসা এক ধরনের বেসরকারি ইসলামি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে।
কাওমি শিক্ষা হচ্ছে মুলত ধর্মীয় শিক্ষা যেখানে ইহকালের চিন্তা বাদ দিয়ে পরকাল নিয়ে বেশি আলোচনা করা হয়। এখানে লক্ষ্যনীয় যে কাওমী মাদ্রাসার বিপুল অংশ এতিম, এবং সাধারণত দেশের শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরাই সাধারণত কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে থাকে। অল্প কিছু সংখ্যক পিতামাতা তাঁদের ছেলেমেয়েদেরকে মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতে পাঠান পরকালীন মুক্তির আশায় তাদের সামর্থ্য থাকা সত্বেও । আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এক মায়ের দুই সন্তান থাকলে একজন’কে আরবী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এই জন্য যে,এক ফ্যামিলির একজন আরবী শিক্ষিত ৫ জনকে বেহেস্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে !!। কিছু কিছু মা-বাবা তাদের বেহেস্ত নিশ্চিত করার জন্য তাদের সন্তান কে জম্মের পরে কাওমি মাদ্রাসার দিকে ঠেলে দেয়।
বাংলাদেশের ইসলামি চরম পন্থা ও জঙ্গিবাদের উথান এই কাওমি মাদ্রাসা থেকে।তার মানে এই নয় কাওমি মাদ্রাসার সকল ছাত্র শিক্ষক জঙ্গি।কিন্তু তাদের চিন্তাধারা অন্ধকার যুগের মানুষের মত।নারী শিক্ষা নারী স্বাধীনতা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বিষয়ে তারা চরম বর্বর।
দেশের অর্থনিতি সম্পর্কে তারা অজ্ঞ।এগুলা তাদের জানার দরকার নেই দরকার মনেও করেনা তারা।
এখানে মূল বিষয় হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষা, যেখানে পুরো পৃথিবী জুড়ে বিজ্ঞানের জয়-জয়কার সেখানে এই মাদ্রাসা গুলো তে শেখানো হয় কোরান, হাদিস, ফিকাহ্ , ইসলামের ইতিহাস ।
আসলে বাস্তব জীবনে এই বিষয় গুলো কতটুকু জরুরী ? কর্ম ক্ষেত্রে কাওমী মাদ্রাসায় পড়া ছাত্র ছাত্রী কত টুকু সফল ? একমাত্র পরলৈকিক ব্যাপার টুকু ছাড়া সব ক্ষেত্রে তারা কি পিছিয়ে পরছে না ?।আসলে তাদের মা-বাবারা তাদের পিছিয়ে দিচ্ছি।কেউ টাকার জন্য আধুনিক শিক্ষা নিতে পারছেনা আর কেউ ইচ্ছে করে নিচ্ছেনা পরকালের পুলছিরাত সন্তানের ঘাড়ের উপর দিয়ে পাড় হওয়ার জন্য!।হাহাহা!!
সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নেই এসব ফুরকানিয়া কিংবা কাওমি মাদ্রাসায়।এসব মাদ্রাসায় জাতীয় পাতাকা উত্তলন করা হয়না গাওয়া হয়না জাতীয় সংগীত!।যে দেশে বসবাস করছে জানেনা সে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য। তাইত তারা পহেলা বৈশাখের বিরোধিতা করে হিন্দুয়ানি সংষ্কৃতি বলে গালাগাল করে। ।
শিক্ষানবিশ অবস্থায় একজন মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী কে যেভাবে মানসিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় তাতে দেখা যায় তারা তাদের শৈশব ও কৈশোর কাটে অমানবিক ভাবে । এছাড়া একটু সাধারন ভুল হলেই তাদের উপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন।সারা দিন দেখানো হয় দোজখের ভয় আর বেহেস্তের লোভ, এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দ্যেশে এই সব কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী কে ব্যবহার করা এটা আমাদের সবারই জানা । হেফাজতের ২০১৩ সালের ৫ই মের সমাবেশে ব্যবহার করা হয়েছিল শিশুদের শাপলাফুল দেখাবে বলে তাদের ঢাকা নিয়ে এসেছিল তাদের বড় হুজুরেরা।
কোচিং সেন্টারের মত কাওমি মাদ্রাসাও এখন এক শ্রেনির মানুষের কাছে ধান্দাবাজীর উৎস।এতিম ও গরিব শিশুদের মাদ্রাসা বলে দেশ বিদেশ থেকে ফান্ড কালেক্ট করবে আর নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবে।শিতকালে শিশুদের ছটের বস্তা হাতে দিয়ে বের করে দিবে ওয়াজের নামে চাঁদা ধান/চাল সংগ্রহ করতে আর তারা মাথায় ধান/চালের বোঝা নিয়ে এ-বাড়ি সে-বাড়ি ঘুরে বেড়াবে আর খুজাখুজিতে ব্যস্ত থাকবে।এভাবে তৈরি হচ্ছে একটি ভিক্ষুক গুষ্টি !।
শিক্ষা গুরুর কাজ হচ্ছে আমাদের মানুষ বানানো কিন্তু কাওমী মাদ্রাসা গুলোর দিকে তাকালে মনে হয় সেখানের শিক্ষকগন মানুষ বানানোর চেয়ে ধর্মীয় যোদ্ধা বানানোর দিকে বেশী মনযোগী।আর তারা হয়ে উঠছে একএকজন জিহাদি জন! তারা শুধু খ্রিষ্টান হিন্দুর নাস্তিকের গর্দান কাটতে ব্যস্ত।
এর জন্য আমাদের ভন্ড প্রতারক রাজনৈতিক দলের নেতারা খুব বেশিদায়ী যেখানে কেউ করছে ধর্ম ব্যাবসা আর কেউ চেতনা ব্যাবসা।
একটা পরিসংখ্যান দিয়ে শেষ করছি।চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার তথ্যমতে ঐ সংসদীয় আসনে ফোরকানিয়া মাদ্রাসার সংখ্যা-২২৫ টি ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়-১০৩ টি!
সত্যিই তলিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ!!!

বিঃদ্রঃ আমার এই লেখটি কালকে স্টিশন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে।@রুদ্র রক্তিম
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×