ওরা আসে, দেখে এবং জয় করে নেয়। রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হতে শুরু করে আমলা, ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, শিল্পী, পতিতা সহ কেউ বাদ যায়না। শুধু জয় করে ফিরে গেলে এ নিয়ে লেখার কিছু ছিলনা, বাস্তবতা হচ্ছে যাওয়ার সময় ওরা কেউ নিয়ে যায় হাড়ি ভর্তি ইলশে, সুটকেস ভর্তি জামদানি, কেউবা আবার বস্তা ভর্তি টাকা। আমরা যারা রবীন্দ্র নামের পূজারি নই, মঙ্গল প্রদীপ যাদের পৃথিবী মঙ্গল গ্রহের মত আলোকিত করেনা তাদের জন্যে এই আসা যাওয়া কোন রহস্য নয় যা উদঘাটনে কিরিটি বাবুর দরকার হবে। জাত বেনিয়ারা এভাবেই পৃথিবীর দুয়ারে দুয়ারে ভাগ্যের সন্ধান করে। খুঁজে বেড়ায় কাঙ্ক্ষিত জীবন। সন্ধান করে পণ্য বিপণনের নতুন নতুন বাজার। এক কথায়, ওরা বিক্রেতা আর আমরা ক্রেতা। ওদের সবকিছুই আমাদের কিনতে হয়। সহজ ভাবে বললে, আমরা বাধ্য হই কিনতে। ক্ষমতার রাজনীতি আমাদের অর্থনৈতিক সেক্টরের সবকটা জানালা অনেকটা চরিত্রহীনা রমণীর মত উলঙ্গ করছে ওদের সামনে। তাই ওরা আসছে, আসছে পতঙ্গের মত... মধু লুটছে এবং দিন শেষে বিজয়ীর বেশে ঘরে ফিরে যাচ্ছে।
আইপিএল কায়দায় বিপিএল নামক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পেছনে কারা জড়িত তাদের আসল চেহারা প্রকাশ না পেলেও অনেকের মতে ওরাই তারা যাদের কারণে এক সপ্তাহে দুজন বাংলাদেশি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। শেয়ারবাজার লুটের সব টাকাই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে এমনটা ভাবার যথেষ্ট প্রমাণ নেই আমাদের হাতে। দেশিয় টাকার মহাসমুদ্রের উপর সাতার কাটছেন অনেকে। দরবেশ বাবাদের মুখের দাড়ি শুভ্র হলেও তাদের পকেটের টাকা কিন্তু শুভ্র হয়নি এখনো। বিপিএল নাকি কাঙ্ক্ষিত শুভ্রতার পথে প্রথম পদক্ষেপ।
অন্যায় আর অবৈধ অর্থের সাথে সুরা ও আধা-উলঙ্গ নর্তকীদের একটা অদৃশ্য সম্পর্ক থাকে। এ শুধু কবি সাহিত্যিকদের কলম বাস্তবতা নয়, এ রাজনৈতিক লুটেরাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা। ওরা টাকা দিয়ে নর্তকী নাচায় আর পান করে ৪০ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর রক্ত। সুরা আর সাকীর এ অধ্যায়কে চার দেয়ালে বন্দী না রেখে জনসম্মুখে নিয়ে আসার অপর নামই বোধহয় বিপিএল। দেশীয় ক্রিকেট এখনো এমন কোন শক্তি অর্জন করেনি, যেখানে লাখ লাখ ডলার ব্যায়ে ময়ূর নাচের আয়োজন করতে হবে। কাগজে কলমে আমরা এমন কোন অর্থনৈতিক শক্তিও নই যা নিয়ে ওদের সাথে পাল্লা দিতে হবে...ওঁম শান্তি!!!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৭