যাপিত জীবনের অংক মেলানোর এক পর্যায়ে আমরা হজ্বে যাই। ধর্মীয় অনুশাসনের অবিচ্ছেদ্য অংশও এই হজ্ব। বিশ্বাসীদের জন্য তা হচ্ছে বাধ্যতামূলক। তাই সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে তারা পা বাড়ায় মক্কা-মদিনার পথে। সারা জীবনের সঞ্চয় হতে বেশকিছুটা ব্যয় হয়ে যায় ইসলাম ধর্মের অন্যতম স্তম্ভ এই হজ্ব পালন করতে গিয়ে (রাজনীতির চোর বাটপার আর জন্মগত ধান্ধা-বাজ বাদে)। আমরা খরচ করি আর ওরা আয় করে। এবারের হজ্ব হতে সৌদি রাজা-বাদশাহদের আয় হবে ৮.৫ বিলিয়ন ডলার। যার বাংলা অনুবাদ হবে ৮৫০০মিলিয়ন ডলার=৮৫০কোটি ডলার=৬৮০০০ কোটি টাকা। এ টাকায় ওরা দেশ চালানোর তহবিলের শক্তি বাড়ায়। যার প্রকাশ ঘটে প্রকাশ্য দিবালোকে মস্তকচ্ছেদ করার মত জংলী ও বর্বর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে। এ টাকায় বাদশাগন শ খানেক বিয়ে করেন। যুবরাজদের জন্য ব্যবস্থা করেন আরাম আয়েশের । টাকার ছিটেফোঁটা যায় দেশটার জনগণের দুয়ারে। যা দিয়ে ওরা বাংলাদেশের মত দেশ হতে গৃহকর্মী আমদানি করে। বলাই বাহুল্য এসব গৃহকর্মীদের প্রায় সবাইকে বাবা, ছেলে মিলে ধর্ষণ করে। কদিন আগে দেশটার বাদশা গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটিয়ে এলেন পাপের দেশ ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা হতে। বছরের এ সময়টা রিভিয়েরার বীচ ভর্তি থাকে পর্যটকদের ভিড়ে। সাম্য ও ন্যায়ের ধর্মের অন্যতম প্রতিপালক বাদশা যাবেন, তাই বন্ধ করে দেয়া হল বীচ। বিশাল হোটেলের সবকটা রুম ভাড়া করে বিদায় করা হল বাকি বোর্ডারদের। স্ট্যান্ডবাই চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতাল হতে সব রুগীকে বিদায় করালেন। তাও অর্থ দিয়ে। এবং কদিনের অবস্থানেই বদলে দিলেন স্থানীয় প্রশাসনের তহবিল। বলার অপেক্ষা রাখেনা আমাদের খরচ করা ৬৮,০০০ কোটি টাকার একটা অংশ দিয়েও মেটানো হয় এসব চোখ ধাঁধানো আয়েশি জীবনের খরচ।
৭১৭ জন (বলা হচ্ছে ১৩০০) হাজী পায়ের নীচে দলিত মথিত হয়ে মারা গেছে গতকাল। ওরা গিয়েছিল মিনায়। গিয়েছিল নিজদের বিশ্বাসের প্রতি সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। এবং তা কল্পিত শয়তানের গায়ে ঢিল ছুঁড়ে। এ ধরনের ঘটনা প্রায় প্রতি বছরই ঘটে। হয় তাবুতে আগুন লেগে, হয় ক্রেন ছিঁড়ে নয়তো মিনায় পদদলিত হয়ে প্রাণ হারায় শত শত হাজী। ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের কেউ এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনা। আপনজন হারানোর ব্যথা স্বজনরা সৃষ্টিকর্তার উপহার হিসাবে মেনে নিয়ে শান্তি খুঁজতে চেষ্টা করে। সংশ্লিষ্ট দেশের সরকাররাও চুপ থাকে সৌদি সরকারের প্রতিশোধের ভয়ে। কিন্তু এভাবে আর কতকাল! কতকাল ধরে সৌদি বাদশাহদের অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে আলু ভর্তার মত দলিত মথিত হবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা? অথচ ৮.৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা ব্যয় করলেই সজানো যায় ব্যবস্থাপনা। নিজেরা না পারলে প্রাইভেট বাহিনীর কাছে ছেড়ে দেয়া যায় এর পরিচালনা। সৌদি বাদশারা বিধর্মী কাফেরদের বিনিয়োগ খাতের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইসরাইল সহ পৃথিবীর সব উন্নত দেশে তাদের রয়েছে পাহাড় সমান বিনিয়োগ। অথচ বাইরের বিনিয়োগ দিয়ে মিনার এ গণহত্যা সহজেই বন্ধ করা যায়।
শরিয়া আইনের রায় কার্যকর করতে গিয়ে প্রায় শুক্রবারই প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘাড় হতে মস্তক আলাদা করা হয় মরুর দেশ সৌদি আরবে। অপরাধ; হয় খুন নতুবা মাদক ব্যবসা। জানতে ইচ্ছা করে মিনার গণহত্যার জন্য সৌদি লম্পট রাজা-বাদশাহদের কি বিচারে আওতায় আনা বৈধ নয়?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:৪২