somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

*** ছফর মাস ও সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত কুফরী আক্বীদা ***

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা আল্লাহ পাক-এর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না।” (সূরা লুকমান ১৩)
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ রয়েছে, পেঁচা ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে- বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। এরূপ কুফরী, শিরকী আক্বীদা থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।
যে কোন বিষয়ে অশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। যেমন, অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ রয়েছে, পেঁচার মধ্যে ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে বলে বিশ্বাস করা ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার (উদয় বা অস্ত যাওয়ার) কারণে বৃষ্টি হওয়াও ভিত্তিহীন এবং ছফর মাসে অশুভ বলতে কিছু নেই।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ/৩৯১, শরহুস সুন্নাহ-৬/২৭১)

উল্লেখ্য, জাহিলী যুগ হতে এখন পর্যন্ত কিছু লোকের এরূপ ধারণা বদ্ধমূল রয়েছে যে, ঘুম থেকে উঠে পেঁচা দেখা কিংবা রাতে পেঁচার ডাক শোনা কুলক্ষণ বা অমঙ্গলের পূর্বাভাস। আবার বিশেষ তারকা বা গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। অথচ এরূপ ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ করা সম্পূর্ণ কুফরী ও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
খাছ করে ছফর মাসের মধ্যে কোন প্রকার অশুভ ও খারাবী নেই। আর আমভাবে কোন মাস ও দিনের মধ্যেই খারাবী বা অশুভ বলতে কিছু নেই। মাস-দিন-সময়কে খারাপ বলার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ পাককে খারাপ বলা। কেননা, মাস-দিন-সময় এগুলো আল্লাহ পাকই সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আদম সন্তান মাস-দিন-সময়কে গালি দিয়ে সমালোচনা করে, খারাপ বলে আমাকে কষ্ট দেয়। অথচ আমিই সৃষ্টিকর্তা এবং আমার নির্দেশেই এরা পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ আমিই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করি।” তাই ছফর মাসসহ কোন মাস-দিন-সময়কেই খারাপ ও অশুভ বলা বা মনে করা যাবে না। যদি কেউ তা বলে বা মনে করে তবে সে কুফরী-শিরকী করার গুনাহে গুনাহগার হবে।
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে কোন বিষয়কেই অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তিনি এ বাক্যটি তিনবার উল্লেখ করেন।” (তিরমিযী শরীফ, মাওয়ারিদ, মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল-১/৪৩৮, শরহুস সুন্নাহ-৬/২৭৪, মিশকাত শরীফ/৩৯২, শরহুত ত্বীবী-৮/৩২)
কোন রোগই সংক্রামক নয়। কাজেই রোগ-ব্যাধিকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে মনে করা কুফরী-শিরকীর অন্তর্ভুক্ত। হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোন রোগই সংক্রামক নয়। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই এবং ছফর মাসের মধ্যেও অশুভ কিছু নেই। তখন এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে উটের এ অবস্থা হলো কেন? যে উটগুলো ছিল জংলী হরিণের মত তরু-তজা, যেগুলো ময়দানে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতো। এমতাবস্থায় কোথা হতে এক চর্মরোগাক্রান্ত উট এসে সে উটের পালে মিলিত হলো এবং উটগুলোকে চর্মরোগী বানিয়ে দিলো। ফলে এ উটগুলোও খুজলীযুক্ত হয়ে গেল। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আচ্ছা তাহলে প্রথম উটটির চর্মরোগ কোথা থেকে হলো?” অর্থাৎ প্রথম উটটি যেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছিল ঠিক পরবর্তী উটগুলোও সেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছে। (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ/৩৯১, শরহুস সুন্নাহ-৬/২৬৫)
স্মর্তব্য যে, চিকিৎসা শাস্ত্রের পাঠ্যসূচিতে অদ্যাবধি ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত কোন ইলম সূচিভুক্ত না থাকার কারণে অনেক সময় কোন কোন চিকিৎসক কিছু কিছু রোগ সম্পর্কে যেমন- চর্মরোগ, খুজলী-পাঁচড়া, কুষ্ঠ, কলেরা-বসন্ত ইত্যাদিকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে বলে অভিমত ব্যক্ত করে থাকে। যা সম্পূর্ণ কুফরী শিরকীর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এরূপ ভ্রান্ত আক্বীদা হতে বিরত থাকা ফরয-ওয়াজিব।
তবে ভাল লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা করার অবকাশ আছে তথা মুস্তাহাব।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “কোন বিষয়কে অশুভ কুলক্ষণে মনে করোনা, তবে শুভ লক্ষণ আছে। ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুভ লক্ষণ কি? তখন তিনি বললেন, উত্তম কথা, যা তোমাদের মধ্য হতে কেউ শুনতে পায়।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ /৩৯১, শরহুত্‌ ত্বীবী-৮/৩১৩, শরহুস সুন্নাহ-৬/২৭২)
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত ইলম না থাকার কারণে অনেকে এরূপ কুফরী আক্বীদা পোষণ করে থাকে। মূলকথা হলো- অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ রয়েছে, পেঁচা ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে বলে বিশ্বাস করা শিরক-এর অন্তর্ভুক্ত। এরূপ কুফরী-শিরকী আক্বীদা থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×