জাফর ইকবাল স্যার, একজন আলোর ফেরিওয়ালা।
শৈশব-কৈশোরে কত হাসি-কান্না, আবেগ-ভালবাসা, আনন্দ-সৌন্দর্যের দেখা পেয়েছিলাম তার গল্পে, লেখায়, কিশোর উপন্যাসে। তিনি একাই এক হাতে লাখ লাখ কিশোর-কিশোরীর মনন গড়ে দিয়েছেন লেখনী দিয়ে। লাখ লাখ তরুণ-তরুণী এই অন্ধকারের যুগেও তার মত মানুষগুলোর জন্য প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে।
এখনো এই বয়সেও মন ভাল না থাকলে তার সাইয়েন্স ফিকশনগুলো পড়ি। তার কলাম পড়ে এখনো ভালমন্দের পার্থক্য বুঝতে পারি। সরলসোজা মানুষটা সবসময় তার মতোই সরলসোজা বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে গেছেন, শিশুকিশোরদের আনন্দ দিয়ে গেছেন। তার জন্য কতখানি ভালবাসা অনুভব করি বলে বোঝানো যাবে না।
প্রাণপ্রিয় মানুষটা আজ বিকৃত মস্তিকের জিঘাংসু জঙ্গি ধর্মীয় সন্ত্রাসীদের ছুরিকা হামলার শিকার। ঘৃণ্য গোবরে পোকারা আলোক সহ্য করতে না পেরে আলোকের উৎসমুখ বন্ধ করে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ তিনি ধর্মের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলেন নি। তার অপরাধ হলো, তিনি সৌন্দর্যের কথা বলতেন, আলোকিত জীবনের গল্প শোনাতেন বাচ্চাদেরকে, মাঝে মাঝে গোঁড়ামির বিরুদ্ধে বলতেন। তাও সহ্য হয় নি ধার্মিক হায়েনাদের। হত্যার আদিম নেশায় উন্মাদ আততায়ী লেলিয়ে দেওয়া হলো তার পেছনে। মনে হচ্ছে, ধর্মগুলোতে যুক্তি ও জ্ঞানের চেয়ে চাপাতি-ত্রিশূলের জোর বেশি।
আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলব, তার জনপ্রিয়তা, তার প্রতি মানুষের ভালবাসা আরো বাড়বে। মানুষ তার দেখানো আলোকের পথের দিকে দিন দিন আরো বেশি ঝুঁকবে। তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মাঝে, শিশুকিশোরদের বুকের মাঝে, আবেগে-ভালবাসায়-আলোতে।
বেঁচে থাকুন তিনি, সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন।
ভালবাসা জাফর ইকবালদের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৬