ইউকে বিডি নিউজ ২৪ এর প্রথম পাতায় আজকে একটি কলাম পড়লাম যেটা পরে না শেয়ার করে থাকতে পারলাম না , তাই শেয়ার করে দিলাম , আপনারাও দেখেন কেমন লাগে
-----------------------------------------------------------------------------
নিজের চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না আমি, আমার ফেসবুকে এই ভিডিও টি দেখার পর । এই কোন পৃথিবীতে আছি আমরা ??? আমি শাহবাগ বুঝি না আমি জামায়াত শিবির বুঝি না ,আমি আস্তিক নাস্তিক বুঝিনা আমি বুঝি আমরা মানুষ । কোনো একটি স্বাধীন দেশে এইভাবে পুলিশ মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে আমি এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিনা । আজকে যারা রাজাকার তাদেরকেও সরকার এভাবে গুলি করে মারছেনা । শুধু এতোটুকুই আজকে বলবো যারা এই হত্যাকান্ড সমর্থন করে কোনো যুক্তি দেখাতে চাচ্ছেন একদিন আপনার কোনো ভাই অথবা পরিচিত কেউ যখন এমন পরিস্থিতিতে পরবে তখন আপনাকেও অন্য অন্ধ রাজনৈতিক কর্মীরা এইরকম হত্যাকান্ডের পক্ষে যুক্তি দেখাবে । তখন আপনার আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না । আমরা কি পারিনা আমাদের রাজনৈতিক বেদাভেদ ভুলে গিয়ে মানুষ পরিচয়ে পরিচিত হতে ? আমার কাছে হিন্দু মুসলিম নাস্তিক আস্তিক রাজাকার এদের থেকেও বড় কথা হলো আমরা মানুষ । সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই । এর আগেও এই লিখাটি একটি জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছিল । কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের বাংলাদেশের বি টি আর সি থেকে থ্রেট আসার কারণে ২৪ ঘন্টাও লেখাটি স্থায়ী হতে পারেনি পত্রিকাটিতে । এবার আশা করি বি টি আর সির কোনো সমস্যা হবে না কারণ এই পত্রিকাটি বাংলাদেশে প্রকাশিত হয় না ।
আমরা কেউ কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করছিনা আজকে। খালি মুখ বুঝে চুপ করে নিরবে দেখে যাচ্ছি প্রত্যেকটা দলের তান্ডব বাংলাদেশে । দেখছিলাম বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সাংবাদিক কিভাবে তাদের নিজেদের দলগুলোর চাটুকারিতা করছেন। কিছু সাংবাদিক দেখলাম গোটাকয়েক নাস্তিকের জন্য হাজার হাজার মানুষকে নাস্তিক বলে ঘোষণা করে দিলেন। আমি নিজে কোরান হাদিস খুব বেশি না জানলেও সামান্য কিছু জানি । সেই সামান্য কিছু জানার মধ্যে আমি জেনেছিলাম কোনো মানুষকে নাস্তিক বলা যাবেনা ততক্ষণ যতক্ষণ সেই ব্যাক্তি নিজেকে সরাসরি নাস্তিক বলে ঘোষণা না দেয় । আর কোনো মানুষকে যদি কেউ কাফির নাস্তিক বলে গালি দেয় কিন্তু সে প্রকৃত পক্ষে নাস্তিক বা কাফির না ,তাহলে এটা কবিরা গুনাহ হবে । কিন্তু বাংলাদেশের এক পক্ষের সাংবাদিক ভাইয়েরা মনে হয় রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সবাইকেই নাস্তিক বানিয়ে ফেলছেন মাঝে মধ্যে ঠিক যেমনটি আমাদের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকের