বহু বছর পূর্বে এক পরিচিত লোকের বাসার দেয়ালে দেখা হয়েছিলো কাশ্মীর এর ছবি। এরপর বিভিন্ন প্রত্রিকা,ভারতীয় চলচ্চিত্রে এবং অন্যান্য বিভিন্ন ভাবে কাশ্মীরকে দেখে রুপসুধা যেন পুরোপুরি মিটছিলোনা। সবসময় মনে একটা আশা থাকত কবে যাব কবে যাব। গত ঈদুল ফিতর এ কাশ্মীর যাবার সুযোগ হয়েছিলো। মোট ৮ দিনের ভ্রমণে ভারতের কাশ্মীর, আগ্রা ও দিল্লী ভ্রমণ করে প্রকৃতি ও মোঘল যুগের তৈরি স্থাপত্যের রুপসুধা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করার সুযোগ হয়েছিলো।
পবিত্র ঈদুল ফিতর এর রাতে ঢাকা থেকে সড়কপথে আমরা রওনা দেই বেনাপোল এর উদ্দেশ্যে। পরদিন সকালে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভারতের মাটিতে পা রাখি। কিছু ডলার ভাঙ্গিয়ে ভারতীয় রুপী করে নেই। তবে ডলার কলকাতায় ভাঙ্গালেই সবচেয়ে ভালো রেট পাওয়া যায়। ইতিপূর্বে আরো কয়েকবার ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকলেও অন্যান্যবার দলে সদস্যসংখ্যা থাকত আরো বেশি। আর এবার সব কিছুর ব্যবস্থা আমাকেই করতে হয়েছিলো যেহেতু আমার সহযাত্রীর ছিলো এবারই প্রথম ভারত ভ্রমণ। সকাল ৯.৩০ মিনিটে বাসে উঠি সেই বাস কলকাতায় পৌছে দুপুর ১.৩০ মিনিটে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বেনাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতায় বাস, ট্রেন দুইভাবেই যাওয়া সম্ভব। কলকাতায় পৌছে পরিচিত এজেন্ট থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে দিল্লীর উদ্দেশ্যে রওনা দেই বিকাল ৪.৫০ মিনিটে। উল্লেখ্য রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনটি শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে নয়া দিল্লী স্টেশনে পৌছায় সপ্তাহের প্রতিদিন। এবং এই ট্রেনের সময় নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত ভালো।
দিল্লীতে পৌছে নাস্তা ও অন্যান্য কাজ সেরে চলে যাই নয়াদিল্লীস্ত ইন্দিরা গান্ধী বিমান বন্দরে। সেখান থেকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এর বিমানে রওনা দেই কাশ্মীর এর রাজধানী শ্রীনগর এর উদ্দেশ্যে। শুরু হয়ে যায় মনের ভিতর উত্তেজনা। অনেকটা সাহিত্যিকের মতো বলতে ইচ্ছা হয় পাইলাম ,অবশেষে ইহাকে আমি পাইলাম।উল্লেখ্যযে, সড়ক বা রেলপথেও শ্রীনগর যাওয়া যায়, তবে প্রথমে জম্মু হয়ে তারপর সড়কপথে যেতে হবে।
প্রায় ১ ঘন্টা ১০ মিনিট বিমান ভ্রমণ শেষে পৌছে যাই কাশ্মীর। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা সেরে বাইরে পা দিয়েই অন্য সব পর্যটকের মতো আমরাও বুঝতে পারি ভারতের অন্যান্য স্থানের চেয়ে এস্থান সম্পূর্ণ আলাদা। এখানকার পরিবেশ ,মানুষের চেহারা, আচারভঙ্গী সম্পূর্ন অন্যরকম। এয়ারপোর্ট থেকে বের হবার পর মনে হলো হয়তো কোন ক্যান্টনমেন্ট এলাকাতে প্রবেশ করছি। রাস্তায় সেনাটহল, ভারী সাঁজোয়া যানের পাহাড়া দেখে প্রথমেই মনে মনে একটু দমে গিয়েছিলাম। অবশ্য ড্রাইভার আশ্বস্ত করলেন যে, এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
