somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিডিআর ঘটনায় রাগইমনের বক্তব্যে একজন ক্ষতিগ্রস্থের প্রতিবাদ

২৩ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই ব্লগে অনেক দিন লগইন করা হয় না . ঢুকে বিডিআর ঘটনাকালীন রাগইমনের 'সবুজ সততা দেখানো শুরু হয়ে গেছে , আসল সত্য কি ?’ লেখাটি পড়া হল. আমি সততা বুঝি, সবুজ সততা বুঝি না, এর কোন সাহিত্যিক অর্থ থেকে থাকবে হয়ত ! তিনি লিখেছেন, '‘গল্প বদলে গেছে অনেকের . পিলখানা থেকে বেড়িয়ে আসা মাত্রই সকল নারী ও শিশুকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে দেয়া উচিত ছিল ... গেট থেকে বেড়িয়ে সকলে একবাক্যে স্বীকার করেছেন, কোন নারী ও শিশুকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়নি’'.

প্রথমত, সেখানে সকল মিডিয়া উপস্থিত ছিল, কেউ তাদের আটকায়নি .

দ্বিতীয়ত, শারীরিকভাবে অত্যাচার করা না-করার কোন প্রশ্ন করা হয়নি, করা হয়েছিল- তাদের সাথে ‘ভাল ব্যবহার’ করা হয়েছিল কিনা বিষয়ে .

তৃতীয়ত, সকলে একবাক্যে স্বীকার করেননি, সকলকে প্রশ্নও করা হয়নি, শধু প্রশ্নকৃতদের কেউ কেউ স্বীকার করেছিলেন . [এখানে আমি ঐ সময়ে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার জন্য কতিপয় অসংবেদনশীল, নির্বোধ টিভি রিপোর্টারের কান্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলছি].

নরক থেকে বেড়িয়ে ট্রমা-আক্রান্ত নারী ও শিশুরা তদের ঘনিষ্টজনদের খোঁজ নেবার, নিজে বেঁচে যাওয়ার ঘোর ও স্বজন হারানোর বিহ্বলতা কাটানোর এতটুকু অবকাশ পাবে না, যা যা সত্য তখনি মিডিয়ায় বলে যেতে হবে, পরে বানিয়ে গল্প বলবেন তা হবে না - – এমন দাবি মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন কারও হতে পারে ভাবতে কষ্ট হয় . ঐ সময় কারও পক্ষে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে বক্তব্য দেয়া সম্ভব নয়, মিডিয়ায়তো নয়ই . আমি জানিনা তিনি সচেতন নাকি অসচেতভাবে বিডিআর অপরাধীদের ইমডেমনিটি দেয়ার প্রচারণায় নেমেছেন .

নারী ও শিশুরা মিডিয়ায় তখন যেমন কিছু বলেনি, এখনও না . বললে বা বলাতে পারলে কারও হয়তো স্যাডিস্টিক সুখবোধ হতো, কিন্তু বাস্তবে সে বলা আমাদের রক্ষণশীল সমাজে বর্তমান অবস্থায় সম্ভব হবে না . তিনি অতি-প্রগতিবাদী হতে পারেন, সবাই নন, সে জন্য তারা অপরাধীও নন . তারা সামাজিক ট্যাবু মেনে চলেন . তারা হয়ত একান্তে স্বামীকে বলবেন, হয়ত মা-বোন-ভাবিকে এবং নিরালে কাঁদবেন . অথবা হয়ত বলবেনই না . হয়ত মানসিক ভারসাম্য হারাবেন, অকারণে আৎকে উঠবেন . বিষয়টি নিয়ে একবার সাধারণ মানুষের অনুভূতি নিয়ে ভাবলেই যথেষ্ট হয়, মানবতাবাদীর তকমা প্রয়োজন নেই !

রাগইমন বলেছেন, '‘যুক্তি এবং অভিজ্ঞতা বলে, এই রকম হওয়ার কথাও না'

তার ‘'যুক্তি'’ বুঝলাম, '‘অভিজ্ঞতা’' বুঝা হল না . সে অভিজ্ঞতা ভিকটিমের, ক্রিমিনালের, নাকি তৃতীয় পক্ষের ? অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে আমাদের পক্ষে সে অভিজ্ঞতার আলোকে বিষয়টিকে হয়ত তার মত করে বুঝা সহজ হত . সে অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে একটা স্পর্শকাতর বিষয় সামনে এনে কয়েক ঘন্টার মধ্যে বক্তব্য ফিরিয়ে নিলেন, কিন্তু নারী ও শিশুদের কাছে ক্ষমা চাইলেন না . তাহলে ততক্ষণ গলাবাজি করলেন কেন ? কী মতলব তার ? ধর্ষণ-তত্ত্ব প্রচার করা ? কই, মিডিয়াতে তো কেউ এখনও বলেনি যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন !

জনৈকের পোস্টের জবাব দিতে গিয়ে রাগইমন বলেছেন, ‘'কিছুক্ষন আগে নিজের কাজিনের কথা জেনেছি । আর শেষ পর্যন্ত কিছু আই উইটনেস পেয়েছি । …আমি নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিচ্ছি ,ধর্ষন ঘটেছে । আমার আগের সকল বক্তব্য ফিরিয়ে নিলাম’ ।'

২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা, ধর্ষণ-তত্ত্ব ছড়ালেন ২৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে, আর কাজিন ও কজন আই-উইটনেস পেয়েছেন ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে দশটায় ! সেই কাজিন আর কজন আই-উইটনেসদের বিদ্রোহী বিডিআর সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা আমার কাছে প্রবল হয়ে দেখা দিচ্ছে . নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সহযোগী ছাড়া আর কারও চাক্ষুষ করার যুক্তগ্রাহ্য কারণ নাই . তিনি নিজে প্রতিরক্ষাবাহিনীতে জন্মেছেন বলে দাবি করেছেন,– সে জন্ম বিডিআর ঘটনার ভিকটিম নাকি বিদ্রোহী পক্ষে ? তার কাজিন আর আই-উইটনেসরা কোন পক্ষে ?

রাগইমনকে বলছি, পক্ষ পরিস্কার করেই বক্তব্য দেয়া উচিত . নিজের পক্ষ পরিস্কার করে আত্মপক্ষ নিন, সৎ সাহসের পরিচয় দিন . বর্ণচোরা নিরপেক্ষ আর ভন্ড মানবতাবাদী সেজে বিজ্ঞের মত বক্তব্য রাখা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সামিল . অনুরোধ, বিবেক ও চেতনার কাছে দায়বদ্ধ হোন . আপনার বোধদয় কামনা করি .

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:০৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×