ঘৃণিত যুদ্ধ অপরাধীদেরকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন এক সময় তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য । আমাদের দেশে আমি দেখেছি রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সবকিছুই জায়েজ করে ফেলেন সবাই , কিন্তু তাই বলে ইসলাম নিয়ে এইরকম করাটা আমি মোটেও সমর্থন করি না । আবার বেশ কিছু সাংবাদিককে দেখলাম তারা তাদের পছন্দের দলের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলছে তাদের সবাইকে রাজাকার জঙ্গি পাকিস্তানি বানিয়ে রসালো খবর করছে । আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে একজন তথাকথিত সাংবাদিক আছেন যার আসল নাম আমি বলবোনা এখানে,যতদূর জানি তিনি একসময় বাম সংগঠনের ছাত্র নেতা ছিলেন আমার ভুলও হতে পারে । সেই তিনি এখন বাংলাদেশে মোটামোটি নিজেকে সাংবাদিক বলে দার করাতে পেরেছেন । এই সাংবাদিক তার ফেসবুকে লিখেছে পুলিশ ভাইয়েরা গুলি করো গুলি করো এদেরকে গুলি করে মেরে ফেলো । আর যদি তাও না পারো তাহলে পায়ের নিচে গুলি করে ছেড়ে দাও । এখন আমার প্রশ্ন হলো একজন সাংবাদিকের মুখের বক্তব্য যদি এই হয় তাহলে তার মতোন সাংবাদিকের কাছে আমি কি আশা করতে পারি । আসামী যতবড় অপরাধই করুক না কেন তাকে রাস্তায় গুলি করে মারার কথা কোনো সাংবাদিক বলতে পারে না। যখন সাংবাদিকরা এই সমস্ত অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবে তখন সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে কার কাছে যাবে ? সবসময় শুনে এসেছি মিডিয়ার কাছে সাধারণ জনগণ নিরাপদ কিন্তু এই সাংবাদিকের কথা শুনে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ এই সমস্ত হলুদ সাংবাদিকের কাছে মোটেও নিরাপদ নয় । যারা যুদ্ধ অপরাধ করেছে তাদের থেকে বড় অপরাধ আমাদের দেশে আছে বলে এখন আমি মনে করি না । সেই যুদ্ধ অপরাধীদেরকে পর্যন্ত এভাবে রাস্তায় গুলি মারা হচ্ছে না । এই ধরনের সাংবাদিক যখন মিডিয়া চালাবে তখন হলুদ রঙের সাংবাদিক যারা তারা পর্যন্ত অপমানিত হবে । হলুদ রঙের সাংবাদিকদেরও একটা রং আছে সেটা হলো হলুদ ,আর এই সংবাদিক্গুলোর কোনো রংই নেই বলে আমি মনে করি । আজকে আমার কাছে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে প্রত্যেকটা মিডিয়া প্রত্যেকটা সাংবাদিক তাদের নিজেদের দলের জন্য তাদের সততা বিসর্জন দিয়ে দলের অনৈতিক কর্মকান্ড কে বৈধতা দেয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে । আমি জানি এখনো কিছু সাংবাদিক আছেন বাংলাদেশে, যারা ভয়ে কোনো দলের পক্ষেই কথা বলতে পারছেন না । আপনাদের প্রতি আমার বিনীত অনোরুধ দয়া করে আপনারা এবার জেগে উঠুন । তা না হলে আজকে সমগ্র বাংলাদেশী সাংবাদিক ইতিহাসের পাতায় ঘৃণিত হয়ে থাকবে । সাংবাদিক হলো জাতির বিবেক । এই যদি হয় আজকে জাতির বিবেক তাহলে জাতি নিঃশেষ হয়ে যাবে অচিরেই । তাই আমি জাতির বিবেক্দেরকে বিনীত অনোরুধ করছি আপনারা জামায়াত ,রাজাকার,শিবির,আস্তিক,নাস্তিক,লিগ,বি এন পি ,এই গুলো বাদ দিয়ে জনগনের কথা চিন্তা করুন একটিবার ।
