‘তিনি এক ও অদ্বিতীয়।তাই কোন শরীক(প্রতিদ্বন্দ্বী) নেই’।প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অন্তরের কথা,তাই না?
আচ্ছা,উপরের কথাটি কি আসলেই সত্য? যদি তাই হইয়,তাহলে কেন এবং কিভাবে বহুলোক তার নির্দেশ অমান্য করে? কেন প্রতিটি লোক তার বর্শবতী নয়?কেন বহু মানুষ তাকে বাদ দিয়ে সাকার ভগবানের পূজা করে? কেন শত শত লোক তার অস্তিত্ব পর্যন্ত অস্বীকার করে?কেন? কিভাবে?
তবে উত্তরটা খোঁজার একটু চেষ্টা করা যাক।
এই সমগ্র বিশ্বজগৎ ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন-বিশ্বাসীরা তাই বলে।তাহলে তিনি নিজেই সবকিছুর পরিচালক!এখন কথা হচ্ছে তিনি কি দক্ষ পরিচালক না অদক্ষ? অবশ্যই দক্ষ-এটাইতো বিশ্বাসীদের উত্তর হওয়া উচিৎ!
আচ্ছা,তার দক্ষতার নমুনা দেখা যাক!তিনি যুগে যুগে তার প্রতিনিধিদের তার বাণী হাতে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন যেন তারা পৃথিবীকে সঠিক পথে পরিচালনা করেন,শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন।তারা কতটুকু তা পেরেছেন?আজকের পৃথিবীর দিকে তাকালেই বোঝা যায় তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি।সর্বশেষ ১৪০০ বছর আগে তার প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মদ পৃথিবীতে শান্তির বাণী নিয়ে আসেন।তার পরবর্তী ১৪০০ বছরেও কিন্তু তার উপর অবতীর্ণ ধর্ম পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।প্রথমে তারা অন্য জাতিগুলোকে নিগৃহীত করেছেন।আজ একই ভাবে তারা নিগৃহীত হচ্ছেন।শান্তি তাহলে কোথায়?
গত দুই তিন হাজারের বছরের ইতিহাসে এমন কোন শতাব্দী নেই যখন পৃথিবীতে কোন যুদ্ধ হয়নি।এমন কোন সভ্যতা নেই যারা যুদ্ধ করেননি কিংবা যুদ্ধের স্বীকার হননি।আজও পৃথিবীতে তা চলছে এবং ভবিষ্যতেও তা চলবে।তাহলে পৃথিবীতে শান্তি আসবে কখন?আদৌ কি তা আসবে এই জরাজীর্ণ পৃথিবীতে?
বাস্তবিক এই পৃথিবীতে শান্তি কখনোই ছিল না।আচ্ছা,তাহলে যাদেরকে এই শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা কি সফল না ব্যর্থ?তারা অবশ্যই ব্যর্থ।আর এই ব্যর্থতার দায়ভার কার?যিনি তাদের এই দায়িত্ব দিয়েছেন তার।কারণ সঠিক কাজের জন্য সঠিক পাত্র নির্বাচন করতে পারেননি।এখানেই তার অদক্ষতা।কোন সেনা অফিসারের অধীনে যদি তার সৈন্যদল তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন তবে ঐ অফিসার কি ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন?তাহলে কোন যুক্তি বলে আমরা ঈশ্বরকে সুদক্ষ পরিচালক বলতে পারি?
এখন কথা হচ্ছে,এই অদক্ষতার পেছনে দায়ী কে?ধর্ম ব্যবসায়ীরা খুব সহজেইএই অদক্ষতাকে আড়াল করেন ‘শয়তান’ নামক প্রতি-শক্তির উল্লেখ করে।তাদের এই অযুহাতটুকু মেনে নিলে পরিস্থিতি কি দাঁড়ায় দেখাই যাক না!
ধহর্মমতে শয়তান ঈশ্বরের সৃষ্টি।কিন্তু ঘটনাচক্রে আজ সে ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বীর ভূমিকায় আবির্ভূত।কিভাবে?
ঈশ্বর চওয়া তার সৃষ্ট মানব জাতি শুধুমাত্র তারই উপাসনা করুক।তা তো ঠিকমতো হচ্ছেই না অনেক ক্ষেত্রে বরং উল্টোটাই হচ্ছে।
ঈশ্বর শয়তানকে নাকি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন যে সে তার সৃষ্টির একটি কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না।কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে শয়তানই নাকি মানুষের সকল অপকর্মের জন্য দায়ী।তাহলে তো একথা বলতেই হয়,শয়তান এ কাজে ঈশ্বরকে ব্যাপকভাবে টক্কর দিয়েছেন!
আর ঈশ্বর যাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তাকে আপনি কি তকমা দেবেন?প্রতিদ্বন্দ্বী নয় কি?যাকে চ্যালেঞ্জ জানানো যায় তার সবচেয়ে বড় উপাধিই তো হয় প্রতিদ্বন্দ্বী।বিশ্বাসীরা বলেন যে,একসময় এই টক্করবাজ শয়তান এতোই সফল হবেন যে,পৃথিবীতে আর একজনও থাকবে মহান শক্তিশালী ঈশ্বরের নাম জপ করার জন্য!
তাহলে কি প্রকারান্তে তারা এটাই স্বীকার করে নিচ্ছে না যে শয়তান একসময় মহা শক্তিধর ঈশ্বরের সাথে এই প্রতিযোগিতায় জিতে যাবে?
আচ্ছা,মহা শক্তিধর ‘অদ্বিতীয়’ ঈশ্বরের সাথে কারও প্রতিদ্বন্দীতা হতে পারে? আবার ঈশ্বর সেই প্রতিযোগিতায় পরাজিতও হতে পারেন তাহলে?
তাহলে তিনি মহাশক্তিধর ‘লা-শারিক’ হলেন কই!তিনি তো তাহলে অজেয় কিছু নন! তারও প্রতিদ্বন্দ্বী আছে এবং সেও কম শক্তিধর নয়!
তাহলে ঈশ্বরের মহা শক্তিতে আস্থা জ্ঞাপন করি কি করে?কি করেই বা তাকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বলে মেনে নেই?অথবা,কি করেই বা তাকে মেনে নেই?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:১৩