social media is full of argument. ব্লগ, ফেসবুক, বন্ধুদের আড্ডা, টকশো, সবই যুক্তি পাল্টা যুক্তির উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডায় জর্জরিত এসব আলাপ-আলোচনায় অধিকাংশ সময়েই ইলজিকাল আর্গুমেন্ট এর মারপ্যাঁচে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হারিয়ে যায়। এরা ইন্টেনশনালি এভাবে ব্যাপারটার মোড় ঘুরিয়ে ফেলে যে শুনতে মনেহয় লজিকাল, আসলে ঘোল খাইয়িয়ে দেয় পাঠক/ শ্রোতাকে।
গত সেমিস্টারে introduction to philosophy ক্লাসে একটা চাপ্টার পড়েছি Logical Fallacy। এখানে Bad argument /weak argument / illogical statement এর রকমফের নিয়ে অনেক সুন্দর আলোচনা হয়েছে। ব্যপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো, ভাবলাম বাংলাদেশি কিছু উদাহারন টেনে অনুবাদ করে ফেলি।এগুলা খুব কমন আর কনভেসিং, পড়তে পড়তে অনেক গুলোই মিলিয়ে নিতে পারবেন নিজের ফেইস করা ঘটনার সাথে। এটা নতুন সোশাল এক্টিভিস্ট আর বিতার্কিক দের কাজে লাগাতে পারে। সাথে বিজ্ঞাপন/ রাজনীতিবিদ দের কথার চালাকি ধরে ফেলা যাবে সহজেই । fallacy এর ডিকশনারি বাংলা পেলাম - "হেত্বাভাস"। চলুন দেখে আসি ফ্যলাসি কত ধরনের হতে পারে -
Slippery Slope
বক্তা একটা চেইন রিএকশন দেখিয়ে সাধারন কিছুকে চরম অবস্থায় নিয়ে যায়।
উদাহরণ
- রাহুলের সব স্ট্যাটাসে সেই মিতুর লাইক কমেন্ট থাকবেই, নিশ্চই ওর সাথেই সারাদিন চ্যাটিং করে। এতদিনে প্রেম হতে আর বাকি আছে নাকি, আর আজকালকার রিলেশনশিপের যা অবস্থা, নিশ্চই ওরা লিটনের ফ্ল্যটেও যায় !
Ad Hominem
প্রতিপক্ষকে অপ্রাসঙ্গিক কিছু (ব্যক্তিজীবনের কোন দুর্বলতা বা কালো অধ্যায়) নিয়ে ইনসাল্ট করা। আমাদের সমাজের বেশি ভাগেরই প্রিয় খেলা Ad Hominem।
উদাহরণ:
-উনার মত ডিভোর্সি কে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্বে দেয়ার কোন মানেই হয় না, যে সংসারই ঠিকমত করতে পারলো না, অফিস সামলাবে কীভাবে!!
-ঐ মন্ত্রীর তো ইয়া মোটা পেট, সারাদিন মনেহয় খাই খাই করে, সে আর দেশের ভালর জন্য কি আর করবে!!
