somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোশাকের অন্তরালে !!!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশে ধনী গরীব এর হিসাব করা আমার উদ্দেশ্য নয়।আমি যা বলতে চাই তা হলো ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ ব্যতীত দেশের প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষের রিতি- নীতি , আচার –ব্যবহার, কৃষ্টি-কালচার , চলন বলন, ধর্মীয় মূল্যবোধের মধ্যে খুব বেশী পার্থক্য নেই । আমরা যারা সেই ৫ ভাগের মধ্য পড়ি না তারা প্রায় সবাই সামাজিকতা , শালীনতা , মানসিকতায় ও খুব কাছাকাছি পর্যায়ের। এখন ও সেই সব পরিবারের বাবা মায়েরা তাদের মেয়েদের কে শালীন পোশাক পড়ে ,শালিনতা বজায় রেখে , সামাজিকভাবে, সতীত্ব বজায় রেখে ই চলতে বলেন । আর খুব আধুনিক বা প্রগতিশীল পরিবারের কথা আমার জানা নেই ।
২০১০ সালের জরিপের তথ্যমতে আমাদের দেশে ৪১ দশমিক ২ শতাংশ দরিদ্র। এর মধ্যে দুটি ভাগ—৩১ দশমিক ৯ শতাংশ দরিদ্র ও ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হতদরিদ্র।দেশে মাত্র ৪ দশমিক ৭ শতাংশ ধনী। মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। চলনসই বা নিম্নবিত্ত পরিবারের হার ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ।
আমার ছোটবেলার আশপাশের পরিবেশের মধ্যে আমি যেসব মহিলা, বড় আপুদেরকে দেখে বড় হয়েছি তারা সকলকেই শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ পড়া বা আপুদেরকে অনেক সময় লং স্কারট বা প্যান্টের সাথে শার্ট ,টপস পড়ে বের হতে দেখছি কখনও উগ্র বা অশালীন বলে মনে হয়নি। আধুনিক হওয়া বা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা খারাপ কিছু না।তবে সব কিছুর ই একটা সীমারেখা থাকা উচিত ।একটা দেশের সীমানা পার হলেই দেখা যায় সে দেশে অন্য এক কালচার , মানুষগুলো ,খাবার-দাবার, পোশাক সব ভিন্ন । সবাই তার নিজস্বতা আকড়ে ধরে রাখে ।
ব্যতিক্রম কেবল বাঙ্গালির বেলায় । এরা আধুনিক হয়ে ওয়েস্টার্নদেরকে ফলো করতে চায়, আবার মুসলিম হতে চায় , আবার কখনো প্রগতিশীল হতে চায় , আবার কখনো বাঙালি হতে চায় ।যে কথায় ছিলাম আমি এবং আমার বন্ধু বান্ধব, পাড়ার ছোট বড় ভাইয়েরা ও কিন্তু সে সমস্ত পোশাক , সামজিকতা, শালীনতা দেখে বড় হয়েছে । সমস্যা হল ভার্সিটিতে গিয়ে যখন আমার সে পাড়াত ভাইগুলা দেখে তারই পাড়াত বোন হাতাকাটা জামা পড়ে , বুকে ওড়না ছাড়া , হাঁটু দেখিয়ে তার সামনেই ঘোরাফেরা করছে তখন যদি সে তেঁতুল কল্পনা লালা ফেলায় সেটা কি তার দোষ ? সেই কলেজপড়ুয়া পাড়াত ভাই হয়ত লালা ঝরিয়ে নিজেকে দমিয়ে রাখল কারণ সে শিক্ষিত, আধুনিক,প্রগতিশীল, নারীর অধিকার সম্পর্কে সে সচেতন।সে বুঝতে শিখেছে এটা নারীর অধিকার ,সে যা ইচ্ছা তাই পরতে পারে।

