আহলে সুন্নার প্রবল দাবী কুরআনে ভুল আছে সেটার বিষয় এখান থেকে পেতে পারেন। (https://goo.gl/d8T4pQ)
এখন আরও একটা দেওয়া হল যেখানে আহলে সুন্না ইবনে আব্বাস, ইবনে মাসুদ, সাইদ বিন যুবাইরের বরাত দিয়ে দাবী করেছে যে কুরআনে ভুল আছে।
সূরা নুরের ২৭ নং আয়াতঃ
বাংলা উচ্চারনঃ
“ইয়া আইউহাল্লাজিনা আমানু লা তাদখুলু বুউতান গাইরা বুউতিকুম হাত্তা তাস্তানিসূ ওয়া তা সাল্লিমু............”।
আরবিঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَىٰ أَهْلِهَا ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
ইংরাজী উচ্চারনঃ
Ya ayyuha allatheena amanoo la tadkhuloo buyootan ghayra buyootikum hatta tastanisoo watusallimoo AAala ahliha thalikum khayrun lakum laAAallakum tathakkaroona
বাংলা মানেঃ
ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিজেদের গৃহ ছাড়া তোমরা গৃহে প্রবেশ কর না যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নিয়েছ ও তাদের বাসিন্দাদের সালাম করেছ। এইটিই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যেন তোমরা মনোযোগ দিতে পার।
অনলাইন এ এখানে দেখতে পারেনঃ http://www.quran.gov.bd/home/selectSura.html
সুতারং আমাদের হাতে যে কুরআন আছে সেখানে তাস্তানিসূ আছে। কিন্তু আহলে বকরির মতে এটা ভুল এবং এই বিষয় তারা উপরে উল্লেখিত সাহাবাদের সাহায্য নেয়।
আহলে সুন্নার বিভিন্ন কিতাব সমুহে এই বিষয় উল্লেখ হয়েছে, নিচে কিছু লিস্ট দেওয়া হল।
১) ইতকান খণ্ড ১ পাতা ২২৮। জালালুদ্দিন সুয়ুতি।
২) তাফসীর দুররুল মানসুর, এই আয়াতের ব্যাখ্যায়। জালালুদ্দিন সুয়ুতি।
৩) মুসতাদরক আল হাকিম। খণ্ড ৩ পাতা ২53।
৪) তাফসীর তাবারী।
৫) তাফসীর রুহ হুল মানি।
৬) তাফসীর বাহার আল মুহিত।
৭) তাফসীর আল কবির। ফরকরুদ্দিন রাজী
৮) ফাতহুল বারী সারাহ সাহিহ আল বুখারি। ইমাম হাজর আস্কালানি।
৯) তাফসীর ফাতহ আল কাদীর।
১০) তাফসীর আল লুবাব।
ইমাম হাকিম তার মুসতাদরক ‘আলা সাহিহহাইন’ এ উল্লেখ করেছেনঃ
حدثنا أبو علي الحافظ أنبأ عبدان الأهوازي ثنا عمرو بن محمد الناقد ثنا محمد بن يوسف ثنا سفيان عن شعبة عن جعفر بن إياس عن مجاهد عن ابن عباس رضي الله عنهما : في قوله تعالى : { لا تدخلوا بيوتا غير بيوتكم حتى تستأنسوا } قال : أخطأ الكاتب حتى تستأذنوا
মুজাইহিদ বর্ণনা করেছেনঃ
“ইবনে আব্বাস রাঃ আল্লাহ তালার এই বক্তব্য {ইয়া আইউহাল্লাজিনা আমানু লা তাদখুলু বুউতান গাইরা বুউতিকুম হাত্তা তাস্তানিসূ } সমন্ধে বলতেন এটা লেখকের ভুল, (আসলে) হবে তাসতাযিনু”।
এটাকে ইমাম হাকিম বলেছেন “ এই হাদিস শেইখাইনের (বুখারি ও মুসলিম) মানদণ্ডে সহিহ”।
ইমাম যাহাবি “বুখারি ও মুসলিমের শর্তের উপর। (অর্থাৎ সহিহ এবং বুখারি ও মুসলিম শরীফের মানদন্ডে সহিহ)
অন লাইন লিংকঃ
হাফিজ ইবনে হাজর আস্কালানি উল্লেখ করেছেনঃ
اخرج سعيد بن منصور والطبري والبيهقي في الشعب بسند صحيح أن ابن عباس كان يقرأ حتى تستأذنوا ويقول أخطأ الكاتب