আজকে যেই মানুষটির জন্য লিখলাম আমি জানিনা সেই মানুষটির কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি নেই ,আমি জানি না সে আস্তিক নাকি নাস্তিক । আমি শধু এতটুকো জানি সে একজন মানুষ ছিল । আমি শুধু এতটুকু জানি একজন দুখিনি মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে এই সন্তানের জন্ম দিয়ে মা ভুলে গিয়েছিলেন প্রসবের যন্ত্রণা । সেই মা হয়তো আর কোনদিন তার সন্তানের মুখে মা বলে মধুর ডাকটি শুনতে পাবে না । মা হয়তো আজকে তার এই অভাগা সন্তানকে বলে ছিল বাবা আজকে কিন্তু বাসার বাইরে বের হবি না । কারণ মায়ের মন মনে হয় আগেই বুঝতে পেরেছিল যে আজকে তার সন্তানের জন্য বাইরে কোনো ভয়ঙ্কর বিপদ অপেক্ষা করছে । কিন্তু অবাধ্য ছেলেটি হয়তো মায়ের চোখ ফাকি দিয়ে বের হয়েছিল , কিন্তু সে কি করে জানবে যে আমাদের বাংলাদেশের পুলিশরা উপরের নির্দেশে সন্ত্রাসীদের থেকেও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে। এই পুলিশরা কোন মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছে সেটা আমার জানা নেই । তবে এটা নিশ্চিত তারা কোনো মানুষ হতে পারে না না না । আমি শুধু এতটুকু জানি সে কারো স্বামী ছিল যেই নারীটি হয়তো আর কোনদিন রঙিন কাপড় পড়তে পারবে না । নারীটি হয়তো আর কোনদিন পায়ে আলতা দিয়ে রাত্রি বেলায় হারিকেনের আলো জালিয়ে খাটের উপর বসে স্বামী আসার প্রহর গুনবে না । নারীটি হয়তো তার স্বামী হত্যার বিচারও পাবে না । আমি শুধু এতটুকু জানি সে হয়তো কোনো বোনের ভাই ছিল । যেই বোনটির বিয়ের খরচ হয়তো এই ভাইটিকেই যোগানোর কথা ছিল । আমি জানি না খরচ না যোগানোর জন্য এখন এই বোনটির বিয়ে ভেঙ্গে যাবে কিনা । জানিনা একবার বাঙালি মেয়ের বিয়ে ভাঙ্গলে অন্য কেউ তাকে বিয়ে করে কিনা আমাদের গ্রামীন সমাজে ।
যেই পুলিশটি তাকে গুলি করে মারলো সেই পুলিশটিরকি খুব দরকার ছিল তাকে গুলি করা ? তাকে কি গুলি না করলে ওই পুলিশটির চাকরি চলে যেত ? না হয় একটা চাকরি যেত তোর, কিন্তু তুই তোর চাকরি বাচানোর জন্য একজন মায়ের দশ মাস দশ দিনের যন্ত্রণার ফসল বুকের পাজর ছেড়া ধনকে কেড়ে নিবি ?একজন রঙিন শাড়ি পরা নারীর শরীরে সাদা শাড়ি তোলে দিবি ? বিয়ের পিরিতে বসতে যাওয়া একজন বোনের বিয়ে ভেঙ্গে দিবি ? আমি জানি আমার এই প্রশ্ন গুলোর জবাব কোনো পুলিশ দিতে পারবে না । কারণ তারা সবাই যে আজকে জিম্মি আমাদের মহান পলিটিশিয়ানদের কাছে ।