Hestly Generalization -খুব স্বল্প কিছু মানুষের আচরন দেখে ঐ গোত্রিয় সবাইকে নিয়ে স্টেরিওটাইপ মন্তব্য করে ফেলা বা এক পাল্লায় মাপা।
প্রেমে ছেকা খাওয়া পোলাপান এর স্ট্যাটাস এর সবচেয়ে কমন উদাহরন।
ছেলেরা/মেয়েরা এমনি হয়, মেয়ে/ছেলে মাত্রই ধোঁকাবাজ। মানে একজন তারে ছ্যকা দিসে দেখে সে পুরা নারী/পরুষ জাত তুলে গালি দেয়।
-জাফর সাহেব যা কিপটা, আমার দুলাভাইও ওই এলাকার, অমুক এলাকার মানুষ মানেই কিপ্টা।
Red Herring - একটা সাইড ইস্যু এনে অডিয়েন্স কে মূল ট্রাক থেকে সরিয়ে আনে। বেশির ভাগ সময় তারা মূল ইস্যুতে আর ফিরতেই যায় না।
-দুর্নীতির প্রশ্নে শিক্ষক / পুলিশ রা বলেন আমরা অনেক কম টাকা বেতন পাই, আমাদেরো তো সংসার আছে, এগুলা বলে আবেগতাডিত করে দুর্নীতির পয়েন্টে আরক ফিরতেই যায় না।
weak Analogy - কোন একটা আর্গুমেন্ট কে নিজের সুবিধামত এমন দুই বা ততোধিক জিনিসের/ইস্যুর মধ্যে তুলনা করে যেগুলা রিলিভিয়েন্ট না।
-সবচেয়ে কমন উদাহরন মায়ের সাথে বউ এর তুলনা। একজনের সাথে বোমান্টিক সম্পর্ক আরেক জনের সাথে স্নেহের। একজন নিজের মা আর এর জন নিজের সন্তানের মা। দায়িত্ব কর্তব্য দুইটাই পুরা আলাদা। আফসোস তাও যুগ যুগ ধরে বাঙালি এই তেলে জলে মিলাইতে চাইয়্যা ভ্যজাল পাকাচ্ছে ।
False Dichotomy / Black & white - তারা এমন ভাবে ব্যপারটা উপস্থাপন করে যেন এর মাত্র দুইটাই পথ আছে, তার পর কুটযুক্তি দিয়ে একটাকে বাদ দিয়ে দেয়। তার পর দেখায় আমাদের শুধু একটাই পথ খোলা আছে যেটা সে দেখাচ্ছে।
-তুমি একটা ব্যপারে সরকারী দলের সমালচনা করলা ? তার মানে তুমি বিপক্ষ্র দলের লোক!!
Appeal to Ignorance - যেহেতু তিনি কোন একটা বিষয় জানেন না বা বোঝেন না, তাই তিনি মনে করেন ওই ব্যাপারটা হয় অসম্ভাব্য নয়ত অসম্ভব। তারা বলে এর কোন কনক্লুসিভ এভিডিয়েন্স নাই, তাই আপনাকে আমার যুক্তিটাই মানতে হবে।
যেমন -
সে আবার কোন লেখক হইলো নাকি? আমিতো কোন দিন তার লিখা বই কোন দিন পড়ি নাই! ( এখন সে পড়ে নাই মানে তো এই না যে তার বই চলে না, হতে পারে বক্তার বই পড়ার অভ্যাস টাই নাই, তাই সে জানে না।
Appeal to Authority
অনেকেই প্রায়ি কোন একটা মত কারো উপর চাপিয়ে দিতে বাধ্য করে, এই বলে যে, অমুক বিখ্যাত ব্যক্তি এই কথা বলেছে(বিখ্যাত গানের নাইনে/ বিশেষজ্ঞের উক্তি টেনে)। কিন্তু সব স্থান/কাল/পাত্রে সব প্রবাদ খাটে না।
বর্তমানে হুমায়ন আহমেদ এর উপন্যাস থেকে লাইন তুলে দিয়ে এসব খুব বেশি হচ্ছে। এমন হতো যে উনি জীবন দর্শন মূলক কোন বইয়ে এই কথা বলেছেন তাহলে মানা যেত। কিন্তু একটা গল্পে তো ভিলেনের পার্ট ও থাকে আবার হিরোর পার্ট ও থাকে। তাই সেই গল্পের সব লাইনই জীবন দর্শন মূলক না। আর তা নিজের পক্ষের তর্কে জেতার ভাল পন্থাও না।
Appeal to Authority আরো এক ধরনের হয় যেমন কোন জনপ্রিয় লোক একটা কথা বল্লল, কিন্তু সে এমন প্রসংজ্ঞে বলল যে ব্যাপারের সে অভিজ্ঞ না। তাহলে শুধু মাত্র ফেমাস হওয়ার কারনে অনেকেই সেই কথা মেনে নেয় য়ৌক্তিক চিন্তা ছাড়াই। যেমন কোন মডেল যার চার বার ডিভোর্স হয়েছে, সে যদি টিভি/ রেড়িও তে (প্রায়ি যেসব ভালবাসার প্রোগ্রাম হয়) সেখানে ভালবাসা ধরে রাখার কোন সংঙ্গা দাড় করিয়ে দেয়, আর তার ভক্ত কুল তাই বেদ বাক্যের মত মেনে নিয়ে ভাবে, এর কোন ব্যত্তয় হতে পারে না তাহলে তা ফ্যলাসি।
আবার এমন কোন সোর্স যা বিশস্ত না, যেমন - আমি জানি যে তো খুব সুখী মানুষ, ফেসবুকে দেখি তো ।
এখানে তার এই দেখায় ভূলও থাকতে পারে। তাই এমন দলিল ও গ্রহনযোগ্য না।
Begging the question
সাংবাদিক আর টকশো উপস্থাপকরা এর আশ্রয় নিয়ে থাকে, ফেসবুক আর ব্লগেও এদের সংখ্যা কম না। এরা বিরর্থক প্রস্ন করে বিব্রত করতে চেষ্টা করে।
এই যেমন কেউ নারী নির্যাতন নিয়ে লিখলো, কমেন্টে একজন লিখলো কত পুরুষ যে নির্জাতিত হয় এই নিয়ে তো কিছু বল্লেন কেন?