“সাইদ বিন মান্সুর, তাবারি এবং বাইহাকী তার শাইব এ সহিহ সনদ সহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে ইবনে আব্বাস পড়তেন ‘ হাত্তা তাস্তাযিনু’ এবং বলতেন লেখক ভুল করেছেন”।
তাবারি তার তফসীরে ইবনে আব্বাস থেকে অন্য একটা সহিহ সনদে উল্লেখ করেছেনঃ
حدثنا ابن بشار قال ثنا محمد بن جعفر قال ثنا شعبة عن أبي بشر عن سعيد بن جبير عن ابن عباس في هذه الآية { لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا } وقال إنما هي من خطأ الكاتب { حتى تستأذوا وتسلموا
“.........ইবনে আব্বাস এই আয়াত {“ইয়া আইউহাল্লাজিনা আমানু লা তাদখুলু বুউতান গাইরা বুউতিকুম হাত্তা তাস্তানিসূ ওয়া তা সাল্লিমু...} ব্যাপারে বলতেন এটা লেখকের ভুল, এটা হবে {“হাত্তা তাস্তাযিনু”}”।
আরও বিখ্যাত সালফে সালাফ তাবে’ঈ সাইদ বিন যুবাইর বলেছেনঃ
حدثنا ابن المثنى قال ثنا وهب بن جرير قال ثنا شعبة عن أبي بشير عن سعيد بن جبير بمثله غير أنه قال : إنما هي { حتى تستأذنوا } ولكنها سقط من الكاتب
“............ এটা হওয়া দরকার {“হাত্তা তাস্তাযিনু”} , কিন্তু লেখকের ভ্রান্তি”।
কাজী শাওকানি লিখেছেনঃ
“............ইবনে আব্বাস এই আয়াত সমন্ধে বলেছেন ‘এটা লেখকের ভুল’”।
এই একই ধরনের কথা বর্নিত হয়েছে ইবনে মাসুদ , উবাই ইবনে কাব থেকে যা উপরে উল্লেখিত আহলে সুন্নার কিতাব সমূহ থেকে পাওয়া যায়।
এখানে আহলে বকরি ও নাসিবিদের এই গান চলবে না যে এটা কুরআনের তাহরিফ এর বিষয় নয় বরং বিভিন্ন কেরাতের বিষয়। কারণ এখানে সাহাবীগন বলছেন যে এটা লেখকের ভুল।
আরও বকরিদের ঐ কেরাতের অজুহাত ভেংয়ে দেয় আহলে সুন্নার কিছু উলেমা যারা এটাকে অস্বীকার করার চেস্টা করেছে কারন তারা অস্বস্তিতে পড়ে এবং বলে এটা কুরআনে তাহরিফের দরজা খুলে দেবে, ইসলামে ফল্ট এসে যাবে। সুতারং তারা এই গ্রাউন্ড থেকে নিজেদেরকে লুকিয়ে নিতে চায়। কিন্তু এটা যে তাহরিফকেই প্রমান করে কেরাতের ভিন্যতা নয় সেটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
এই বিষয় সুন্নি আলেমদের বেশ কিছু লিখেছেন একটা উল্লেখ করলামঃ
আহলে সুন্নার ইমাম ইবনে আদিল দামেস্কি আল হাম্বালি (মৃঃ৮৮০ হি) তার তাফসীর লুবাব এ লিখেছেনঃ
“ইবনে আব্বাস বলেছেন এটা “হাত্তা তাস্তাযিনু” এবং এটা কেরাতের ভিন্নতা নয়। যেটা বলা হয়েছে ‘তাস্তানিসু’ লেখকের ভুল।
অনেকে কুরআনের সত্যতার প্রশ্নে এটাকে রিজেক্ট করে দিয়েছে ........................ দুটি দরজা খুলে যাবে যাতে পুরো কুরআনের সত্যতার প্রশ্ন উঠবে”।
এখন আহলে সুন্নার কাছে তিনটি বিকল্প আছে
১)কুরআনে তাহরিফ মানলে ও কাফের নয়।
নইলে
২) ইবনে আব্বাস রাঃ সহ অন্যান্য সাহাবরা কাফের।
৩) অথবা যারা এই হাদিস্কে সহিহ বলেছেন তারাও কাফের।
আর এটা কাউকে বলতে লাগবে না যে যারা অস্বীকার করেছে তারা নিজের মুখ নিজে বালিতে ঢুকিয়ে লজ্জা নিবারন করেছে এবং মুনকারে হাদিসে পরিনত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