মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের একেবারে গোড়ায়, যেখানে অনেক উপর থেকে পানি সজোরে পড়ছে। সেখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানিতে আমি দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানিতে আমি দাঁড়িয়ে আছি। চোখে প্রচণ্ড বিমুগ্ধতা। আমার চারপাশে আরো অনেকেই পানিতে নেমেছে। আমরা মূলত সাঁতার কাটছি। এখন গ্রীষ্মকাল। শীতকালে পানি আরো অনেক বেশি ঠাণ্ডা থাকে। আর বর্ষাকালে পানির প্রবাহ থাকে অনেক বেশি। আজ তিনদিন হলো আমরা ভ্রমণে বের হয়েছি। এর মধ্যে অনেক ঘটনার অবতারণা হয়েছে।
আমরা আট বন্ধু একটি মাইক্রো ভাড়া নিয়ে গাদাগাদি করে এসেছি। আমি ভাবছি গত কয়েকদিনের কথা। মাইক্রো ভাড়া করতে গিয়েছিলাম মুক্তাঙ্গনের স্ট্যান্ডে। এক সপ্তাহেমার জন্য শুধু বডি ভাড়া। তেল, গ্যাস ও রাস্তার
খরচ আমরা বহন করব। আড়াই হাজার টাকার কমে কেউ রাজি হচ্ছিল না। হতাশ হয়ে আমরা দুই বন্ধু ফিরে আসছিলাম। পিছন থেকে ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। সুদর্শন এক তরুণ এগিয়ে এল। হ্যালো ব্রাদার, আমি নীল, একটি ভার্সিটিতে পড়ি। আমার একটি গাড়ি আছে। মাঝে মাঝে ভাড়া দেই, আবার নিজেও ব্যবহার করি। আমরা একটু আশার আলো দেখলাম। বললাম ভাই আমরাও ছাত্র। আপনি কত রাখবেন? নীল বলল, ভাই আমি এক দাম দুই হাজার টাকা পার ডে রাখব। ড্রাইভারকে কিছু করতে হবে না। সে নিজের ব্যবস্থা নিজে করবে। রাতে গাড়ি তার দায়িত্বে থাকবে। ভাড়ার বাইরে প্রতিদিন তার খরচ হিসেবে তাকে দুশ’ করে টাকা দিবেন।
ইমন বলল ঠিক আছে ভাই। আপনার কী মডেলের গাড়ি একটু দেখা যাবে?
নীল জানাল, আমি স্ট্যান্ডে কোন গাড়ি রাখি না। এদেরকে কোনো চাঁদাও দিই না। তাছাড়া আমার গাড়িটার মডেল আপনারা চিনবেন না। তবে বেশ আরামদায়ক হবে। ঠিকানা আর মোবাইল নাম্বার দিয়ে যান। ড্রাইভার গিয়ে গাড়ি দেখিয়ে আনবে।
শুরুটা হয়েছিল এভাবে। যাইহোক যেদিন এমন শুরু করি, খুব ভোরে রওয়ানা হলাম। ব্যাগ ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র গাড়িতে উঠিয়ে ড্রাইভার আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ভাইয়া আমার গাড়িটি এক লিটার গ্যাসে কত কিলো যেতে পারবে? আপনার কোন ধারণা আছে?
