[একটি বাহিনীর প্রতি ঘৃনা ও বিষোদ্গারী পোস্ট স্টিকি করা হল - আমি স্তম্ভিত! ব্যক্তিবিশেষের পরশ্রীকাতর, অবিবেচক মতামত থাকতেই পারে, কিন্তু ব্লগ কর্তৃপক্ষ তাতে হাত মিলাল!
মডারেশনের প্রতি ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি.
বিডিআর হত্যাকান্ডের পরে একজন ক্ষতিগ্রস্থ হিসাবে ব্লগ পড়ে আমার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল. আত্মপক্ষ সমর্থনে আমি আমার ধারাবাহিক প্রতিবাদ লিখেছিলাম. কিন্তু ব্লগে তখন আমি অচ্ছুত্ (under watch) ছিলাম, আমার লেখাগুলোর ব্লগ-আলো দেখার অধিকার ছিল না. ছয় মাসেরও অধিককাল পর ব্লগে আমার অচ্ছুত্-বন্দীত্ব ঘুচেছে (access to front page). আজ অন্যায্য স্টিকি পোস্টের প্রতিবাদে আমার ধারাবাহিক প্রতিবাদগুলো রিপোস্ট করছি.]
-----------------
Click This Link
আমি সামহোয়্যার ব্লগের নিয়মিত পাঠক না. অনেক দেরিতে শূন্য আরণ্যকের 'সেনাবাহিনীর কুকীর্তির লিষ্ট : আমাদের গোল্ড ফিশ মেমরীকে ব্লগে সংরক্ষন’' লেখাটি চোখে পড়ল. আর সেটি পড়তে গিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য এবং অনেকগুলো লিংকও পড়া হয়ে গেল. পড়ে মনে হল, বোবার শত্রু নাই কথাটি সত্য নয়. জাতি হিসাবে আমরা সম্ভবত দিনে দিনে নির্মম ও অমানবিক হয়ে উঠছি. তারও চেয়ে বেশি, অবিবেচক. একাত্তরের বর্বরতার শিকার আমরা মানবিকতায় শুদ্ধ হয়ে উঠব, তা না, আমরা নিজেরাই সেই মানসিকতায় নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছি. বহু আগে কলকাতার দেশ সাময়ীকিতে দু’শ বছর পূর্বে বাঙ্গালি জাতির চারিত্রিক বৈশিষ্টের ইতিহাস বা এ জাতীয় শিরোনামের একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ পড়েছিলাম. তাতে গবেষক তৎকালীন দলিলাদি ঘেঁটে অনেকগুলো নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্টের উল্লেখ করেছিলেন. যতটুকু মনে আছে, সেগুলোর অন্যতম ছিল মিথ্যাবাদিতা, দুর্বলের উপর অত্যাচার ও সবলের পদলেহিতা, ষড়যন্ত্রপ্রিয়তা এবং মামলাবাজি. মনে হয়, দিনে দিনে আমাদের জাতীয় চারিত্রিক বৈশিষ্টের উন্নতি নয়, অবক্ষয়ই বেশি ঘটছে. আত্মপক্ষ সমর্থনে দুর্বল (বরং অক্ষম, বোবা) সেনাবাহিনীর উপর ব্লগে কতিপয়ের বাক ও বক্তব্যের অত্যাচার নিষ্ঠুর ও অমানবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে. মন্দ গ্রহণে আমাদের দ্রুততা ও দক্ষতা অসাধারণ. এই ব্লগারা গোয়েবলসীয় প্রচারণায় (নি)দারুণ দক্ষতা অর্জন করেছেন. কেউ কেউ হুজুগে বাঙ্গালির সহজাত বৈশিষ্টে না বুঝেই তাতে তাল মিলিয়েছেন. এসব বিষোদ্গারে তারা হয়ত অনেক নিষ্ঠুর পরিতৃপ্তি বোধ করছেন, পরিণতি ভাবছেন না. আর এই ঘৃণা-উদগারী ব্লগগুলো তখনই লেখা, যখন পৃথিবীর ইতিহাসে সেনা-অফিসার হত্যার সংখ্যায় ও নির্মমতায় জঘন্যতম অপরাধটি আমাদের দেশে সংঘটিত হয়েছে, তাদের পরিবার অবরূদ্ধ নির্যাতনের এবং সহায়-সম্পত্তি লুণ্ঠন ও অগ্নি-সংযোগের শিকার হয়েছে. ষড়যন্ত্র ও মিউটিনির অপরাধতো আছেই. ঐ মুহুর্তে হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি উঠবে, সেটাই স্বাভাবিক. সেনা-ঘৃণক এই ব্লগারেরা সেই দূর্বল সময়ে নেমেছেন সিরিয়াল প্রচারণায়. কারও কারও ভাষা ও আক্রমণের বিষয় নিতান্ত অরুচিকর, গর্হিত. কেউ কেউ হত্যাকান্ডের বিচারের আগে বিদ্রোহীদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে সেনা-অফিসারদের বিচার আগে চেয়েছন. কেউ কেউ হত্যাকান্ডকে সমর্থন জানিয়ে তা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল বলে রায় দিয়েছেন. একজন নিহতের সংখ্যা কম হয়েছে, কমপক্ষে ১৫০০ হওয়া উচিত ছিল বলে আফসোস করেছেন (এমন আক্রমণাত্মক, হিংস্র মন্তব্য ব্লগের নীতিমালায় অনুমোদিত নয়, তবে আছে). এদেশে সেনাবাহিনীর কোন প্রয়োজন নাই, এমন (একচক্ষু) গবেষণাপত্রও লিখেছেন, সমর্থন করেছেন কেউ কেউ. যারা মাথাব্যাথার চিকিৎসা মাথা কেটে করতে চান, যারা সাবভার্টেড, যারা কুটতার্কিক – বর্তমান লেখাটি তাদের উদ্দেশ্যে নয়. যারা একটি দক্ষ ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী চান, যারা গঠণমূলক সমালোচনায় বিশ্বাসী, যারা বিদ্বেষী ও মতলবি প্রচারণায় বিভ্রান্ত - এই লেখাটি তাদের জন্য.
বিদ্বেষী এসব প্রচারণায় সেনাবাহিনীর কুকীর্তির দীর্ঘ তালিকা আছে, সংগত কারণেই বর্ণনা নেই, প্রমাণতো বহুদূর ! বিস্ময়কর, এরা নিরপেক্ষতা আর মানবতাবাদিতার শোর তুলে এসব নির্মম দাবিগুলো করেছেন. এসবের কিঞ্চিত সত্য; বাকিটুকু অতিরঞ্জনে, শ্রুতিকথন, আপ্তবাক্য ও ব্যক্তিগত ঘৃণার কাল্পনিক গালগল্পে মেশানো কুৎসাপিডিয়া. জবাব দিতে গেলে বর্ণনার প্রয়োজন হয়; সব কুৎসার জবাব দিতে গেলে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে, বিশেষ করে ব্লগে, আর তার প্রয়োজনও নাই. আমি তাই কয়েকটির জবাব দেব, ধারাবাহিকভাবে.