কিন্তু যেহেতু আমাদের সমাজে নিম্ন এবং মধ্যবিওের সংখ্যাই বেশি আর সে সুন্দরি অপ্সরীরা বেশির ভাগই বি এম ডাব্লিউ ব্যবহার করে না এবং তাদের যাতায়াতের বাহনগুলো হল বাস , রিকযা, বা সি এনজি । নিম্নবিত্তের কোন পুরুষ যদি আপনার আশালীন পোশাক দেখে কোন বাজে মন্তব্য করে বা তাকিয়ে থাকে তবে আমরা তাকে বলি ক্ষ্যত, আন-কালচারড, তাদের মানসিকতা বাজে বলে গালমন্দ করি আর অতি সাহসী হলে দু চার ঘা লাগিয়ে জেলে দিয়ে নিজেকে সাহসী স্মার্ট বলে গর্ভবোধ করি। সৃষ্টি গত ভাবেই নারীরা সুন্দর, মোহনীয় ।
এ মুহূর্তে নাম মনে পড়ছে না কে যেন একজন বলেছিলেন- "উলঙ্গ থাকা যদি আধুনিকতা হয় তবে পশুরাই সবচেয়ে আধুনিক"

একটি মুসলিম প্রধান দেশে নারী যখন তার অর্ধেক পিঠ খোলা রেখে হাতাকাটা ব্লাউজ পরবে , বুকের ক্লিভেজ দেখিয়ে, ফরসা - সুন্দর মেদহীন পেট বের করে শরীরের সাথে চিপকায়া শাড়ি পরে মুখে আটা –ময়দা লাগিয়ে যখন কোন পাবলিক প্লেসে যাবে তখন সে কিভাবে আশা করে যে পুরুষগুলো সারাজীবন তার আশেপাশের সাদামাটা মেয়েদেরকে শালীনভাবে চলতে দেখছে , দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা পায়নি শিক্ষার আলো , পায়নি প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের সুযোগ ,দেখনি কোনদিন উঁচুতলার মেয়েদের,তারা সেই হূরের মত সুন্দরী মেয়েদের নরম সুন্দর পিঠ টা একটু ছুঁয়ে দেখবে না?
এটা কোনভাবেই আশা করা যায় না। পরির মত মেয়েদের সাজসজ্জা দেখে তো আমার নিজের ই ওদের কে ছুঁয়ে দেখতে মন চায় তাই বলে আমাকে লেসবি বলবেন না পিলিজ। যতই আমরা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি কেন পুরুষ তোমার দৃষ্টি সংযত রাখো আমাদের যা ইচ্ছা তাই পরব, সেটা আসলে কোনভাবেই সম্ভব না ।যারা মনে করেন ধর্ষণের মত ঘটনার সাথে পোশাকের কোন রিলেশন নেই আমি তা এক বাক্যে নাকচ করে দিব । অবশ্যই রিলেশন আছে তুমি অশ্লীল পোশাক পরে ঘুরে বেড়াবা আর কেউ তোমার সাথে অশ্লীলতা করবে না এটা ক্যামনে সম্ভব ? এ দেশে কি সব সুফি বাস করে নাকি ? এবার কথা আসতে পারে তাহলে গার্মেন্টস এর মেয়েরা বা খুব নিম্নবিও মেয়েরা কেন লাঞ্ছিত হয় ।কারণ এ জঘণ্য কাজের প্রতিবাদের সময় ,সুযোগ বা ক্ষমতা কোনটাই এদের নাই । যেহেতু তারা এলিট শ্রেণীর না তাই তারা থানায় যাওয়া মাত্রই পুলিশ সমাদর করে তাদের বসতে দিবে না , মনোযোগ দিয়া তাদের কথা শুনবে না এবং মামলা ও নিতে চাইবে না । আমাদের দেশে এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। উপরন্তু যে খাটাশ দ্বারা সে নির্যাতিত হইছে সে যদি একটু পয়সা ওয়ালা হয় তবে তার সাথে হাত মিলিয়ে টাকা খেয়ে ভিক্টিমকে দুই চার হাজার টাকা দিয়া মামলা নিস্পওি করবে। অথবা যদি পয়সা নয়া থাকে তবে হয়ত গা ঢাকা দিবে ।আর যে দেশে সাংবাদিক বা রাস্তায় জনসম্মুখে চাপাতির আঘাতে মানুষ হলে খুন হলেও পুলিশ কুওা দিয়া খুজলেও আসামি খুঁজে পায় না সে দেশে খেটে খাওয়া ফেলানিদের মামলা নিয়ে ভাবার সময় কই ? যেহেতু তারা খেটে খাওয়া মানুষ এবং একদিন কাজ না করলে পরিবার নিয়া না খেয়ে থাকতে হবে বা মাস শেষে বিপদে পড়তে হবে তাই কপালের লিখন মনে করে সব কিছু মেনে নেয় ।