ভয়ের কিছু নেই। অন্য প্রতিবারের মতো এবারো ড্রাইভার জিজ্ঞেস করলেন যে আমরা কি গুজরাটি না দক্ষিণ ভারতের লোক। মনে হয় হিন্দী অনর্গল বলতে পারা (সিরিয়াল দেখে!) এবং গাত্র বর্ণের জন্য এই মšতব্য। যাইহোক প্রায় ২৫ মিনিট সংক্ষিপ্ত যাত্রা শেষে পৌছলাম বিখ্যাত নাগিন লেকে। আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয় দিলশাদ গ্রুপের হাউজবোটে। আখরোট ও পাইন কাঠ দিয়ে তৈরী সম¯ত অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ ভাসমান হোটেল। বোটে বিশ্রাম নিয়ে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা দেই বিখ্যাত হযরতবাল মসজিদে। কথিত আছে , এ মসজিদে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পবিত্র চুল মোবারক সংরক্ষিত আছে। নিরাপত্তার কারণে এখন এটি অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে রাখা হয়েছে।এখানে ছবি তোলার
নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কেন যেন আমাদের কেউ বাধা দেয় নাই। ঐদিন বিকালে ডাল লেক এবং তার আশে পাশে ঘুরেই সন্তুুষ্ট থাকতে হয়। উল্লেখ্য রাত ১০ টার পর কাশ্মীর এ রাস্তায় অযথা ঘোরাঘুরি করা নিষেধ। রাত ৮ টার মধ্যেই সমস্ত যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। ঈদের সময় বলে হয়ত একটু ছাড় ছিলো।
পরদিন সকালে নাস্তা করে রওনা দেই সোনমার্গ। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দুরে এই পর্যটনকেন্দ্রটি নানা কারণে বিখ্যাত।এখান তেকেই শুরু হয় বিখ্যাত লে-লাদাখ হাইওয়ে। অমরনাথ যাত্রার বেসস্টেশনও এটি। অনিন্দ্য সুন্দর এই যায়গাটি আগষ্টের এই উত্তপ্ত সময়েও তাপমাত্রা ছিলো ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে এই সোনমার্গে। ফানাহ, মিশন কাশ্মীর, ইত্যাদি সিনেমা এখানেই চিত্রায়িত হয়েছিলো। সোনমার্গ থেকে ঘোড়ায় চরে বা পায়ে হেঁটে যাওয়া যায় ৪ কিমি দুরের খাজওয়াস হিমবাহে।
উল্লেখ্যযে, গাইড এবং ঘোড়া ভাড়া নেবার সময় যাচাই করে দামাদামি করে নেওযা ভালো। অত্যন্ত সুন্দর ও আকর্ষনীয় এ হিমবাহটি শীতকালে স্কী প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। অবিশ্বাষ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে চলা খর¯্রােতা পাহাড়ী লিডার নদী একে করেছে আরো সুন্দর।
পরদিন রওনা হই কাশ্মীর এর সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগাঁও। প্রায় ১১০ কিমি দুরে অবস্থিত এ স্থানের সৌন্দর্য অন্যন্ত আকর্ষনীয়। পথে এক জায়গায় নেমে বিখ্যাত আপেল
