মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এ লঙ্কাধিপতি রাবণকে কখনওই সম্পূর্ণ ভিলেন হিসেবে প্রতিপন্ন করা হয়নি। বরং একথা বলা যায়, রাবণ রামায়ণ-কাহিনির অ্যান্টাগনিস্ট। এই বিশেষ চরিত্রটিকে ঘিরে এত বেশি কথা, উপকথা এবং অতিকথা এই ভারতভূমে আবর্তিত হয়েছে যে, রামায়ণের বর্ণনাই অনেক সময়ে চলে গিয়েছে অন্তরালে। রাবণ হয়ে উঠেছেন এক পরিপূর্ণ খলনায়ক। কিন্তু রামায়ণ অনুসরণেই বলা যায়, রাবণ অজস্র গুণে গুণান্বিত এক ব্যক্তিত্ব। কিছু দুর্বলতা হেতু তাঁর পতন ঘটে— এই মাত্র।
এখানে রাবণ চরিত্রের তেমন কয়েকটি দিকের কথা তুলে ধরা হল, যা সাধারণত আলোচনার আওতায় আসে না।
১. শাসক হিসেবে রাবণকে কোথাও অপশাসক বা নিষ্ঠুর বলা হয়নি। তিনি স্বর্ণলঙ্কার অধিপতি। ফলে বোঝাই যায়, এক সমৃদ্ধ সাম্রাজ্য তিনি শাসন করতেন। আর সুশাসন ছাড়া সমৃদ্ধি সম্ভব নয়, এ কথা কে না জানে!
২. যুদ্ধক্ষেত্রে আহত অবস্থায় পড়ে থাকাকালীন অবস্থায় রাবণকে দেখতে যান লক্ষ্মণ। রাবণ তাঁকে বিবিধ বিষয়ে জ্ঞান দান করেন। তবে রাবণের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল ‘রাজধর্ম’ কী এবং কীভাবে তা পালন করতে হয়।
৩. রাবণ ছিলেন এক অসামান্য বীণাবাদক। তিনি নিজেই তাঁর বীণার নকশা করেছিলেন। তিনি ‘শিব তাণ্ডব’ স্ত্রোত্রেরও রচয়িতা।
৪. রাবণ পরম শিবভক্ত ছিলেন। রাবণকে শিব এক আশ্চর্য বর দান করেন। সেই বরে তিনি প্রায় অমরত্ব প্রাপ্ত হন।
৫. রাবণ ছিলেন এক দক্ষ চিকিৎসক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তাঁর বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল। ‘নাড়ি পরীক্ষা’, ‘অর্ক শাস্ত্র’, ‘অর্ক পরীক্ষা’ প্রভৃতি বিখ্যাত আয়ুর্বেদ শাস্ত্রগ্রন্থ রাবণ কর্তৃক লিখিত বলে প্রচলিত। ক্ষত চিকিৎসায় তাঁর অবদানের কথা আজও আয়ুর্বেদ স্বীকার করে।
৬. রাবণের পাণ্ডিত্যের খ্যাতি ছিল ভুবনবিদিত। চার বেদ এবং ছয় উপনিষদ তাঁর নখদর্পণে ছিল।
৭. জ্যোতির্বিদ্যায় রাবণের বিশেষ দখল ছিল। একথা রামায়ণে বার বার উল্লিখিত হয়েছে যে, তিনি নাকি গ্রহতারকাদের নির্দেশ দিতেও পারতেন। আসলে তিনি গ্রহতারকার ভবিষ্যৎ অবস্থান অনর্গল বলে যেতে পারতেন।
৮. রাবণ এবং তাঁর ভাই কুম্বকর্ণ ছিলেন বিষ্ণুর দ্বাররক্ষক। তাঁরা ব্রহ্মকুমারদের দ্বারা অভিশাপগ্রস্ত হন। তাতেই তাঁদের রাক্ষসজন্ম ঘটে।
৯. রাবণকে ত্রিলোকের অধীশ্বর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে বহু স্থানে। সুতরাং তাঁর ক্ষমতা যে কোনও নৃপতির থেকে অনেক বেশি ছিল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
১০. অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়ায় রাবণ ও শিবলিঙ্গ একত্রে পূজিত হন। এ থেকে বোঝা যায়, গণস্মৃতিতে রাবণ চিরকালই খলনায়ক ছিলেন না।