নারীর মত নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার অসীম ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা পুরুষকে দেন নাই । কেউ কারো মতে হতে পারবে না । দুজনের মানসিকতা ও কখনো এক হবে না । পুরুষকে নারী বানাতে যাবেন না আবার নিজে নারী হয়ে পুরুষ হতে যাবেন না। দুজনেই আলাদা সৃষ্টি , শারীরিক বা মানসিক সবদিকেই। নারী নারী ই পুরুষ পুরুষ ই ।

তাই বোনদের কে বলছি দেশের ৯৫ ভাগ মানুষের মিলন মেলায় গেলে বা পাবলিক প্লেসে নিজেকে তাদের মতই ভাবুন , তাদের পোশাক পরুন, তাদের কালচারকে সম্মান করুন, আপনাকে কেউ ফুলের টোকা ও দিবেনা ।আর যারা বিকৃত মানসিকতার তারা বোরকা পড়লে ও আপনাকে ছিড়ে খেতে চাইবে । আর যখন ৫ ভাগ মানুষের সাথে সময় কাটাবেন তখন তাদের পোশাক পরে যান আপনার দিকে কেউ ফিরে ও তাকাবে না।
এ ঘটনা শুধু আমদের দেশে নয় আশেপাশের দেশ সহ ফ্রি সেক্সের দেশ পাশাত্যেও এর প্রভাব আছে । যারা ছোটবেলা থেকে আধ ন্যাংটো মেয়েদের দেখে অভ্যস্ত তারা ও কিন্তু নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটায় । বেহেস্তের হূর যদি পৃথিবীতে নেমে আসে তবে সব পুরুষ তাকে পেতে চাইবে এটাই তো স্বাভাবিক ব্যাপার।
বোনেরা আপনারা যারা পুরুষের সম অধিকার চান বুঝতে চেষ্টা করেন পুরুষ যদি আপাদমস্তক ঢেকে রেখে ফ্যাশন করতে পারে তবে নারীদেরকে কেন এর ব্যতিক্রম হতে হবে? সে যদি আপনাকে শরীরের কোন অংশ নয়া দেখাতে চায় তবে আপনার এত ভ্যাড়া ক্যান তাকে আপনার শরীর দেখানোর জন্য ?
আমার লেখা পড়ে অনেকেই আমাকে অনাধুনিক, গাইইয়া, ক্ষ্যাত বা নিচু মানসিকতার অধিকারি বলতে পারেন , তাতে কোন সমস্যা নাই । জ্বি , আমি আপনাদের মত আধুনিক না এখনও আমি ৫০ বছর পিছিয়ে আছি। এক জীবনে না হয় এত আধুনিক নাই হইলাম।

বোনেরা আমার আপনারা আর কবে বুঝবেন প্রগতিশীলতার নামে এসব পুরুষগুলো দিন দিন আপনার সম্মান নিয়ে খেলছে । আপনার সামনে আপনার সাহসিকতার প্রশংসা করছে আর পিছনে আপনার এই বোকামি দেখে হাসাহাসি করছে , আপনার উদারতার সুযোগ নেওয়া শেষ হতেই আপনাকে খারাপ মেয়েদের তালিকায় ফেলে দিচ্ছে , এটা এদের চাল । প্রগতিশীল পুরুষেরা তাদের স্বার্থে আপনাকে প্রগতিশীল বানাচ্ছে আবার তাদের স্বার্থেই আপনাকে বন্দী করছে ।
নারীর অধিকার নিয়ে চিল্লানোর দিন শেষ ।এবার নিজ দায়িত্বে বদলাতে হবে পুরুষদের নারীদের কে নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×