১৯৭১ সালের নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় অর্জিত হওয়ার পর, ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহিত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়।।সেই সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি মূলনীতি ছিল-(১)জাতীয়তাবাদ,( ২)গণতন্ত্র, (৩) সমাজতন্ত্র এবং (৪)ধর্মনিরপেক্ষতা। অর্থাৎ সংবিধানের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা।যা ৭২-এর সংবিধান নামে পরিচিত।বলা হয়ে থাকে গোটা দুনিয়ার সেরা লিখিত সংবিধানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেরটাই অনেক দিক দিয়েই অনন্য, অনবদ্য, সুন্দরর্য মহাকাব্যিক ও জনসম্পৃক্ত।১৯৭৫ সালের ১৫-ই আগস্ট স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’কে হত্যার ও পরবর্তীতে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা মধ্যদিয়ে এই সুন্দর জিনিসটিকে ধর্ষণ করা করা হয় এবং পদ-দলিত করা হয় রাষ্ট্রের চার মুলনীতি’কে এবং সদ্য স্বাধীন দেশে সৃষ্টি করা পরাজিত শত্রু পাকিস্তানিদের ভাব ধারা।খুনিরা তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য সংবিধানে কাটাছেড়া শুরু করে এবং আস্তে আস্তে সংবিধানে ধর্মীয় রঙ দিতে শুরু করে।
যাইহোক,সামরিক জান্তা অস্ত্র সানগ্লাস গ্রেনেড বেয়নেট ও লেফট রাইট নিয়ে চর দখলের মত ক্ষমতা দখল করলেন শুরুকরলেন পবিত্র সংবিধান ধর্ষন যকে বলা হয় ৫ম সংশোধনী।জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের শুরুতে প্রস্তাবনার আগেই ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ যোগ করলেন শুরু হল সংবিধান ও রাজনীতি ধর্মের ব্যাবহার শুরু করল ও ১৯৭১-১৯৭৫ পর্যন্ত নিষিদ্ধ যুদ্ধাপরাধী দল জমায়াতী ইসলামকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিল।তারপর ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চরিত্রটিই পরিবর্তন করে দেন তখনকার স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ। তার শাসনামলে অষ্টম সংশোধনীতে সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে চরম বিশ্বাস ঘাতকতা।যা নিয়ে অধ্যবদি বিতর্ক চলছে।বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জম্মের পরে এখন পর্যন্ত অষ্টম সংশোধনী রাষ্ট্র ও তার জনগণের সাথে সবছেয়ে বড় ভন্ডামী।রাষ্ট্রের প্রতিটি জনগনের অধিকার আছে তার নিজ নিজ ধর্ম শান্তি মতে পালন করার ধর্ম মানুষের জন্য রাস্ট্রের জন্য নয় রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারেনা,শেষ বিচারের দিন রাষ্ট্রকে প্রশ্ন করা হবেনা হে রাষ্ট্র তোমার ধর্ম কি?।প্রশ্ন করা হবে মানুষ কে।রাষ্ট্র ধর্ম হচ্ছে ধর্মব্যবসায়ী ও ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনিতিবিদের ধর্মভিরু জনগন’কে ধোকা দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া মাত্র।পৃথিবীর কোন দেশে সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম আছে বলে আমার জানা নেই।সংবিধানে রাষ্ট্র যোগ করে রাষ্ট্রের অন্যান্য ধর্মালম্বীদের ছোট করা হচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে প্রতারনা করা হচ্ছে। একটি রাষ্ট্রের পরিচয় হচ্ছে তার পতাকা ইতিহাস সংষ্কৃতি এবং তার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সেখানে ধর্মের পরিচয় হাস্যকর।
--রুদ্র রক্তিম