আবার প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসার কোন লিখার মধ্যে কমেন্ট করবে মা-বাবা আমাদের জন্য এত্ত কিছু করেছে তাদের নিয়ে তো লিখলেন না, তাদের প্রতি কি আপনার কোন দায় নেই?
এদের কে বোঝাবে যে একসঙ্গে সব প্রসঙ্গে কথা বলা যায় না। বলা ঠিকও না। এক প্রসঙ্গে কথা বলা মানেই অন্য প্রসঙ্গ ভুলে যাওয়া না।
এগুলা আসলে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন। গড়পড়তা প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নের উদ্দেশ্য কোন উত্তর গ্রহণ করা নয়, বরং প্রশ্নের মধ্যেই নিজের কিছু অনুমিতি ঢুকিয়ে দিয়ে উত্তরকারীকে গুতো দেওয়া। গুতো খেয়ে উত্তরদাতা তখন নিজের অবস্থান উত্থাপনের বদলে আত্মরক্ষার জন্য ব্যাকফুটে চলে যান।
Appel to Pity - ইমোশনালি ব্ল্যকমেইল করে পরিস্থিতি নিজের পক্ষে নেয়া। স্কুল লাইফে তো এমনটা আমরা সবাই করেছি, পাস মার্ক না উঠলে টিচারের কাছে গিয়ে ঘ্যন ঘ্যন করে বলা, স্যার আমার খুব জর ছিল তাই লিখতে পারিনি, এই বারের মত পাস করায় দেন।
অনেকেই যুক্তির বদলে প্রতিযুক্তি না দিয়ে আবেগের দ্বারস্থ হয় । এধরণের তর্কে বিতার্কিক আপনার পয়েন্টগুলো শণাক্ত করবে না, সেই পয়েন্টগুলোর সংলগ্নতা কিংবা স্ববিরোধীতা খুঁজে বের করার চেষ্টাটাও করবে না। শ্রোতার আবেগ যে দিকে বইবে, বিতার্কিক সে দিকেই পাল তুলবে, আবেগের জোরেই জিততে চাইবে ।
Equivocation - রাজনীতিবিদ আর বিতার্কিকরা ইচ্ছা করেই এমন বক্তব্য করেন যার অনেকগুলো অর্থ হতে পারে, তারপর পরিস্থিতি-সাপেক্ষে অনুকূল অর্থগুলোই তারা সামনে ঠেলেন। তখন বলে আমিতো ঐ অর্থে বলি নাই এই অর্থে বলছি।
উদাহরণ: বিচারক যখন বিবাদীকে জিজ্ঞেস করলেন তিনি কেন পার্কিং ফি শোধ করেননি, বিবাদী দাবি করলেন যে সাইনবোর্ডে লেখা ছিল, “Fine for parking here”, তাই তিনি ধরে নিয়েছিলেন জায়গাটা গাড়ি পার্ক করার জন্য “ফাইন”
Post Hoc - একটা ঘটনার পর আরেকটা ঘটনা ঘটলো, তার মনেতো এইট না যে তার জন্য আগের ইভেন্ট টাই দায়ী।
যেমন- বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কিছুর সাথে ধাক্কা খাইছিললাম, এর জন্যই আজকে পরীক্ষা খারাপ হইছে।
-এক্সজুনায়েদ ব্যপ মিউজিক করতো, তার পর সে মারামারির ভিড়িও কইরা ফেসবুকে ছাড়ছে, অতএব, ব্যপ মিউজিকই তাকে নস্ট করছে।
