‘কান্না’ মানুষের আবেগ প্রকাশের একটি কার্যকরী ভাষা। দুঃখ-কষ্ট পেলে মানুষ কাঁদে তেমনি অতি সুখের আবেশেও কান্না পায় । অন্যের কান্না দেখলেও অনেক সময় কান্না আসে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সুখের সময়ও মানুষ কাঁদে। যেভাবেই কাঁদুক, এই কান্না শরীরের জন্য ভালো। কারণ কান্নায় শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে।
প্রথমেই কান্না বা চোখের পানির উপাদানগুলো সম্পর্কে জেনে নিই
চোখের পানির স্বাদ নোনতা মনে হলেও এই পানির অনেক গুন আছে । এতে প্রোল্যাক্টিন হরমোন , আড্রিনো-করটিকট্রপপিক হরমোন , লিউ-এয়ঙ্কাফিলিন এবং মিনারেল হিসাবে পটাসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ বিদ্যমান বিশেষ করে লাইসোজাইম সহ আর অনেক ধরনের প্রোটিনের অস্তিত্ব আছে , যদি ও আর রিসার্চের প্রয়োজন —!! এই সব উপাদান সমুহ অজস্র চিকন নালী বেয়ে গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত রস নাকের পাশের কোণায় এসে জমে। সেখানে থাকে লেকরিমাল সেক বা অশ্রু থলিতে জমা হয়।এইসব গ্রন্থি হতে পানির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে ব্রেইনের মুক্ত কেন্দ্র হতে আগত কিছু স্নায়ু বার্তা।
এবার জেনে নেয়া যাক কান্নার কয়েকটি উপকারিতা-
স্ট্রেস এবং টেনশন দূর করে
চোখের পানির সঙ্গে আমাদের শরীরের ইমোশান হরমোন ও ট্রেস সৃষ্টিকারী টক্সিন বেরিয়ে যায়। কান্না স্ট্রেস, টেনশন দূর করে মন ভালো করে দিয়ে থাকে। ডা. ফ্রে’র মতে “আমরা সাধারণত বড়দের কাঁদতে নিষেধ করে থাকি, কিন্তু এটি আমাদের করা উচিত নয়। কারণ এটি স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। আর স্ট্রেস আমাদের হার্ট, মস্তিষ্কের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।”
রক্তচাপ কমায়
আগেই বলা হয়েছে, স্ট্রেস আমাদের হার্ট, মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলে। আর কান্না মাধ্যমে ট্রেস হরমোন শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে টেনশনে কমে ও হাইপার টেনশন হয় না।
জীবাণু দূর করে
চোখে ধুলোবালিসহ নানা ধরণের ময়লা বিভিন্ন সময়ে পড়ে বা পড়তে পারে। এই সব ময়লা ধুয়ে পরিষ্কার করাই হল চোখের পানির প্রথম কাজ। চোখে ময়লাই কেবল পরে না বরং উড়ে এসে জুড়ে বসার ইচ্ছা নিয়ে আসে নানা রোগ জীবাণু। এ রোগ জীবাণু যেন চোখের ক্ষতি করতে না পারে বা চোখের মধ্য দিয়ে দেহে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য চোখে রয়েছে ল্যাক্টফেরিন নামের জীবাণু নাশক উপাদানসহ আরও জীবাণু নাশক উপাদান।
এ ছাড়া চোখের পানিতে রয়েছে এন্টি বডি। এই এন্টি বডিও জীবাণু প্রতিহত করে।
মন ভালো করতে
কান্না মনের কষ্ট দূর করে মন হালকা করে থাকে। আবেগপ্রবণ কান্নাতে এনডোরফিন নামক উপাদান নিঃসৃত হয় যা দুশ্চিন্তা দূর করে থাকে। তাই মন খারাপের সময় কাঁদুন, দেখবেন মন অনেকখানি ভালো হয়ে গেছে। তাই মনে সুস্থ রাখতে কান্নাকে চেপে না রেখে, কেঁদে ফেলুন।