৩০ বছর আগে জন্ম এইচআইভি-র। কোথায়, কখন, তা এতদিন জানা ছিল না। ৩০ বছর ধরে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। এবার জানা গেল এর উত্পত্তিস্থল।
হাজার-হাজার জীবাণুর জেনেটিক অ্যানালিসিসের পর খোঁজ মিলল মারণ এইচআইভি-র জন্মস্থানের। কিনশসা শহরে জন্ম এই ভাইরাসের। সেখান থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। সে সময় কিনশসা বেলজিয়ন কঙ্গোর রাজধানী ছিল। লিয়োপল্ডভিলের নামে পরিচিত ছিল এই শহর। এটি ছিল মধ্য আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শহর এবং 'বুশমিট'-এর বড় বাজার। সমস্ত সেন্ট্রাল আফ্রিকা থেকে প্রচুর পরিমাণে লোক এখানে যাতায়াত করতেন। যার ফলে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে বিশ্বের ৩ কোটি ৫০ লক্ষ লোক এই ভাইরাসের গ্রাসে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের মতে, 'HIV-1 -এর খোঁজের ৩০ বছর পর আমরা সফল ভাবে জানতে পেরেছি যে, মধ্য আফ্রিকার শহর কিনশসা থেকেই ১৯২০-র দশকে এই ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। আমরা বেশ কয়েকটি গবেষণা করেছি। তার ফলাফল প্রতিবার এই শহরের দিকেই ইঙ্গিত করেছে। HIV-র সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন দিক অধ্যয়ন করে আমরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি।'
পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এ-ও জানতে পারেন যে, ১৩ প্রকারের এই ভাইরাসগুলি চিম্পাঞ্জি, গোরিলা, বাঁদর এবং পরে মানুষকে আক্রমণ করে। এঁদের মধ্যে শুধুমাত্র HIV-1 গ্রুপ এম এক মহামারীর মতো সমস্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। গবেষণায় তাঁরা জানতে পারেন, ১৯৬০-এর দশকে গ্রুপ এম এবং গ্রুর ও-- এই দুই ধরনের ভাইরাস এক সঙ্গে প্রভাব বিস্তার করছিল। কিন্তু পরে গ্রুপ এম ৩ গুণ বেশি দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েত শুরু করে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অলিভার পাইবস জানান, 'কিনশসার উন্নয়ন সে সময় খুব দ্রুতগতিতে হচ্ছিল। এটি মধ্য আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শহর এবং বাকি কঙ্গোর সঙ্গে খুব ভালো ভাবে জড়িত ছিল। পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে জানতে পেরেছি, ১৯৪০-এর দশকের শেষে রেলের মাধ্যমে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ প্রতি মাসে কিনশসা যাতায়াত করতেন। আমাদের জেনেটিক ডাটা অনুযায়ী, এই সময়ই পশ্চিম ইওরোপের মতো বড় দেশ কঙ্গোয়ে HIV দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।'