বাগানে আপেল খাওয়া, বিখ্যাত কাশ্মিরী চা ‘কাহওয়া’ পান অতপঃর আবার রওনা দিয়ে বেলা প্রায় ১১ টায় পৌছাই পেহেলগাঁও। উল্লেখ্য এখান থেকেই হিন্দুদের অন্যতম তীর্থস্থান অমরনাথ যাত্রা শুরু হয়। বরফ দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা শিবলিঙ্গ দুর্গম পাহাড়ে এক অনবদ্য ধর্মীয় আবহের সুষ্টি করেছে। প্রতিবছর হাজার হাজার লোক এই স্থানটি ভ্রমণ করে বলে এখানকার নিরাপত্তা অত্যন্ত ভালো। পেহেলগাঁও থেকে আমরা যথারিতী ঘোড়া ভাড়া করে যাই কুনজমার্গ, ডেবিয়ান,মিনি সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি সহ আরো অনেক স্থানে। অসাধারণ সুন্দর এই যায়গাগুলো দেখতে প্রায় ৫ ঘন্টা সময় লেগে যায় । পেহেলগাঁও ফিরে এসে দুপুরে খাই বিখ্যাত ’ওয়াজওয়ান’। মাংস ও মাছের ৭ পদের এই খাবারটি কাশ্মির এর এক বিখ্যাত খাবার। ফেরার সময় কাশ্মীর এর ভুবন বিখ্যাত শাল,সালোয়ার কামিজ,জাফরান, শুকনো ফল ইত্যাদি কেনা যায়। তবে কেনার সময় দেখে শুনে যাচাই করে কেনাই ভালো। উল্লেখ্য পশ্চিমা টুরিস্টের আধিক্যের কারণে শ্রীনগরের প্রায় সবখানেই ক্রেডিট কার্ড সুবিধা পাওয়া যায়।
পরদিন আমরা শ্রীনগরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থান যেমন হরিপর্বত(এক স্থানে তিন ধর্মের তীর্থস্থান), ডাল লেক, নাগিন লেক, শালিমার গার্ডেন ইত্যাদি স্থান ভ্রমণ করি। শ্রীনগরের বিভিন্ন স্থানে নিজেদের বাংলাদেশী পরিচয় দিলে একটু অন্যরকম খাতির পাওয়া যায়। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এখানে সবার অত্যন্ত প্রিয় খেলোয়ার। পরদিন সকালে মনে একরাশ স্ফুর্তি নিয়ে ফিরে আসি দিল্লী। ফেরার সময় বইয়ে পড়া একটা কথা মনে হতে থাকে, জীবনে অন্ততঃ একবার কাশ্মীর না গেলে সত্যিই বৃথা। এখানে একটি কথা উল্লেখ না করলেই নয় যে, কাশ্মীর এর অধিবাসীরা ধর্মীয় দিক থেকে খুবই সংবেদনশীল। তাই কোন মন্তব্য করার সময় অবশ্যই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আমরা প্রথমদিন থেকেই ব্যাপারটা বুঝে সে অনুযায়ী চলার কারণে অনেক যায়গায় কিছু বিশেষ সুবিধা পেয়েছি। ভারতের অন্য কোন স্থান হতে ক্রয় করা সীম এখানে কাজ করেনা। ফোনের দোকান বা হোটেল/হাইজবোটের পয়িনদেও কাছে ভাড়ায় সীম পাওয় যায়।
কী কী দেখবেনঃ
গুলমার্গ, সোনমার্গ,পেহেলগাঁও, ডাল লেক, নাগিন লেক, হযরতবাল মসজিদ, মোঘল গার্ডেন, হরিপর্বত, শালিমার বাগ ইত্যাদি। তবে সময় ও সুযোগ থাকলে আরো বেশি স্থানে যাবার পরিকল্পনা করা যায়। গাড়ী বা অন্যান্য যানবাহন ঠিক করার সময় এই ব্যাপারগুলো বলে আলোচনা করে নেওয়া ভালো।
কী কী খাবেনঃ
ফল,শুকনো ফল, ‘কাহওয়া’ চা, বিরানী, ওয়াজওয়ান, তন্দুর, কাবাব, ইত্যাদি। কেনাকাটা করতে পারেন শাল, সালোয়ার, জাফরান, শুকনো ফল,ফুলের বীজ, ‘কাহওয়া’ চা ইত্যাদি। তবে সতর্কতার সাথে দেখেশুনে কেনা ভালো।
শ্রীনগরে থাকার জন্য যোগাযোগ করতে পারেনঃ
লতিফ/ফয়াজ(কেয়ার টেকার, দিলশাদ গ্রুপ হাউজবোট, নাগিন লেক, কাশ্মীর)ঃ +৯১৯৭৯৭৭১২৯২১, মনসুর (গাড়ী চালক) ঃ +৯১৯০৮৮১৯৬২০৫.অথবা হোটেল সেন্টার পয়েন্ট, বিশাম্বর নগর, শ্রীনগর, কাশ্মীর, +৯১১৯৪২৪৮৬৫৬৫। মি. রিয়াজ কারনাই ,ম্যানেজার ,পিস অব মাইন্ড হাউজবোট, ফোন: +৯১৯৯০৬৬৬৫৮৬৫। ইমেইল [email protected]