এই ফাঁকে তার গাড়িটির বর্ণনা দিই। গাড়ির মডেল লেখা পেছনের উপরে ডান কর্নারে। মডেলের নাম ট্রাইবো নিয়াটা। দেখতে অনেকটা নোয়া গাড়ির মত। তবে ভিতরে অনেক প্রশস্ত। সীটগুলো খুবই আরামদায়ক। সরাসরি কোনো এসি নেই। কিন্তু ভিতরে তাপমাত্রা সব সময় বিশ ডিগ্রি থাকে। এ বিষয়টি অবশ্য পরে বুঝেছি। গাড়ির গ্যাসের হিসাব আমি খুব একটা বুঝি না। তানভীর বলল, আপনার গাড়িটাতো নোয়া গাড়ির মতই। এগুলো মনে হয় প্রতি লিটার গ্যাসে পনেরো কিলো যেতে পারে। জাসির বলল, এটাতো নতুন ও টিপটপ মনে হচ্ছে। তাহলে প্রতি লিটারে আরও বেশি যাওয়ার কথা। ড্রাইভার আব্দুল্লাহ বলে উঠল, ঐ ভাইয়ার কথা ঠিকই আছে। এই গাড়ি এভারেজ প্রতি লিটারে ১৫/১৬ কিলো যায়। কথা বলতে বলতে ড্রাইভার তার মোবাইলে গুগল ম্যাপ অন করল। সে বলল, দেখেন আপনার যাওয়ার স্পটগুলো মার্ক করে সর্বনিম্ন দূরত্ব বের হয়েছে চারশ’ কি. মি. যাওয়া-আসা সর্বমোট আটশ’ কি. মি.। পনেরো কিলো হিসেবে ধরে আপনারা তেপ্পান্ন লিটার গ্যাসের পয়সা দেবেন ড্রাইভারকে জেরা করে জানা গেল তার গাড়ী বিকল্প জ্বালানিতে চলে। বিকল্প জ্বালানির ধরন কী বুঝা গেল না। আমি অনেক ঔৎসুক্য দেখানোয় ড্রাইভার বনেট খুলে ছোট এন্টিনার মতো একটি জিনিস দেখাল। এন্টিনা দিয়ে কীভাবে জ্বালানির কাজ হয় বুঝতে পারলাম না। আমাদের চাপাচাপিতে সিদ্ধান্ত হলো প্রতি বিশ কি. মি.-এর জন্য এক লিটার হিসেবে চল্লিশ লিটার গ্যাসের জন্য বারশ’ত টাকা দেয়া হবে। আর গাড়ীর ভাড়াতো আছে।
গাড়ি যথাসময়ে ছাড়লো ধানমন্ডি জাসিরদের বাসার সামনে থেকে। গাড়িতে উঠেই আমরা আড্ডায় মেতে উঠলাম। অনেকক্ষণ পর খেয়াল হল গাড়ি মনে হয় থেমে আছে। বাইরে ভালোমতো তাকালাম। এসি গাড়ি, গ্লাস সব লাগানো। কিন্তু গ্লাসগুলো অতিরিক্ত
ঝাপসা দেখাচ্ছে। বাইরের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি সোজা রাস্তা। গাড়ি চলছে খুব দ্রুত। প্রচুর গাড়ি রাস্তায়। কিন্তু আমাদের গাড়ী সাবলীল গতিতে এগিয়ে চলছে। হঠাৎ কেনো যেন মনে হলো দক্ষ কোনো লোক কম্পিউটারে গাড়ির গেইম খেলছে। মোবাইল বের করে নেভিগেশন করার চেষ্টা করলাম। অন্তত কোথায় আছি জানা দরকার। কিন্তু কোনভাবেই ডাটা আসছিল না। ড্রাইভার জিজ্ঞেস করল, ভাই নাস্তা কোথায় করবেন? আলভী সবার আগেই বলে দিল ভৈরবে হোটেল সালাদিয়াতে। ইমনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ। এ এলাকার অনেক কিছুই সে চেনে। সে বলল, হোটেল সালাদিয়া কোথায়? নতুন হয়েছে নাকি? আমি যে চিনছি না। ব্যাপারটা আমি জানি তাই বললাম, এটি একটি প্রাচীন ভাঙাচোরা অভিজাত হোটেল। এর কোনো নাম নেই। নামটি আলভী আবিষ্কার করেছে। তবে কাবাবের মান ভাল, দামও কম। সবাই শেষে একমত হলো সালাদিয়াতে নাস্তা হবে। ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা এখন কোথায় আছি? ড্রাইভার বলল এই যে, আমরা ভৈরব ব্রীজের উপরে আছি। প্রায় তখনই ছোট একটি ঝাঁকুনির মতো লাগল। আমরাও দেখলাম ব্রীজের উপরেই আছি। ইমন বলল টোল দিলাম না। টোল প্লাজা পার হলাম কখন?
