১) লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের মাঝে মাত্র কয়েক শ' জন আছে রাজনীতিবিদদের পা-চাটা দালাল ও ছাত্র-নিপীড়নকারী। এদের মধ্যেও মাত্র অল্প কয়েকজনকে শিক্ষক-ছাত্র-জনতা সাইজ করতেছে। এমন বিচ্ছিন্ন ছোট ঘটনাকে বড় ইস্যু করার চেষ্টায় লেগেছে এবং কিছুটা সফল হয়েছে ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা; যেন (ক) একচেটিয়া দোষ চাপিয়ে দিয়ে ছাত্রদের বদনাম করা যায় এবং (খ) ফ্যাসিবাদের সহযোগী শিক্ষকদের নতুন পরিস্থিতিতে পুনর্বাসন করা যায়।
২) আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কাউকে অপমান-অপদস্থ করা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়, এবং তা এখনই বন্ধ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের সহযোগী ও দালালদের বিরুদ্ধে শিক্ষক-ছাত্র-এলাকাবাসীর প্রতিবাদগুলো বিক্ষোভ-মিছিল, মানববন্ধন, কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ইত্যাদি অহিংস কর্মসূচির মধ্যে সীমিত রাখা চাই। দোষীদের পদত্যাগ বা শাস্তি আইনসিদ্ধ পন্থায় না হলে দীর্ঘমেয়াদে সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩) পুরোনো হায়েনারা আনাচে কানাচে ওত পেতে আছে ঠুনকো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরে ছাত্রদের বদনাম ও আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। আন্দোলনে গণহত্যা-গণনিপীড়ন ঘটে গেলেও তাদের বুক কাঁপে নাই, ছাত্রদের লাশের পর লাশ পড়লেও তারা ছিল নির্বিকার এবং খুনী ফ্যাসিস্ট রেজিমের সমর্থক ও সহযোগী। অথচ এখন তারা সমস্বরে হুক্কাহুয়া রবে কান্না জুড়ে দেয় ছাত্রহত্যায় উস্কানিদাতা, ছাত্র-নিপীড়নকারী, শিক্ষক নামের কুলাঙ্গার পা-চাটা দালালদের দুর্দশা দেখে।
৪) শিক্ষক-নিগ্রহের অপরাধের দায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার উপরও বর্তায়। প্রশাসন কেন তিন সপ্তাহেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ওই কুলাঙ্গারদের বরখাস্ত/অপসারণ করল না? যেখানে ফ্যাসিবাদের বটবৃক্ষ সমূলে উৎপাটিত হয়েছে, সেখানে ফ্যাসিবাদের সহযোগী, ছাত্র-নিপীড়নকারী, নির্লজ্জ দালাল ও পলিটিক্যাল গুণ্ডারা এখনো বহাল তবিয়তে থাকলে মানুষ কিভাবে সহ্য করবে? প্রশাসন নিষ্ক্রিয় বলে মানুষ আইন হাতে তোলে নিচ্ছে। প্রশাসনকে দ্রুত সচল ও সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে। তাদের প্রোএকটিভ ভূমিকায় এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়িয়ে আইন মোতাবেক দোষী শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়া যায়।
৫) বিপ্লব/অভ্যুত্থানে সবকিছু সুন্দর মত ঘটে না। ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েই থাকে। এজন্য দুঃখিত হওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই। মাও জেদং বলেন, "A revolution is not a dinner party; it cannot be so gentle, so temperate, kind, courteous and restrained. A revolution is an insurrection, an act of violence by which one class overthrows another."
৬) রাজনৈতিক কারণে আমিও দুইজন শিক্ষক দ্বারা জুলুমের শিকার হয়েছিলাম। অনার্সের একটা পুরো ইয়ারে ক্লাস করতে পারি নাই। হয়তো তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমার উপর সেসব করেছিল অথবা নিজেরাই জালিমদের দলভুক্ত। শিবির/ছাত্রদল করলে আমাকে হাড্ডি গুড়ো করে হাসপাতাল পাঠাইত নিশ্চিত। পশুত্ব জেগে উঠলে আমিও চাইব তাদের উপর তদ্রুপ জুলুম করতে। থাক। আমাতে পশুত্ব না জাগুক। আমি যেন প্রতিহিংসা পরায়ণ না হই সেই দুই শিক্ষক কিংবা আমাকে নিগ্রহের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের প্রতি। অবশ্য হাতে সময় ও শক্ত প্রমাণ-সাবুদ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে এখন আইনি ব্যবস্থা নিতাম। প্রত্যেকেই আইনের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি দিক। আইনের শাসন কায়েম হোক।
৭) ফ্যাসিবাদের দোসর হইতে সাবধান।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:০৬