আরও বিস্তারিত ঃ এখানে ক্লিক করুনহিহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এ লঙ্কাধিপতি রাবণকে কখনওই সম্পূর্ণ ভিলেন হিসেবে প্রতিপন্ন করা হয়নি। বরং একথা বলা যায়, রাবণ রামায়ণ-কাহিনির অ্যান্টাগনিস্ট। এই বিশেষ চরিত্রটিকে ঘিরে এত বেশি কথা, উপকথা এবং অতিকথা এই ভারতভূমে আবর্তিত হয়েছে যে, রামায়ণের বর্ণনাই অনেক সময়ে চলে গিয়েছে অন্তরালে। রাবণ হয়ে উঠেছেন এক পরিপূর্ণ খলনায়ক। কিন্তু রামায়ণ অনুসরণেই বলা যায়, রাবণ অজস্র গুণে গুণান্বিত এক ব্যক্তিত্ব। কিছু দুর্বলতা হেতু তাঁর পতন ঘটে— এই মাত্র।
এখানে রাবণ চরিত্রের তেমন কয়েকটি দিকের কথা তুলে ধরা হল, যা সাধারণত আলোচনার আওতায় আসে না।
১. শাসক হিসেবে রাবণকে কোথাও অপশাসক বা নিষ্ঠুর বলা হয়নি। তিনি স্বর্ণলঙ্কার অধিপতি। ফলে বোঝাই যায়, এক সমৃদ্ধ সাম্রাজ্য তিনি শাসন করতেন। আর সুশাসন ছাড়া সমৃদ্ধি সম্ভব নয়, এ কথা কে না জানে!
২. যুদ্ধক্ষেত্রে আহত অবস্থায় পড়ে থাকাকালীন অবস্থায় রাবণকে দেখতে যান লক্ষ্মণ। রাবণ তাঁকে বিবিধ বিষয়ে জ্ঞান দান করেন। তবে রাবণের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল ‘রাজধর্ম’ কী এবং কীভাবে তা পালন করতে হয়।
৩. রাবণ ছিলেন এক অসামান্য বীণাবাদক। তিনি নিজেই তাঁর বীণার নকশা করেছিলেন। তিনি ‘শিব তাণ্ডব’ স্ত্রোত্রেরও রচয়িতা।
৪. রাবণ পরম শিবভক্ত ছিলেন। রাবণকে শিব এক আশ্চর্য বর দান করেন। সেই বরে তিনি প্রায় অমরত্ব প্রাপ্ত হন।
৫. রাবণ ছিলেন এক দক্ষ চিকিৎসক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তাঁর বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল। ‘নাড়ি পরীক্ষা’, ‘অর্ক শাস্ত্র’, ‘অর্ক পরীক্ষা’ প্রভৃতি বিখ্যাত আয়ুর্বেদ শাস্ত্রগ্রন্থ রাবণ কর্তৃক লিখিত বলে প্রচলিত। ক্ষত চিকিৎসায় তাঁর অবদানের কথা আজও আয়ুর্বেদ স্বীকার করে।
৬. রাবণের পাণ্ডিত্যের খ্যাতি ছিল ভুবনবিদিত। চার বেদ এবং ছয় উপনিষদ তাঁর নখদর্পণে ছিল।
৭. জ্যোতির্বিদ্যায় রাবণের বিশেষ দখল ছিল। একথা রামায়ণে বার বার উল্লিখিত হয়েছে যে, তিনি নাকি গ্রহতারকাদের নির্দেশ দিতেও পারতেন। আসলে তিনি গ্রহতারকার ভবিষ্যৎ অবস্থান অনর্গল বলে যেতে পারতেন।
৮. রাবণ এবং তাঁর ভাই কুম্বকর্ণ ছিলেন বিষ্ণুর দ্বাররক্ষক। তাঁরা ব্রহ্মকুমারদের দ্বারা অভিশাপগ্রস্ত হন। তাতেই তাঁদের রাক্ষসজন্ম ঘটে।
৯. রাবণকে ত্রিলোকের অধীশ্বর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে বহু স্থানে। সুতরাং তাঁর ক্ষমতা যে কোনও নৃপতির থেকে অনেক বেশি ছিল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
১০. অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়ায় রাবণ ও শিবলিঙ্গ একত্রে পূজিত হন। এ থেকে বোঝা যায়, গণস্মৃতিতে রাবণ চিরকালই খলনায়ক ছিলেন না।
আরও বিস্তারিত ঃ এখানে ক্লিক করুন
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