ড্রাইভার বলল, আপনারা মনে হয় খেয়াল করেননি। তাছাড়া যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার পার হলাম যখন তখনও তো আপনারা খেয়াল করেননি। জাসির বলল, আচ্ছা ভাই এখন সালাদিয়া চলেন। ভৈরব গিয়ে সকালের নাস্তা সারলাম। নাস্তা শেষে গাড়িতে উঠতে যাব। ড্রাইভার গাড়ীর কাছে নেই। একটি চাকায় হাওয়া কম মনে হচ্ছিল। হাত দিয়ে চাপ দিলাম। বাতাস খুবই কম। তার উপর চাকা ঠাণ্ডা, অর্থাৎ নরমাল। অথচ দীর্ঘপথ চলে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই চাকাটি গরম থাকার কথা। গাড়িতে উঠলাম, গাড়ি ছাড়ল আবার গল্পে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, বিষয়টি তখন ভুলে গেলাম।
এই কী ভাবছিস? এই বলে নাবিল ছোট একটি ধাক্কা দিল। নাবিলের কথার দাপটে কল্পনা হতে বাস্তবে ফিরলাম। মাধবকুণ্ড হতে যখন গাড়ীতে উঠেছি তখন সন্ধ্যা বিদায় নিয়ে অন্ধকার রাজত্ব চালাচ্ছে। ড্রাইভারকে জানানো হলো বিয়ানীবাজার চলেন। গাড়ি আস্তে আস্তে চলছে। কিন্তু কোনো ঝাঁকুনি নেই। আগেই দেখেছি রাস্তা খুবই এবড়ো থেবড়ো। ড্রাইভার বললো বিয়ানীবাজার কোথায় যাব?
হামিদ জবাব দিল, আমার মামার বাড়ি।
ড্রাইভার তার মোবাইল এগিয়ে দিয়ে বলল, আমার মোবাইল থেকে একটি কল দিন, আমি কথা বলব।
হামিদ রিং দিয়ে আগে নিজে কথা বলল। মামা জানাল এত দেরি করলি কেন? এখানে আসতে অনেক রাত হয়ে যাবে। তাছাড়া রাস্তার অবস্থা ভালো নয়। আজকাল প্রায়ই রাতে ডাকাতি হয়।
আচ্ছা মামা, তুমি চিন্তা করো না। আমাদের ড্রাইভারের সাথে কথা বল।
ড্রাইভার সালাম দিল। তারপর জিজ্ঞেস করল, আপনি এখন কোথায় আছেন, বাড়িতে? আচ্ছা আমরা কি ওখানেই আসব? ঠিক আছে মামা, আপনার বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৬০ কি. মি.। আমরা চল্লিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাব।
এদিকে আমাদের অবস্থা তখন শোচনীয়। রাস্তায় ডাকাতির খবর শুনে ডালিম কাঁপতে লাগল। সে বলল, কী ভুল যে করলাম। দাদী আমাকে অনেক নিষেধ করেছিল। নাহিদ তো রীতিমত কাঁদতে লাগল।
আমার অবস্থাও যে ভাল তা নয়। ছোট- বেলায় ডাকাতির একটি ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। ঘটনা অনেক আগের না হলেও স্মৃতিকে আড়াল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। বাবার সাথে কুমিল্লা যাচ্ছিলাম। ফেরার পথে কোন গাড়ি না পেয়ে ট্রাকে করে ফিরছিলাম। পথে রাস্তায় গাছ ফেলে ট্রাক থামানো হলো। চারজন অস্ত্রধারী লোক ট্রাকে উঠল। অন্যলোকেরা রাস্তার গাছ সরিয়ে নিলে তারা ড্রাইভারকে ট্রাক চালানোর নির্দেশ দিল। রাস্তায় স্টেশনমতো এক জায়গায় আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে তারা ট্রাক নিয়ে চলে গেল।
