somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোজাম ভাইয়ের আবহা ভ্রমণ-১ (আরব ডায়েরি-৯২)

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামু ব্লগের যে কয়েকজন ব্লগারের সাথে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে, মোজাম ভাই তাদের অন্যতম। যখন স্বপ্নেও ভাবিনি সৌদি আরবে আমি চাকুরী করতে আসব, সে সময়েই আমি ওনার লেখাগুলো আগ্রহভরে পড়তাম। ওনার লেখার সাবলীলতা ও সরল বর্ণনা আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।

কেমন করে যেন আমিও সৌদি আরব চলে আসলাম (সে এক লম্বা ইতিহাস, আমার প্রথম দিককার লেখায় আমি তা বলেছি) আর মোজাম ভাইয়ের সাথেও যোগাযোগ ঘটল। ঘটনাচক্রে দাম্মামে মোজাম ভাইয়ের বাসায় বেড়াতেও গেলাম। প্রথম দেখায় মোজাম ভাইকে মনে হয়েছিল উদ্যমী তরুণ যাকে ওনার ব্লগের তখনকার প্রোফাইল পিকের সাথে মেলাতে পারিনি।

সেই মোজাম ভাই অনেকটা হঠাৎ করেই জানালেন –তিনি মাত্র ১ দিনের জন্য অফিসিয়াল কাজে আবহা আসছেন। খুশী হলাম, সাথে সাথে মন খারাপও হল। আবহা কে নিয়ে ব্লগে এত এত লেখা দিয়েছি- কোনটাইতো ওনাকে ঠিকমতো ঘুরিয়ে দেখানো যাবে না।
বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে মনে মনে আধা দিনের একটা সিটি ট্যুর প্ল্যান করে ফেললাম। এপ্রিলের ২১ তারিখ উনি আসবেন। মঙ্গলবার বিধায় আমাকে সকালেই ইউনিভার্সিটি যেতে হবে, তার আগে আমার ওয়াইফকে তার অফিসে ড্রপ করতে হবে। উনি ঠিকমতো পৌছাতে পারবেন কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। আবহায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন কাজ চলছিল, রোড সাইন তেমন দেয়া নেই। তবে আমাদের মাঝে ফোনে যোগাযোগ চলছিল। উনি বিমান থেকে নেমে গাড়ী ভাড়া নিয়ে আমার ইন্সট্রাকশন মতো সিটি সেন্টার চলে আসেন। আসার পথে উনি ওনার অফিসিয়াল মিটিং প্লেসটিও দেখে এসেছেন।

শেষ মূহুর্তে আমি আমার ওয়াইফকে আলিম ভাইয়ের সাথে তার কলেজে পাঠিয়ে দেই। আর আমি মোজাম ভাইকে সিটি সেন্টার থেকে আমাদের এ্যাপার্টমেন্ট কাম হোটেলে নিয়ে আসি। মোজাম ভাই কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে ১১টার দিকে অফিসিয়াল মিটিং এ যাবেন। আমি নাস্তার ব্যবস্থা করে ইউনিভার্সিটি চলে যাই।

ইউনিভার্সিটি থেকে ১২টার দিকে বের হয়ে গেলাম। ইতমধ্যে মোজাম ভাইও ওনার অফিসিয়াল কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এখন ঘুরাঘুরির পালা। প্রথমেই উনাকে নিয়ে গেলাম বেনি মাজিনের পাশের এক পাহাড়ে। এখান থেকে জিজান যাবার আঁকাবাকা রোডটি দেখা যায়। কোন কোন জায়গায় রোডটি খাড়া নেমে গেছে। আমি এই পাহাড়ে কখনো গাড়ী নিয়ে উঠিনি। কি মনে হতে আল্লাহ’র নাম নিয়ে উঠে গেলাম। সেখানে কিছুক্ষণ থেকে ফেরার পথে পড়লাম বিপদে। সংকীর্ণ রাস্তা, উচু নিচু পাথর আর গর্তের কারনে ভয় পেয়ে গেলাম। উপরে উঠার সময় কিভাবে কিভাবে যেন উঠে গিয়েছিলাম। তবে মোজাম ভাই গাড়ীর বাহির হতে দারূণভাবে ইন্সট্রাকশন দিলেন, আমিও খারাপ পথটুকো ভালোভাবে পেরোতে পারলাম।

এরপর গেলাম আবহা ড্যামের কাছে। গ্রীষ্মের ছুটিতে এখানে আঁতশবাজি ফোটে, চারপাশ সরগরম থাকে। এখন বিপরীতভাবেই একদম নীরব। শুধু কয়েকটি বন্য হাঁস পানিতে খেলা করে বেড়াচ্ছিল।





আমাদের মাঝে অনেক আলাপ হচ্ছিল- সমকালীন রাজনীতি, ব্লগীয় পরিবেশ, পুরনো ব্লগারদের সামু ছেড়ে যাওয়া আরো কতো কি। এই মোজামভাই কতোদিন ধরে ব্লগে লেখেন না। আবহা ঘুরে এসে অনেকদিন পর একটি লেখা দিয়েছেন। যেই আমি প্রতিদিন ভালো ভালো লেখকদের লেখার জন্য ব্লগে পড়ে থাকতাম, এখন ব্লগে তাকালে মনে হয় সবকিছু শূন্য।

আমরা ততক্ষণে গ্রিন মাউন্টেনের পাশে চলে এসেছি। পাহাড়টিতে রাতে কৃত্রিম সবুজ বাতি জ্বালানো হয় আর তাই এই নাম। আমরা সেখানে থামলাম। কিছু দূরেই “হাই আল দাবাব” ফ্যামিলি পার্ক। সৌদি ফ্যামিলিরা সেখানে নরম মাদুর বিছিয়ে মিস্টি বাতাসে আরাম করছে। এদের দেখলে কখনো কখনো হিংসে হয়। নিজেরা কিছু না করেও কেমন আলসে জীবন যাপন করছে।




রাতের গ্রিন মাউন্টেন

চা খাবার তেষ্টা পেয়ে গিয়েছিল। মোজাম ভাইকে নিয়ে চললাম আমার প্রিয় একটি জায়গায়। এখানে প্রায় সময়ই আমি, জহির ভাই ও মাহমুদ ভাই গভীর রাতে চা খেতে আসি। সবুজ ঘাসের মাঠের পাশেই একটি ক্যাফে। ক্যাফের সবাই বাংলাদেশি, আমাদেরকে বেশ খাতির করে। আমরা যখন সেখানে পৌছলাম-ক্যাফের সামনের রাস্তাটি বেগুনী ফুলে ছেয়ে আছে। রাস্তার ধারের সারি সারি জাকারান্ডা ফুল গাছগুলো দেখলে জায়গাটিকে সৌদি আরব বলে মনে হয় না। আমরা দুই কাপ চা নিয়ে সবুজ মাঠের চেয়ারে গিয়ে বসলাম।





(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৮
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×