১.
আমার দুই জেঠার বাড়ি আর হিন্দু বাড়ি পাশাপাশি। তাদের সাথে জমিজমা নিয়ে অনেক গেঞ্জাম, কিন্তু ধর্ম নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো গেঞ্জাম হয় নি। প্রতিবেশি হিসেবে সম্পর্ক অনেক ভালো। তাদের পূজার সময়, বিশেষ করে দিপাবলিতে উঠানে প্রদিপ জ্বলা দেখার জন্য আমার কাজিনরা তাদের চেয়েও বেশি এক্সাইটেড হয়ে থাকতো।
কিন্তু কিছু ব্যপারে একটু কড়াকড়ি মানে তারা। তাদের ভাত ঘরে কোনো অন্য ধর্মের কেউ যেতে পারেনা, গেলে নতুন করে ভাত ঘর লেপা হতো, ঠাকুরঘরের ব্যপারেও কড়াকড়ি ছিলো কিছু। তাদের এই বাউন্ডারি খুব ভাল করেই আমার জেঠারা মান্য করতো।
ব্রাম্মণ গোসল করে উঠে মুসলমানের সংস্পর্শ পেলে আবার ডুব দিতে যেত।
এই বিষয় গুলো ধর্মপ্রাণ বাঙ্গালী মুসলামনদের তো কখোনো বিরক্ত করেনি! এখন কি হলো?
ব্রিটিশরা এসে শুরু দিকে বাঙ্গালীদের ধর্ম দিয়ে বিভাজন করতে পারেনি, এমনকি পাকিস্তানীরা তো সেই চেষ্টা করে উলটো ধরা খেল।
কিন্তু গত ২০-২৫ বছরে এতো ভালো ভাবে এই বিষ ঢুকানো হয়েছে, এমন এক তৌহিদী জনতা তৈরি করা হয়েছে যাদের অন্তঃসার শূন্য। মাথার ঘিলুতে আছে শুধু মালাউন মার, জান্নাতে যা। যারা দিনে একবার'ও মসজিদ মারায় না, কিন্তু ভাবে হিন্দু মারতে পারলেই জান্নাত নিশ্চিত। শয়তানি মোটিভের আন্দোলন করে পুলিশের গুলিতে মরলে শহীদ।
২.
এই যে তৌহীদি জনতা আগুন দিলো, মানুষ মারলো- ইসলামের কি লাভটা হলো? দলে দলে হিন্দু পূজো বাদ দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করছে? তারা ভাবছে 'আরে এই ধর্মের মানুষতো তাদের ধর্মের ব্যপারে অনেক প্রটেক্টিভ! তার মানে এটাই সত্য ধর্ম।' এই ভেবে ইসলাম আর মুসলিমদের সম্মান দেওয়া শুরু করেছে?
যারা প্রতিবার পূজা আসলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটায় তারা চা'ই জান্নাতের জন্য তর সইতে না পারা তৌহিদী জনতা অভার-রিয়েক্ট করুক। হিন্দুর ঘর জ্বালিয়ে দেক। হিন্দু মেরে ফেলুক, হিন্দুর উপাসকদের ভেঙ্গে ফেলুক। তার মানে ঘিলুহীন এই ধার্মিক(!) গুলো আসলে শয়তানের হয়ে কাজ করছে কারন তারা জানেই এই স্যাবোটেজ গুলো কক্ষনোই, কখনোই হিন্দুরা করছেনা। সাজনো নকশা দেখেও যদি মুমিন মুসলমান ষড়যন্ত্র ধরতে না পারে, তাহলে এই মুসলাম্নদের দিয়ে ইসলামের কি আসে যায়?
৩.
এই ভন্ড মুমিনদের শিকার শুধু সংখ্যালঘুরা না কিন্তু! এই ভন্ড মুমিনরা হিজাবহীন মুসলিম মেয়েদের মাগী গালি দিয়েও নেকী হাসিল করে।
এই বিষ ধর্মের বাহিরে এখন। এই দেশের ভবিষ্যত এখন শয়তানের কব্জায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:২৫