Straw Man - বক্তা এমন কিছু আগের বলে দেয় যা প্রতিপক্ষ বলতে পারে। তারা ব্যপারটাকে misinterpret করে অনেক সিম্পল ভাবে দেখিয়ে প্রথমে false characteristic বানায়, তার পর তার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। আমরা সিরিয়ালের ভিলেন দের প্রায়ি এমনটা করতে দেখি।
Appel to Crowd / tradition - সবাই কিছু বললে বা সবাই কিছু করলেই সেটা ঠিক হয়ে যায় না।
লাখ লাখ লোক ভাগ্য গননায় বিশ্বাস করে, সুতরাং অবশ্যই এটা সত্যি।
রাস্তার খারারের মোটেও অস্বাস্তকর না। তাহলেতো বলতে হয় আমাদের বেশি ভাগের ছেলে বালাই অস্বাস্থ্যকর ।
বর্তমানে বিজ্ঞাপন গুলোতে এ ফ্যলাসির ছড়াছড়ি।
Falacy Falacy - শেষ লাইনটা শুধু ঠিক ( যুক্তি সম্মত) বলবে, মাঝে সব গোজামিল।
এমন অনেক অনেক ফ্যলাসি আছে, এক পোস্টে লিখে শেষ করা যাবে না।
ফ্যলাসি সম্পর্কে অবগত হয়ে মানুষের যুক্তি/পাল্টা যুক্তি প্রয়োগ কিছুটা উন্নত হোক, আরগুমেন্ট গঠণে মানুষ আরেকটু মনযোগী হোক, এই প্রত্যাশায়।
social media is full of argument. ব্লগ, ফেসবুক, বন্ধুদের আড্ডা, টকশো, সবই যুক্তি পাল্টা যুক্তির উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডায় জর্জরিত এসব আলাপ-আলোচনায় অধিকাংশ সময়েই ইলজিকাল আর্গুমেন্ট এর মারপ্যাঁচে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হারিয়ে যায়। এরা ইন্টেনশনালি এভাবে ব্যাপারটার মোড় ঘুরিয়ে ফেলে যে শুনতে মনেহয় লজিকাল, আসলে ঘোল খাইয়িয়ে দেয় পাঠক/ শ্রোতাকে।
গত সেমিস্টারে introduction to philosophy ক্লাসে একটা চাপ্টার পড়েছি Logical Fallacy। এখানে Bad argument /weak argument / illogical statement এর রকমফের নিয়ে অনেক সুন্দর আলোচনা হয়েছে। ব্যপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো, ভাবলাম বাংলাদেশি কিছু উদাহারন টেনে অনুবাদ করে ফেলি।এগুলা খুব কমন আর কনভেসিং, পড়তে পড়তে অনেক গুলোই মিলিয়ে নিতে পারবেন নিজের ফেইস করা ঘটনার সাথে। এটা নতুন সোশাল এক্টিভিস্ট আর বিতার্কিক দের কাজে লাগাতে পারে। সাথে বিজ্ঞাপন/ রাজনীতিবিদ দের কথার চালাকি ধরে ফেলা যাবে সহজেই । fallacy এর ডিকশনারি বাংলা পেলাম - "হেত্বাভাস"। চলুন দেখে আসি ফ্যলাসি কত ধরনের হতে পারে -
Slippery Slope
বক্তা একটা চেইন রিএকশন দেখিয়ে সাধারন কিছুকে চরম অবস্থায় নিয়ে যায়।
উদাহরণ
- রাহুলের সব স্ট্যাটাসে সেই মিতুর লাইক কমেন্ট থাকবেই, নিশ্চই ওর সাথেই সারাদিন চ্যাটিং করে। এতদিনে প্রেম হতে আর বাকি আছে নাকি, আর আজকালকার রিলেশনশিপের যা অবস্থা, নিশ্চই ওরা লিটনের ফ্ল্যটেও যায় !
