৭. * শূন্য আরণ্যকের তালিকা: ‘'জাতিসংঘ শান্তি মিশনের টাকার হিসাব'’.
কী হিসাব চাওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়. জাতিসংঘ শান্তি মিশনে চাকরি করে জাতিসংঘ থেকে ভাতা পাওয়ায় দোষ কোথায়? কাকেই বা কেন হিসাব দিতে হবে? অবগতির জন্য জানাতে চাই, সেনা সদস্যের প্রাপ্য ভাতা থেকে ২০% কেটে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়, যে নিয়মটি আর কোন দেশে নাই, এমন কি আমাদের পুলিস বাহিনীতেও নাই. আর এই নিয়মটি সেনাবাহিনীর স্বউদ্যোগে চালু হয়েছে. বৈধপথে আসা এ অর্থ থেকে সরকার বিপুল রাজস্ব পাচ্ছে.
পাশাপাশি, রিইম্বার্সমেন্ট থেকে আরও বিশাল আয়. জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ‘'ড্রাই লিজ'’ ও '‘ওয়েট লিজ'’ বলে দুই ধরণের চুক্তি আছে. ড্রাই লিজে অস্ত্র, গাড়ি, সরঞ্জাম, আবাসন, খাওয়াদাওয়া সবকিছুর সরবরাহকারি জাতিসংঘ. আর যখন ঐসব লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা কোন দেশ নিজেরাই করে, সেটা ওয়েট লিজ. এ ক্ষেত্রে অস্ত্র, গাড়ি, সরঞ্জাম, আবাসন ইত্যাদির জন্য অকল্পনীয় হারে রিইম্বার্সমেন্টের অর্থ পরিশোধ করা হয় ঐ দেশকে. উদাহরণস্বরূপ, একটি জিপের মূল্য তিন বছর রিইম্বার্সমেন্ট পেলেই উঠে যায়. দেশে ফিরে ঐ জিপটি আরও ৮-১০ বছর অনায়াসে চলে. বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাওয়াদাওয়া ছাড়া বরাবর অন্যান্য ক্ষেত্রে ওয়েট লিজে থাকে. আফ্রিকার তীব্র গরমে জাতিসংঘের এয়ারকন্ডিশন্ড আবাসন ও গাড়ি উপেক্ষা করে সেনা সদস্যেরা তাবুতে, অস্থায়ী টিনের ঘরে, এসিহীন গাড়িতে দগ্ধ হয় এতটুকু নিজের জন্য নয় কিংবা, সেনা-অফিসাররা ব্যক্তিগত কমপিউটার অফিসে রেখে সরকারি বলে চালিয়ে দেয়ার মত অসততা দেখায় শধুমাত্র তাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশকে কিছু ডলার দেয়ার জন্য (দেশ রিইম্বার্সমেন্ট না পেলেও তাদের ভাতা প্রাপ্তির কোন কমবেশি হবে না).
মনে আছে ২০০১ সালে নতুন সরকার আসার পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যখন আশন্কাজনক ছিল, তখন রেমিটেন্সের প্রবাহ হু হু করে বেড়ে গিয়ে সরকারকে স্বস্থি দিয়েছিল? হ্যা, তখনই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বন্ধপ্রায় জাতিসংঘ শান্তি মিশনে হু হু করে যাওয়া শুরু করেছে. রেমিটেন্সের প্রবাহে সেনাবাহিনীর অবদান কেউ বলে না, হয়ত তাতে অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হয়ে যাবে বলে, হয়ত বা অনুৎপাদনশীল বলে খোটা দেয়ার পথ বন্ধ হবে বলে, অথবা হয়ত অন্য কোন জঠিল সমীকরণে!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:১০