যদিও কিছু মানুষ বলছেন পুলিশ তাকে আসল গুলি করে নাই এটা ছিল রাবার বুলেট । আবার কেউ বলছেন পুলিশের হাতে ছিল থ্রি নট থ্রি , কেউ বলছেন ছেলেটি ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে । যদি ধরেই নেই যে ছেলেটি মরে নাই তাকে রাবার বুলেট মেরেছে পুলিশ । এখন প্রশ্ন হলো পুলিশ রাবার বুলেট কখন মারতে পারে সাধারণ জনগনের উপর ? আমার ক্ষুদ্র নলেজে যতটুকু বুঝি সেটা হলো যখন মানুষজন আক্রমনাত্মক এবং চরম পর্যায়ে ধংসাত্মক কাজে লিপ্ত থাকে পুলিশ কোনো ভাবেই থামাতে পারছে না তখন রাবার বুলেট ,টিয়ারসেল, জল কামান এইসব ব্যাবহার করতে পারেন । কিন্তু এই ফুটেজটিতে আমরা যা দেখলাম ছেলেটি একটি রুমের ভেতরে ৩ থেকে ৪ জন পুলিশের হাতে বন্দী , তাকে পুলিশরা প্রহার করছে । তার মানে ছেলেটি এই মুহুর্তে আর কোনো ধংসাত্মক কাজ করতে পারবে না সে অলরেডি আটক পুলিশের হাতে । এই রকম অবস্থায় পুলিশ তাকে হাত কড়া পড়িয়ে বড় জোর থানায় নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তাকে কোনো অবস্থাতেই অরিজিনাল গুলি দুরের কথা রাবার বুলেটও মারতে পারবেন না । আশা করবো রাবার বুলেট বলে যেই মানুষগুলো যুক্তি দাড় করাচ্ছিলেন তারা আর এই যুক্তিটি দেখাবেন না । যদিও বাংলাদেশের খবরে বলা হয়েছে ছেলেটিকে গুলি কড়া হয়েছে।
আজকে যারাই একটু উচিত কথা বলছেন তারা হয়ে যাচ্ছেন রাজাকার যুদ্ধ অপরাধী । আবার অন্য কোনো দলের কাছে ভারতের দালাল ইসলামের শত্রু ,নাস্তিক ইত্যাদি । বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ,এবি এম মুসা , অধ্যাপক আসিফ নজরুল হয়ে জান রাজাকার । রাজাকার অভিযোগে আসিফ নজরুলের অফিস রুমে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা । প্রবীন আইনজীবী রফিকুল ইসলামকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুই কার খালুরে উপাধি দিয়েছেন । আমি জানি এই লিখাটি যদি কোনো দলের স্বার্থে আঘাত হানে তাহলে ওই দলের সাপোর্টাররা আমাকে হয় রাজাকার বানাবে না হয় অন্য কোনো আরেকটি দলের সাপোর্টাররা ইসলামের শত্রু বানাবে আমাকে। কিন্তু আপনাদের জন্য দুঃখের সংবাদ হলো আমি এখন আর আপনাদের ওই সমস্ত উপাধিকে ভয় করি না। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ,এবি এম মুসা , অধ্যাপক আসিফ নজরুল যদি রাজাকার হয় তাহলে আমিও তাদের দলে নাম লিখতে চাই। আমি গর্ব করে বলতে চাই আমিও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ,এবি এম মুসা , অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মতো রাজাকার হয়েছি। আমিও প্রবীন আইনজীবী রফিকুল ইসলামের মতো মুই কার খালুরে হতে চাই । আমি সত্য কথা বলার কারণে যদি কেউ আমাকে বলিস আমি ইসলামের শত্রু,নাস্তিক , মুরতাদ তাহলে আমি সেই শত্রু হতে চাই সারা জীবন ।
আমি এই লিখাটি লিখতে গিয়ে নিজের চোখের পানিকে সংবরণ করতে পারছিলাম না । বার বার বুক ফেটে কান্না আসছিল নিজের দেশের এই করুন পরিস্থিতির কথা ভেবে এবং দেশের সাধারণ মানুষদের অসহায়ত্বের কথা ভেবে ।
আজকে অনেক কিছু বলতে চাচ্ছি কিন্তু বলতে পারছি না ,
লিখতে গিয়েও বার বার আটকে যাচ্ছি ..............
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৩৮