Ad Hominem
প্রতিপক্ষকে অপ্রাসঙ্গিক কিছু (ব্যক্তিজীবনের কোন দুর্বলতা বা কালো অধ্যায়) নিয়ে ইনসাল্ট করা। আমাদের সমাজের বেশি ভাগেরই প্রিয় খেলা Ad Hominem।
উদাহরণ:
-উনার মত ডিভোর্সি কে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্বে দেয়ার কোন মানেই হয় না, যে সংসারই ঠিকমত করতে পারলো না, অফিস সামলাবে কীভাবে!!
-ঐ মন্ত্রীর তো ইয়া মোটা পেট, সারাদিন মনেহয় খাই খাই করে, সে আর দেশের ভালর জন্য কি আর করবে!!
Hestly Generalization -খুব স্বল্প কিছু মানুষের আচরন দেখে ঐ গোত্রিয় সবাইকে নিয়ে স্টেরিওটাইপ মন্তব্য করে ফেলা বা এক পাল্লায় মাপা।
প্রেমে ছেকা খাওয়া পোলাপান এর স্ট্যাটাস এর সবচেয়ে কমন উদাহরন।
ছেলেরা/মেয়েরা এমনি হয়, মেয়ে/ছেলে মাত্রই ধোঁকাবাজ। মানে একজন তারে ছ্যকা দিসে দেখে সে পুরা নারী/পরুষ জাত তুলে গালি দেয়।
-জাফর সাহেব যা কিপটা, আমার দুলাভাইও ওই এলাকার, অমুক এলাকার মানুষ মানেই কিপ্টা।
Red Herring - একটা সাইড ইস্যু এনে অডিয়েন্স কে মূল ট্রাক থেকে সরিয়ে আনে। বেশির ভাগ সময় তারা মূল ইস্যুতে আর ফিরতেই যায় না।
-দুর্নীতির প্রশ্নে শিক্ষক / পুলিশ রা বলেন আমরা অনেক কম টাকা বেতন পাই, আমাদেরো তো সংসার আছে, এগুলা বলে আবেগতাডিত করে দুর্নীতির পয়েন্টে আরক ফিরতেই যায় না।
weak Analogy - কোন একটা আর্গুমেন্ট কে নিজের সুবিধামত এমন দুই বা ততোধিক জিনিসের/ইস্যুর মধ্যে তুলনা করে যেগুলা রিলিভিয়েন্ট না।
-সবচেয়ে কমন উদাহরন মায়ের সাথে বউ এর তুলনা। একজনের সাথে বোমান্টিক সম্পর্ক আরেক জনের সাথে স্নেহের। একজন নিজের মা আর এর জন নিজের সন্তানের মা। দায়িত্ব কর্তব্য দুইটাই পুরা আলাদা। আফসোস তাও যুগ যুগ ধরে বাঙালি এই তেলে জলে মিলাইতে চাইয়্যা ভ্যজাল পাকাচ্ছে ।
False Dichotomy / Black & white - তারা এমন ভাবে ব্যপারটা উপস্থাপন করে যেন এর মাত্র দুইটাই পথ আছে, তার পর কুটযুক্তি দিয়ে একটাকে বাদ দিয়ে দেয়। তার পর দেখায় আমাদের শুধু একটাই পথ খোলা আছে যেটা সে দেখাচ্ছে।
-তুমি একটা ব্যপারে সরকারী দলের সমালচনা করলা ? তার মানে তুমি বিপক্ষ্র দলের লোক!!