যা হোক সামনের ডাকাতরা না জানি কেমন হয়। ড্রাইভার আব্দুল্লাহ বলল, আপনারা কি খুব ভয় পাচ্ছেন? আমি বললাম, না খুব মজা পাচ্ছি।
তাহলে প্রস্তুত হন আসল মজা নেয়ার জন্য। দশ মিনিটের মধ্যে সাক্ষাত পাবেন।
সবাই ঘড়ি ধরে বসে রইলাম। মোবাইল মানিব্যাগ যে যেভাবে পারলাম লুকানোর চেষ্টা করলাম। ঠিক দশ মিনিটের মাথায় সবাই দেখলাম রাস্তায় গাছ দিয়ে ব্যরিকেড দেয়া হয়েছে। নির্জন রাস্তায় অন্য কোনো গাড়ি নেই। সবাই দোয়া দরূদ পড়তে লাগলাম। ড্রাইভার হাসতে হাসতে বলল, মাত্র ছয়জন লোক। সবতো ফকীরের বেটা। ততক্ষণে গাড়ি ব্যারিকেটের কাছে চলে এসেছে। চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছুই ঘটল না। চোখ খুলে দেখলাম ব্যারিকেড পিছনে। ড্রাইভার বলল, সিটি মেয়র কে কে হতে চান? ত্বকী এতক্ষণে কথা বলল-ভাইরে তোর সাহস অনেক। কেমনে কী হলো বুঝলাম না। তবে মেয়র হতে চাই। কিন্তু কীভাবে?
ড্রাইভার অট্টহাসি দিয়ে বলল-ঐ লোকগুলোর পকেট পরিষ্কার করতে হবে।
এবার আর কেউ মেয়র হতে রাজি হলো না। ড্রাইভার গাড়ী ঘুরিয়ে ছুটাল ডাকাতদের দিকে। ডাকাতরা হতভম্ব অবস্থায় ছিল। গাড়িটি কীভাবে ব্যরিকেডের ভিতর দিয়ে ছায়ার মতো পার হয়ে গেল। নিশ্চয়ই ভূত হবে। এখন আবার তাদের দিকে ছুটে আসছে। দৌড়ানোর সাহস পর্যন্ত হলো না। সব ক’জন শুয়ে পড়ল। ড্রাইভার আব্দুল্লাহ নিচে নেমে যার কাছে যা পেল সব নিয়ে এল।
গাড়ি ছেড়ে দিয়ে বলল, আসলেই ফকির এরা ছয়জন লোক। মোবাইল পেলাম মাত্র দুটো, টাকা পেলাম সবমিলিয়ে আটাত্তর টাকা। আমরা কেউ কথা বললাম না।
সে আবার বলা শুরু করল। আচ্ছা আপনারা বলুনতো, এ জিনিসগুলো এখন কী করি।
রিয়াদ বলল, যাদের জিনিস তাদের ফেরত দিয়ে দিন। ড্রাইভার বজ্রকণ্ঠে বলল, না। ড্রাইভারের কণ্ঠের দৃঢ়তা আমাদের অবাক করল।
রাস্তায় আর তেমন কোনো কথা হলো না। মামার বাড়িতে পৌঁছে দ্রুত খাওয়ার পর্ব সেরে যে যেখানে জায়গা পেলাম, মানে যার ব্যবস্থা যেখানে হলো ঘুমিয়ে পড়লাম। খুব ভোরে উঠে জাফলং রওয়ানা দেয়ার কথা।
