শুধু ঢাকা নয়, বাংলাদেশের প্রায় সকল মসজিদের এই একই চিত্র। আমার প্রশ্ন হল মসজিদ আল্লাহ্র ঘর ইবাদতের স্থান সব ঠিক আছে। সেখানে কেউ দিবা ঘুম দিতে পারবে না এটা গ্রহণ যোগ্য (যদিও প্রায় প্রতিটি মসজিদেই গিয়ে দেখা যায় কিছু লোক অঘোরে ঘুমাচ্ছে)।
অথচ মসজিদের টয়লেট এবং পানি সকলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও সেটা উন্মুক্ত থাকে কেবল মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের জন্য।
কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে যৌক্তিক অযৌক্তিক হাজারটা উত্তর শোনা যাবে। আমি সে তর্কে না গিয়ে বলব, মসজিদের শৌচাগার এবং পানি যদি সকলের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব নাই হয় তাহলে নিশ্চয়ই সকলের দান গ্রহণ করাটাও সমীচীন নয়? অতএব এবার দানবাক্সে লিখে দিন কেবলমাত্র এই মসজিদের মুসল্লিদের দানই গ্রহণযোগ্য।
সেটা কি আপনারা পারবেন? আছে সে কি সৎসাহস ?
যদি তা না পারেন, যদি সেই সৎ সাহস না থাকে তাহলে মানবিক হন। মসজিদের শৌচাগার উন্মুক্ত করার সাথে মসজিদের পবিত্রতার কোন সম্পর্ক নেই। বরং সেটাই শোভন।
আমাদের ছোট দেশ বিশাল জনগোষ্ঠী তার উপরে শহরগুলোতে জনসংখ্যার চাপ অনেক বেশী। শহর গুলোতে প্রতিদিন নানা কাজে বাইরে থেকে মানুষ প্রবেশ করেন বেশির ভাগ লোকই প্রতিদিন এসে প্রতিদিন ফিরে যান। এর বাইরেও শহরের বাসিন্দারাও যারা প্রতিদিন বাইরে বের হন তাঁরাও যে কোন সময় যে কোন স্থানে শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারেন। কিন্তু আমাদের শহরগুলোতে পর্যাপ্ত গন শৌচাগার নেই আর তা করা সম্ভবও নয়। কিন্তু এই সমস্যার বিপরীতে এত সংখ্যক মসজিদ রয়েছে যে প্রতিটি মসজিদের শৌচাগার উন্মুক্ত করে দিলে খুব সহজেই তাদের এই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত । প্রয়োজন কেবল স্বদিচ্ছা, মানবিকতা আর সুষ্ঠু পরিকল্পনা।
পূনশ্চঃ কয়েক মাস আগে সিরাজগঞ্জ শহরে গিয়ে দুপুর আড়াইটায় শহরের মধ্যে দুটি মসজিদ ঘুড়ে ওজু করতে না পেরে নামাজ পরতে পারিনি পরে ওখানকার বড় মসজিদে গিয়ে নামাজ পরি। শৌচাগার ব্যবহার তো দূরের কথা নামাজের ওয়াক্ত থাকতেই শৌচাগার এমনকি মসজিদ্গুলো পর্যন্ত আঁটকে দেয়া হয়! এ সব মসজিদ কমিটির সদস্যদের কি মাথায় গন্ডগোল আছে নাকি সেটাই বুঝতে পারি না।
মসজিদের খেদমতে ইমাম, মোয়াজ্জেন ছাড়াও প্রতিটি মসজিদে খাদেম আছে। তাদেরকে দ্বায়িত্ব দিন। মসজিদ ফজর থেকে শুরু করে এশার ওয়াক্ত পর্যন্ত খোলা রাখুন। মসজিদকে শো পিছ বানিয়ে রেখে কোন লাভ নেই। যে কেউ যে কোন সময়ে ইবাদতের জন্য আসতে পারবেন এর বাইরেও যে কোন অত্যাবশ্যকিয় প্রয়োজনে আসতে পারবেন সেটা নিশ্চিত করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২২ বিকাল ৪:৫২