Appeal to Ignorance - যেহেতু তিনি কোন একটা বিষয় জানেন না বা বোঝেন না, তাই তিনি মনে করেন ওই ব্যাপারটা হয় অসম্ভাব্য নয়ত অসম্ভব। তারা বলে এর কোন কনক্লুসিভ এভিডিয়েন্স নাই, তাই আপনাকে আমার যুক্তিটাই মানতে হবে।
যেমন -
সে আবার কোন লেখক হইলো নাকি? আমিতো কোন দিন তার লিখা বই কোন দিন পড়ি নাই! ( এখন সে পড়ে নাই মানে তো এই না যে তার বই চলে না, হতে পারে বক্তার বই পড়ার অভ্যাস টাই নাই, তাই সে জানে না।
Appeal to Authority
অনেকেই প্রায়ি কোন একটা মত কারো উপর চাপিয়ে দিতে বাধ্য করে, এই বলে যে, অমুক বিখ্যাত ব্যক্তি এই কথা বলেছে(বিখ্যাত গানের নাইনে/ বিশেষজ্ঞের উক্তি টেনে)। কিন্তু সব স্থান/কাল/পাত্রে সব প্রবাদ খাটে না।
বর্তমানে হুমায়ন আহমেদ এর উপন্যাস থেকে লাইন তুলে দিয়ে এসব খুব বেশি হচ্ছে। এমন হতো যে উনি জীবন দর্শন মূলক কোন বইয়ে এই কথা বলেছেন তাহলে মানা যেত। কিন্তু একটা গল্পে তো ভিলেনের পার্ট ও থাকে আবার হিরোর পার্ট ও থাকে। তাই সেই গল্পের সব লাইনই জীবন দর্শন মূলক না। আর তা নিজের পক্ষের তর্কে জেতার ভাল পন্থাও না।
Appeal to Authority আরো এক ধরনের হয় যেমন কোন জনপ্রিয় লোক একটা কথা বল্লল, কিন্তু সে এমন প্রসংজ্ঞে বলল যে ব্যাপারের সে অভিজ্ঞ না। তাহলে শুধু মাত্র ফেমাস হওয়ার কারনে অনেকেই সেই কথা মেনে নেয় য়ৌক্তিক চিন্তা ছাড়াই। যেমন কোন মডেল যার চার বার ডিভোর্স হয়েছে, সে যদি টিভি/ রেড়িও তে (প্রায়ি যেসব ভালবাসার প্রোগ্রাম হয়) সেখানে ভালবাসা ধরে রাখার কোন সংঙ্গা দাড় করিয়ে দেয়, আর তার ভক্ত কুল তাই বেদ বাক্যের মত মেনে নিয়ে ভাবে, এর কোন ব্যত্তয় হতে পারে না তাহলে তা ফ্যলাসি।
আবার এমন কোন সোর্স যা বিশস্ত না, যেমন - আমি জানি যে তো খুব সুখী মানুষ, ফেসবুকে দেখি তো ।
এখানে তার এই দেখায় ভূলও থাকতে পারে। তাই এমন দলিল ও গ্রহনযোগ্য না।
Begging the question
সাংবাদিক আর টকশো উপস্থাপকরা এর আশ্রয় নিয়ে থাকে, ফেসবুক আর ব্লগেও এদের সংখ্যা কম না। এরা বিরর্থক প্রস্ন করে বিব্রত করতে চেষ্টা করে।
এই যেমন কেউ নারী নির্যাতন নিয়ে লিখলো, কমেন্টে একজন লিখলো কত পুরুষ যে নির্জাতিত হয় এই নিয়ে তো কিছু বল্লেন কেন?
আমার প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসার কোন লিখার মধ্যে কমেন্ট করবে মা-বাবা আমাদের জন্য এত্ত কিছু করেছে তাদের নিয়ে তো লিখলেন না, তাদের প্রতি কি আপনার কোন দায় নেই?
