কিছু 'ইশশ' এর সমীকরণ যদি মিলে যেতো তাহলে বেশ হতো। এই যেমন সেদিনের ঘটে যাওয়া ব্যাপারটা।
শাওন একটা মেয়ের নামে ফেইক এ্যাকাউন্ট চালাতো। তবে দেখে ফেইক বলে বোঝার উপায় ছিলো না। আড়াই বছরের পাকা হাত বলে কথা। তার যখন কোনো কাজ না থাকতো কিংবা ভালো লাগতো না তখন ওই এ্যাকাউন্টে ঢুকতো। লগ ইনের সাথে সাথেই বৃষ্টির মতো ম্যাসেজ আসা শুরু করে। বেছে বেছে রিপ্লাই দিতো সে। লাতুপুতু রিপ্লাই। একটা খাতায় দাগ কেটে রাখতো কয়টা প্রপোজ এসেছে এই এ্যাকাউন্টে। সেদিন পর্যন্ত মোটমাট চুরানব্বইটা। বেশ মজাই লাগতো শাওনের।
ওই এ্যাকাউন্টে একটা ছেলের সাথে নিয়মিত কথা হতো, সৌরভ। ছেলেটা দেখতে বেশ সুন্দর। টুকটাক মডেলিং করে। প্রোফাইল দেখে মনে হয় সে বেশ গোছানো। বেশ বড়লোকের ছেলে বলে মনে হয়েছে শাওনের। সবচেয়ে বেশি চ্যাট হয়েছে ওর সাথেই অথচ ছেলেটা কখনো প্রপোজ কিংবা ছবির আবদার করে নি।
এই ছেলেটাকে একটু নাচাতে হবে। পরের সপ্তাহে একদিন দেখা করার কথা বলে টোপ ফেললো শাওন। অন্য আট দশটা ছেলের মতো সেও রাজি হয়ে গেলো। রবিবার বিকেলে ধানমন্ডি দেখা করবে। ঠিক হলো ছেলেটা কালো টিশার্ট আর জিনস পরে আসবে, আর মেয়েটা পরবে নীল ড্রেস।
রবিবার বিকেলে সরোবরের যেখানে দেখা করার কথা সেখান থেকে একটু দূরে আড়ালে বসে আছে শাওন। অনেক খুঁজেপেতে একটা দূরবীন ম্যানেজ করেছে। দূর থেকেই সৌরভকে দেখবে আর মজা নিবে...
কিন্তু সময় পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও ওইরকম চেহারার কোনো ছেলেকে দেখতে পেলো না সে। ছেলেটাকে পঁচানোর জন্য সে নিজেই কালো টিশার্ট আর জিনিস পরে এসেছিলো। তা আর করা হলো না।
ফেসবুকে ঢুকে ছেলেটাকে ম্যাসেজ পাঠানোর সাথে সাথেই রিপ্লাই এলো। সেও নাকি এসেছিলো কিন্তু মেয়েটাকে খুঁজে পায় নি। নিশ্চয়ই মিথ্যা বলছে ছেলেটা। সে আসেই নি, আসলে অবশ্যই চোখে পরতো শাওনের।
ধ্যাত, উল্টো ওই ছেলেটাই তাকে বোকা বানালো। ব্লক করে দিলো আইডিটা...
শাওন একটু পেছনে তাকালেই হয়তো দেখতে পেতো নীল ড্রেস পরা একটা মেয়ের হাতেও একটা দূরবীন ছিলো। তার ফোনে ফেসবুক একটা ছেলের ফেসবুক প্রোফাইলে লগ ইন করা। সুন্দর চেহারা। টুকটাক মডেলিং করে। আর মেয়েটার নাম? সুরভী...