somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রুমানার বাহার

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অঙ্ক স্যারের পকেটে থাকত এক বক্স দেয়াশলাই, কাঠি অনেকগুলো। অনুমানিক একশটির মত হবে। দাম পঞ্চাশ পয়সা। ধূমপানের অভ্যাস স্যারের নেই। তবুও দেয়াশলাই রাখতেন ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর জন্য। যোগ, বিয়োগ, গুন, আর ভাগ সব কিছু দেয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়েই বুঝিয়ে দিতেন। ছাত্রদের বলতেন তারা যেন আইস্ক্রিমের শলাকা যোগাড় করে আনে। তখনকার দিনে এক টাকায় চারটা আইসক্রিম পাওয়া যেত। আইস্ক্রিমের শলাকা জমানোই ছিল ছাত্রদের প্রধান কাজ। আইস্ক্রিমওয়ালা দশটি শলাকার বিনিময়ে পচিশ পয়সা দামের একটা আইসক্রিম ফ্রি দিত। অঙ্ক স্যারের কারনে আইসক্রিমওয়ালার শলাকার ব্যবসাটা তেমন জমতে পারে নি।
ক্লাস টু আর থ্রির অঙ্ক ক্লাস নিতেন জনাব মর্তুজ আলী। কোকড়া চুল মাথায়, ইয়া বড় গোফ উনার। নিয়মিত কলপ দিতেন তাই অন্যরকম একটা তেজ তেজ ভাব থাকত। চামড়া বয়সের ভারে সামান্য কুচকে গেছে। তবে চুলে গোফে কঠিন কটমটে তেজী ভাবটা লেপ্টে থাকত। চোখ দুটি নেশাখোর মানুষদের মত সারাক্ষন রক্ত লাল হয়ে থাকত। সেদিকে তাকালে অন্তরাত্মা কেপে উঠত। এক হাতে চক, ডাস্টার আর নাম ডাকার খাতা। অন্য হাতে তেল মাখানো জালি বেত। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লাস নেয়ার জন্য হাজির হয়ে যেতেন। এসেই ক্লাস ক্যাপ্টেনের ডাক পড়ত। ক্লাস ক্যাপ্টেনের প্রথম কাজ ছিল ছাত্র-ছাত্রীর মোট উপস্তিতি গুনে ব্ল্যাকবোর্ডের এক কোণায় লিখে রাখা। সেই সাথে দিন তারিখ আর সন লিখে রাখতে হত। তারপর নাম ডাকা। পিনপতন নিরবতার মধ্যে নাম ডাকা শেষ হলে শুরু হত বিগত দিনের বাড়ির কাজ উশুল করা। যারা কোন কারনে বাড়ির কাজ জমা দিতে পারত না তাদের ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে লাইন বেঁধে দাড় করানো হত। অন্যদের খাতা দেখা শেষ করে অপরাধীদের শাস্তির পালা। তাদের পিঠ আর স্যারের জালি বেত, অসাধারন কম্বিনেশন। বেতের এক মাথায় ধরে ধনুকের মত টেনে এনে ঠিক মেরুদন্ড বরাবর ছেড়ে দিতেন। ছাড়ার আগ মুহুর্তে সুর করে সেসময়কার বিখ্যাত টিভি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল গাইতেন, দেখ দেখ দেখরে রুমানার বাহার। হাহাহা...

২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈপ্লবিক ছন্দ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:১২




বছর তিনেক আগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে উড়ন্ত ভঙ্গিতে ছবি তুলেছিলো একটা মেয়ে। তার নাম ইরা।

ইরার ওই ছবিটাই হওয়া উচিত বাংলাদেশের মেয়েদের প্রতীক। আমাদের মেয়েদের মেধা আছে, অদম্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম ও তার আসল বাস্তবতা

লিখেছেন নীল আকাশ, ০৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭







বাংলাদেশের ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার নামে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো দেশের মানুষের সাথে ভন্ডামি করে বেড়াচ্ছে তাদের জন্য উপরের ছবিগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‌এই সমস্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমি সমস্যার সমাধান কি?

লিখেছেন প্রফেসর সাহেব, ০৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

দেশে বিশ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা কত জানেন? অসংখ্য। এর নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা কেউ দিতে পারেনাই, নামে বেনামে নিবন্ধিত অনিবন্ধিত মাদ্রাসার সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি, মার্কিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শূন্যতার বিরম্বনা

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ০৫ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৫৯

"শূন্যতার বিরম্বনা "

তুমি আমার ভিতরে থাকা গভীর কষ্ট,
অনেক টা আলমারীতে তুলে রাখা পরতে না পারা
কাপড়ের মতো।
তুমি আমার বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা গভীর
এক ভালোবাসা,
যেখানে নেই কোনো প্রাকৃতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্রীয় মনোবিকৃতি ও জাতিসত্তার লোপ: নিৎসে, ফুকো, ফ্রয়েড ও মার্ক্সের দর্শনে বাংলাদেশের অন্তর্গত বিপর্যয় !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:২৩


আমরা কোথায় যাচ্ছি ? না, এই প্রশ্নটিই ভুল। আমরা আদৌ কোথাও যাচ্ছি কিনা, সেই নিশ্চয়তাই আজ খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা যে সমাজে বাস করি, সেটিকে আর সমাজবিজ্ঞান দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×