কলকাতা থেকে ট্রেন/বিমান টিকিট কিনতে বা ডলার ভাঙ্গাতে যোগাযোগ করতে পারেনঃ তাজ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেল , ১৫ মারকুইস স্ট্রীট, কলকাতা, ফোন +৯১৩৩২৮৩২০৩৩।
ভ্রমণ খরচের বিবরণঃ
**ঢাকা থেকে বেনাপোল ঃ
১) বাসঃ সৌদিয়া/গ্রিন লাইন/সোহাগ পরিবহন/শ্যামলী ভাড়াঃ এসি ১১০০/-১৫০০/- টাকা নন এসি ঃ ৭০০/-১০০০/- টাকা (ভ্রমণ কর বাদে) ২) ট্রেন ঃ ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে পারেন সপ্তাহে ৩ দিন ভাড়া (ভ্রমণকর ৫০০/- টাকা সহ) মোট ১২০০/-৩০০০/- টাকা
** বেনাপোল থেকে কলকাতা যাওয়া যায় বাসে অথবা ট্রেনে । বাসে খরচ পরবে ভারতীয় রুপী ২০০/-৩৫০/- অথবা বনগাঁ থেকে লোকাল ট্রেনে যাওয়া যায় ২০/- রুপী দিয়ে কলকাতার শিয়ালদহ জংশন পর্যন্ত।কলকাতা থেকে ট্রেনে যাওয়া যায় সরাসরি দিল্লী পর্যন্ত তারপর সেখান থেকে ট্রেনে বা বাসে করে জম্মু পর্যন্ত ভাড়া শ্রেণীভেদে ২০০/- রুপী থেকে ৩০০০/- রুপী । অথবা কলকাতা থেকে সরাসরি ট্রেনে ৪৪ ঘন্টা লাগে জম্মু যেতে ভাড়া পরবে ৭০০/- রুপী থেকে ৩০০০/- রুপী। জম্মু থেকে বাসে বা জিপ ভাড়া করে অথবা শেয়ারে যেতে পারবেন ২৯৩ কিমি দুরে শ্রীনগর ভাড়া পরবে ৩০০/- রুপী থেকে ১২০০/- রুপী। কলকাতায় ফেয়ারলী প্লেস থেকে বিদেশী কোটায় টিকেট কেনা যায় শুধূ পাসপোর্ট ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে।এছাড়া বিভিন্ন এজেন্ট এর কাছ থেকে টিকিট কেনা যায়।
এছাড়া সপ্তাহের প্রতি দিন কলকাতা/দিল্লী থেকে বিমানে যাওয়া যায় শ্রীনগর, ভাড়া মোটামুটি ৩৫০০/- রুপী থেকে ৭৫০০/- রুপী ।
হোটেলের খরচ ঃ মানভেদে শ্রীনগরে হোটেলের খরচ ৬০০/- ৭০০০/- রুপী পর্যন্ত (ব্রেকফাস্ট সহ)। আর নাগিন লেকে বা ডাল লেকে হাউজবোটে খরচ পরবে মানভেদে ২৫০০/- রুপী থেকে ১০০০০/- রুপী পর্যন্ত (ব্রেকফাস্ট সহ)।তবে কিছু গেস্ট হাউজ আছে যেখানে ব্যাচেলর হিসেবে গেলে খরচ অনেক কমে যাবে ৩০০/-৬০০/ রুপী।
খাওয়া দাওয়াঃ কাশ্মীর বা শ্রীনগরে খাবার খরচ মোটামুটি সাশ্রয়ী। একবেলা ৮০-৩০০ রুপীতে খাওয়া যাবে। শ্রীনগরে লালচকে খাবারের অনেক রেষ্টুরেন্ট আছে । শ্রীনগর গেলে অবশ্যই আহমেদ রেস্টুরেন্ট থেকে ঐতিহ্যবাহী ওয়াজওয়ান খেয়ে দেখবেন খরচ পরবে পদ অনুযায়ী দুই জনের জন্য মোট ৫০০/-১২০০/ রুপী।
শ্রীনগরে ভ্রমণের সর্বশ্রেষ্ঠ সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত গেলে স্নোফল দেখা যায়। তবে এই সময়ে ভ্রমণ করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। বরফপাতের ফলে প্রায়ই বেশিরভাগ টুরিস্ট স্পট বন্ধ থাকে। হাতে সময় থাকলে যেতে পারেন ৪০০ কিমি দুরে লাদাখ। বলা হয় পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর, আনন্দময় এবং অ্যাডভেঞ্চারপূর্ণ সফর হলো সড়ক পথে শ্রীনগর থেকে লাদাখ ভ্রমণ
আরো ছবি দেখতে এখানে ক্লিক করতে পারেন
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৪