ছাদে সিগ্রেট নিয়ে বসে আছি। তিনটে সিগ্রেট কিনে এনেছিলাম ঘটনার চক্রে পড়ে। পাশের বাড়ির মুরব্বী ওয়াক ওয়াক করে গলা টানেন। অতিশয় বিশ্রী লাগে। ইচ্ছে করে গিয়ে ঠাস করে থাপ্পড় লাগাতে। ভোররাত বা মধ্য রাতে যখন বাইরে বের হই তখনো শুনি ঐ লোক বিশ্রীরকম গলা টানছেন। যাইহোক, সকাল থেকে পরপর অনেকগুলা ঘটনা ঘটে গেছে। কাল রাত্রে তোমাকে একটা ঘটনা বলেছিলাম। এলাকার এক মেয়ে থাপ্পড় খেয়ে হাসপাতালে। ঘটনা টখনো পুরোটা জানতামনা। ঘটনা জানলাম যখন সকালে পুলিশ আসলো। ঐ পিচ্চিকে থাপ্পড় মেরেছিলো পাশের বাড়ির এক লোক বিকেলে। এলাকার কিছু মুরব্বী ঐ পিচ্চির বাপকে পরামর্শ দিয়েছে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে। অথচ ঘটনা গুরুতর কিছু না। ওই রাত্রেই একগাদা ওষুধ এম্বুলেন্স আর সিটিস্ক্যানের বিল গুনতে হয়েছে যে থাপ্পড় মেরেছিল তার। এখানেই শেষ না। তার নামে মামলা করা হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন আইনে। এজন্যই পুলিশ এসেছে। আব্বা বাসায় ছিলেন। তাকেও জোর করে ডেকে নিয়ে গিয়েছে। আমিও ঘুম ঘুম চোখে গেলাম। থানার এস আই রিপোর্ট লিখছে। একপর্যায়ে আব্বাকে বলা হল- তোমার নাম কি?
আব্বা রীতিমতো ভ্রু কুঁচকে ফেলেছেন। পিচ্চি পুলিশ তাকে তুমি বলে সন্মোধন করেছে। এ ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে উপস্থিতি। আমি টপ করে অফিসারের সামনে গিয়ে বললাম - শুওরের বাচ্চা এক্ষুনি এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যা। তোর মামলা এখানেই শেষ। অফিসার সামলে নিচ্ছে নিজেকে। সে পিস্তলে হাত দিতে গেল। আমি বললাম পিস্তলে হাত দিয়ে লাগ নেই। ম্যাগাজিন আনিসনি। ফিরে যা নইলে লাশ হয়ে ফিরবি। অফিসার পিস্তল হাতে নিয়ে দেখলো সত্যিই পিস্তলে ম্যাগাজিন নেই। আমি বললাম পরবর্তীতে চেক করে নিয়ে বের হবি। কখন কোন কাজে লাগে। এস, আই এবং ইনচার্জ বের হয়ে মোটরসাইকেল স্টার্ট দিচ্ছে। উপস্থিতির মধ্যে চাপা কানাকানি। আর রক্ষে নেই টাইপ। আমি দ্রুত বের হয়ে চলে আসলাম সেই পুরনো বাড়িতে। দুটো টেলিফোন করলাম। একটা করলাম হাফিজুর ভাইকে। এ,এস,পি। ডিসি অফিসে কর্মরত। ফোন ধরলো বান্ধবী তিন্না। এই মেয়ে অতিশয় বুদ্ধিমতী। প্রথম কথা শুনেই বুঝে ফেলেছে এটা আমি। কারন আমি পরচিত কাউকে ফোন করে হ্যালো বলিনা। সরাসরি নাম বলি। যেনন আজ ফোন করেই বললাম হাফিজুর ভাই...
আমি ওকে ঘটনা খুলে বললাম। ও বললো হাফিজ ফোন রেখে অফিসে গেছে। সমস্যা নেই আমি অফিসে ফোন করে দিচ্ছি। ও ব্যবস্থা নেবে। না এটা ঠিক হবেনা। এসব গুরুতর ব্যাপার সামনাসামনি বসে বলতে হয়। আমি বের হচ্ছি। তুই নিশ্চিন্তে থাক। আর আসিস একদিন।
আমি ফোন কেটে দিলাম। বুঝতে পারছি বাকী ফোনটা করা লাগবেনা।
তোমাকে মেইলটা পাঠানোর সময় ফোন করেছিল হাফিজুর ভাই। আমার বিরুদ্ধে সরকারী কাজে বাধা দেবার অভিযোগপত্র রেডি করা হচ্ছিল। জেলা প্রশাসক সাহেব নিজেই ফোন করেছিলেন। ঐ লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও তুলে ফেলা হবে।
তুমি আজ সারাদিন কি করেছ? আজকাল আমার সাথে এমন সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে কেন?
এটা কাউকে পাঠানো একটা মেইল। হুবহু তুলে দিলাম। মেইলের প্রতিউত্তরটাও ভাল ছিল। দিয়ে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২৬