এদের কে বোঝাবে যে একসঙ্গে সব প্রসঙ্গে কথা বলা যায় না। বলা ঠিকও না। এক প্রসঙ্গে কথা বলা মানেই অন্য প্রসঙ্গ ভুলে যাওয়া না।
এগুলা আসলে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন। গড়পড়তা প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নের উদ্দেশ্য কোন উত্তর গ্রহণ করা নয়, বরং প্রশ্নের মধ্যেই নিজের কিছু অনুমিতি ঢুকিয়ে দিয়ে উত্তরকারীকে গুতো দেওয়া। গুতো খেয়ে উত্তরদাতা তখন নিজের অবস্থান উত্থাপনের বদলে আত্মরক্ষার জন্য ব্যাকফুটে চলে যান।
Appel to Pity - ইমোশনালি ব্ল্যকমেইল করে পরিস্থিতি নিজের পক্ষে নেয়া। স্কুল লাইফে তো এমনটা আমরা সবাই করেছি, পাস মার্ক না উঠলে টিচারের কাছে গিয়ে ঘ্যন ঘ্যন করে বলা, স্যার আমার খুব জর ছিল তাই লিখতে পারিনি, এই বারের মত পাস করায় দেন।
অনেকেই যুক্তির বদলে প্রতিযুক্তি না দিয়ে আবেগের দ্বারস্থ হয় । এধরণের তর্কে বিতার্কিক আপনার পয়েন্টগুলো শণাক্ত করবে না, সেই পয়েন্টগুলোর সংলগ্নতা কিংবা স্ববিরোধীতা খুঁজে বের করার চেষ্টাটাও করবে না। শ্রোতার আবেগ যে দিকে বইবে, বিতার্কিক সে দিকেই পাল তুলবে, আবেগের জোরেই জিততে চাইবে ।
Equivocation - রাজনীতিবিদ আর বিতার্কিকরা ইচ্ছা করেই এমন বক্তব্য করেন যার অনেকগুলো অর্থ হতে পারে, তারপর পরিস্থিতি-সাপেক্ষে অনুকূল অর্থগুলোই তারা সামনে ঠেলেন। তখন বলে আমিতো ঐ অর্থে বলি নাই এই অর্থে বলছি।
উদাহরণ: বিচারক যখন বিবাদীকে জিজ্ঞেস করলেন তিনি কেন পার্কিং ফি শোধ করেননি, বিবাদী দাবি করলেন যে সাইনবোর্ডে লেখা ছিল, “Fine for parking here”, তাই তিনি ধরে নিয়েছিলেন জায়গাটা গাড়ি পার্ক করার জন্য “ফাইন”
Post Hoc - একটা ঘটনার পর আরেকটা ঘটনা ঘটলো, তার মনেতো এইট না যে তার জন্য আগের ইভেন্ট টাই দায়ী।
যেমন- বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কিছুর সাথে ধাক্কা খাইছিললাম, এর জন্যই আজকে পরীক্ষা খারাপ হইছে।
-এক্সজুনায়েদ ব্যপ মিউজিক করতো, তার পর সে মারামারির ভিড়িও কইরা ফেসবুকে ছাড়ছে, অতএব, ব্যপ মিউজিকই তাকে নস্ট করছে।
Straw Man - বক্তা এমন কিছু আগের বলে দেয় যা প্রতিপক্ষ বলতে পারে। তারা ব্যপারটাকে misinterpret করে অনেক সিম্পল ভাবে দেখিয়ে প্রথমে false characteristic বানায়, তার পর তার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। আমরা সিরিয়ালের ভিলেন দের প্রায়ি এমনটা করতে দেখি।
Appel to Crowd / tradition - সবাই কিছু বললে বা সবাই কিছু করলেই সেটা ঠিক হয়ে যায় না।
লাখ লাখ লোক ভাগ্য গননায় বিশ্বাস করে, সুতরাং অবশ্যই এটা সত্যি।
রাস্তার খারারের মোটেও অস্বাস্তকর না। তাহলেতো বলতে হয় আমাদের বেশি ভাগের ছেলে বালাই অস্বাস্থ্যকর ।
বর্তমানে বিজ্ঞাপন গুলোতে এ ফ্যলাসির ছড়াছড়ি।
Falacy Falacy - শেষ লাইনটা শুধু ঠিক ( যুক্তি সম্মত) বলবে, মাঝে সব গোজামিল।
এমন অনেক অনেক ফ্যলাসি আছে, এক পোস্টে লিখে শেষ করা যাবে না।
ফ্যলাসি সম্পর্কে অবগত হয়ে মানুষের যুক্তি/পাল্টা যুক্তি প্রয়োগ কিছুটা উন্নত হোক, আরগুমেন্ট গঠণে মানুষ আরেকটু মনযোগী হোক, এই প্রত্যাশায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৩