আমার সাথে হামিদ ঘুমিয়েছিল। রাত তখন গভীর। কে যেন হামিদকে নিচু স্বরে ডাকছে। আমি উঠে পড়লাম। হামিদও উঠল। ঘড়ি দেখলাম, রাত তিনটা। হামিদের মামা ভয়ে কাঁপছে। হামিদ বলল কী হলো মামা? মামার মুখে কথা বের হচ্ছে না। শুধু বললেন ড্রাইভার কোনো মানুষ নয় অন্য কিছু। আমি বললাম কী হয়েছে মামা? তিনি দুইজনকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে গেলেন। গাড়ীর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। মুখে আঙুল দিয়ে ইশারা করলেন কোনো কথা বলা যাবে না। গাড়ীর গ্লাসগুলো ঘোলা হয়ে আছে, ভেতরে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এমনকি সামনের গ্লাসও ঘোলাটে। পেছনের গ্লাসের এক কোণায় ছোট একটি ভাঙা ফাঁকা আছে। তিনি ইশারায় বললেন, ওখান দিয়ে ভিতরে দেখো। প্রথমে হামিদ দেখল। তারপর আমি দেখলাম।
মাঝখানের সারিতে শুয়ে আছে ছাগলের সমান লতাপাতা মতো একটি প্রাণী। বড় মার্বেলের মতো গোলাকার একটি বস্তু, নীল আলো জ্বলছে, নিভছে। প্রাণীটি শব্দ করে কথা বলছে।
আর সহ্য করতে পারলাম না। চোখ সরিয়ে নিলাম।
তিনজনই ঘরে ফিরে এসে বসলাম। মামা বলল তোরা কী ধরে নিয়ে এসেছিস? আমার তো মনে হয় কায়দা করে সবাইকে খেয়ে ফেলবে। হামিদ বললো, এখন কী করব মামা? আমি বললাম, মামা এখন গভীর রাত, কিছু করার দরকার নেই। সকাল হলে সবাইকে জানাব। আর ড্রাইভারের সাথে সরাসরি কথা বলব। মামা সিদ্ধান্ত দিলেন সকাল হোক তারপর দেখা যাবে। আমি একটু চিন্তা করি। তার আগে তোরা কাউকে বলবি না।
বাকি রাত আর ঘুম হলো না। ভোর হওয়ার আগেই হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। হামিদসহ বাইরে বের হলাম। দেখি উঠোনে প্রায় সবাই জড় হয়ে গেছে। আলোচনার বিষয় গাড়ী ও ড্রাইভার কিছুই নেই। ইমন ড্রাইভারের মোবাইলে কল করে যাচ্ছে, কিন্তু মোবাইল বন্ধ। হাঁপাতে হাঁপতে ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে এলেন মামা আব্দুল মতিন। তিনি বললেন এই বাবারা এই দিকে আসো। দেখো এটি কী? একটি কাগজের চিরকুটে স্পষ্ট অক্ষরে লেখা-“মামা আমার অজান্তে আপনি আমাকে দেখে ফেলেছেন। আর দু’জনকে ডেকে দেখিয়েছেন। এ অবস্থায় আমরা সাধারণত মৃত্যুদণ্ড দিয়ে থাকি। কিন্তু নীল ভাইয়ের অনুরোধে কর্তৃপক্ষ সে সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকে। আমি চলে গেলাম। আপনাদের অনেক কৌতূহল জাগবে। সব কৌতূহলের জবাব দিতে পারলাম না। আমরা বাইরের জগতের হীনুগণ কিছু বিষয়ে অগ্রসর হয়েছি বটে। তবে সার্বিক বিষয়ে মূল্যায়ন করলে পৃথিবীর মানুষই শ্রেষ্ঠ।
জোরে শব্দ করে সবাইকে শোনালাম। বিস্ময়ে সবাই হতবাক। ভ্রমণের চিন্তা মাথা থেকে চলে গেল। হামিদের মামার বাড়িতে ঐ দিনটা সবাই বেড়ালাম। পরের দিন বাসে করে ঢাকায় ফিরলাম।