১. টেনশনমুক্ত থাকতে হবে পরীক্ষা কক্ষে টেনশনমুক্ত ও স্বাভাবিক
থাকার চেষ্টা করতে হবে।
দুশ্চিন্তা পরীক্ষার
হলে ভালো পরীক্ষা দেওয়ার
ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অনেক
শিক্ষার্থী অতিরিক্ত টেনশনের কারণে অনেক জানা প্রশ্নের উত্তরও
সঠিকভাবে করতে পারে না। প্রশ্নপত্র
হাতে পাওয়ার পর বাইরের সব চিন্তা বাদ
দিয়ে প্রশ্নপত্রে মনোযোগ দিতে হবে।
প্রশ্নপত্রে অন্তত একবার চোখ
বুলিয়ে নিয়ে উত্তর করা শুরু করতে হবে।
২. কেমন হবে উত্তরপত্র উত্তরপত্রের ওপরে এক ইঞ্চি, নিচে এক
ইঞ্চি, ডানে এক ইঞ্চি রেখে লেখা শুরু
করলে ভালো হয়। মার্জিন ব্যবহার
করতে পারেন। মার্জিন টানার জন্য
পেনসিল ব্যবহার করা যেতে পারে।
উত্তরপত্রে বিভিন্ন প্রশ্নের নম্বর লেখার পর এর নিচে সাইনপেন দিয়ে দাগ
টেনে দিতে পারেন। কালো, নীল
কিংবা সবুজ রংয়ের সাইনপেন ব্যবহার
করা ভালো। কোনোভাবেই লাল রং ব্যবহার
করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই
উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
৩. প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর
পুরো প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
কোনো প্রশ্ন আংশিক পরিবর্তন
করে দেওয়া হলো কি না তা খেয়াল
রাখতে হবে। প্রশ্নপত্র
দেখে মনে মনে পুরো পরীক্ষার পরিকল্পনা করবেন। আপনি কিভাবে শুরু
করবেন এবং কিভাবে শেষ করবেন, তার ছক
করে নিলে পরীক্ষা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
৪. সময় বণ্টন প্রশ্নের মান অর্থাৎ নম্বর অনুযায়ী কতটুকু
লিখতে হবে, তা নির্ধারণ করেই লেখা শুরু
করতে হবে। বেশি নম্বরের
প্রশ্নগুলো যতটুকু সম্ভব
ভালো করে দেওয়া উচিত,
তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। একটি রচনামূলক প্রশ্নের জন্য সাধারণত
১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি সময়
নেওয়া উচিত নয়। আর সংক্ষিপ্ত
প্রশ্নোত্তরের জন্য ছয় মিনিট বরাদ্দ
রেখে লিখতে পারলে ভালো হয়।
তবে এটি নির্ভর করবে প্রশ্নের মানের ওপর।
৫. প্রশ্ন নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ যেসব প্রশ্নের উত্তর
ভালো জানা আছে এবং বেশি নম্বরের,
সেগুলো আগে লেখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
পরীক্ষক যখন খাতা মূল্যায়ন করবেন তখন
শুরুতেই লেখার মান
ভালো দেখলে শিক্ষার্থীর প্রতি ইতিবাচক ধারণা আসবে। এতে ওই বিষয়ে ভালো নম্বর
পাওয়া সহজ হবে। তুলনামূলক সহজ ও
জানা প্রশ্নের উত্তর পর্যায়ক্রমে অর্থাৎ
পরপর লেখাই ভালো।
৬. উত্তরপত্র পরিচ্ছন্ন হতে হবে ভালো নম্বর পেতে হলে ওভাররাইটিং,
কাটাছেঁড়া, অস্পষ্ট লেখা পরিহার
করতে হবে। লেখায় কোনো ভুল
হলে একটি সমান্তরাল
দাগে কেটে দিতে হবে। লেখার
ভাষা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল হওয়াই ভালো। গণিত ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন চিহ্ন ও চিত্র
স্পষ্ট করে লিখতে হবে। একটি প্রশ্নের
উত্তর লেখা শেষ হলে পরবর্তী পৃষ্ঠায়
পরের প্রশ্নের উত্তর শুরু করাই ভালো।
পয়েন্ট আকারে লিখলে বেশি নম্বর
পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রশ্নের উত্তরে ধারাবাহিকতা ভালো ফলের
ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
৭. লেখা অযথা বড় করা যাবে না বেশি লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায়,
এটি একটি ভুল ধারণা। অপ্রয়োজনীয় ও
অপ্রাসঙ্গিক লিখে উত্তর বড় করার
চেয়ে প্রাসঙ্গিক ও যথাযথ ছোট উত্তরেই
বেশি নম্বর পাওয়া যায়। অপ্রাসঙ্গিক
উত্তর লিখে খাতা ভরলে সময় নষ্ট হবে, বেশি নম্বর পাওয়া যাবে না। অনেকেই
কয়েক লাইনে এক পৃষ্ঠা শেষ
করে পরবর্তী পৃষ্ঠায় লেখা শুরু করেন।
পরীক্ষকরা এতে বিরক্ত হন। আবার খুব
সংক্ষিপ্ত ও উত্তরে প্রয়োজনীয় অংশ
না থাকলেও কাঙ্ক্ষিত নম্বর পাওয়া যায় না। আকর্ষণীয় ভূমিকা ও উপসংহার
ভালো নম্বর পাওয়ার প্রধান শর্ত।
৮. প্রশ্ন কমন না পড়লে কমন প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হওয়ার পর
যথেষ্ট সময় থাকলেই আনকমন প্রশ্নে হাত
দেওয়া উচিত। ক্লাসে শিক্ষক এ বিষয়টির
ওপর আলোচনা করেছিলেন
কি না তা মনে করার চেষ্টা করতে হবে।
যতটুকু মনে পড়ে ততটুকুই সাজিয়ে লেখা যেতে পারে।
তবে বেশি অনুমাননির্ভর না হওয়াই
ভালো।
কোনো বিষয়ে ভালো ধারণা না থাকলে বানি
পাওয়ার আশা করা যায় না।
৯. লেখার শেষে রিভিশন রিভিশনের জন্য শেষ ১০ থেকে ১৫ মিনিট
সময় হাতে রাখতে হবে। এ সময় সবার
আগে লক্ষ করতে হবে প্রশ্নের
সঙ্গে উত্তরপত্রে লেখা ক্রমিকের মিল
আছে কি না। প্রশ্নের কোনো অংশের
ক্রমিকও (যেমন ‘ক’ বা ‘খ’) ঠিকমতো লেখা হয়েছে কি না দেখতে হবে।
ক্রমিক নম্বর ভুল হলে নম্বর না পাওয়ার
আশঙ্কাই বেশি। এ ছাড়া কোথাও কোনো ভুল
আছে কি না কিংবা কোনো প্রশ্ন বাদ পড়ল
কি না, মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে।
১০. সতর্কতা ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও কিন্তু ফল
খারাপ করার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায়
না। অসতর্কতা অথবা ছোট একটি ভুলের
কারণে উত্তরপত্রই বাতিল হতে পারে।
ওএমআর ফরম ঠিকভাবে পূরণ
করা হয়েছে কি না, পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড
প্রভৃতি ঠিকঠাক লেখা হয়েছে কি না,
তা ভালোভাবে দেখতে হবে। আর অতিরিক্ত
খাতা নেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তা মূল
খাতায় লিখে রাখতে হবে।