তারানা হালিম সম্প্রতি ফেসবুক বন্ধের কারন জানিয়ে খোলা চিঠি দিয়েছে।অনেক আবেগে ভরা চিঠি।
আমার মনে হল আমি এই চিঠিটির জবাব দিতে পারবো।
(প্রথমেই বলে রাখি তারানা হালিম কে ব্যক্তিগত ভাবে খুবই পছন্দ করি।উনার কথা বলার ভঙ্গি চমৎকার এবং গ্রহনযোগ্য।তবে উনার অভিনয়টা আমার বেশি ভাল লাগতো।উনার অভিনয়ের একটা নিজস্বতা রয়েছে যেটা বাংলাদেশের বেশীরভাগ অভিনয় শিল্পীর নেই।)
চিঠির জবাবঃ
প্রথমেই তিনি বলেছেন চাঁদে দেখা এবং বোদ্ধ বিহার সম্পর্কে।
মূলত দুটি ঘটনার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।চাঁদে দেখা ব্যাপারটা মানবতা বিরোধী বিচারের সাথে সংশ্লিষ্ট আর বোদ্ধ বিহারে হামলা কটূক্তি জনিত কারনে।যেটা যেকোন সময় হতে পারে।এখন কেউ একজন ধর্ম নিয়ে বাজে মন্তব্য করে অসহিষ্ণুতা ছড়াবে আর আপনি তাকে আইনের আওতায় না এনে ফেসবুক বন্ধ করে দিবেন?
আর বোদ্ধ বিহারের হামলার পরে তো ফেসবুক বন্ধ করা হয়নি?তাহলে অযথা সিম্পাথি পাওয়ার আশায় এটাকে টানছেন কেন?
আর মজার ব্যাপার হল,বোদ্ধ বিহারের হামলার ঘটনাটি যে রাজনৈতিক সেটাতো পরে প্রমান হয়েছে।
এবার আসি চাঁদে দেখা গুজব প্রসঙ্গে,
মাওলামা সাঈদীর বিচারের পরে তো আরো অনেক গুলো বিচারের রায় হয়েছে।তখন ফেসবুক খোলা ছিল।এবং সেগুলো তে কোন গুজব ছড়ায় নি!
কিংবা খুব একটা অস্থিতিশীল পরিবেশও সৃষ্টি হয়নি।তাহলে এই বিচারের পর হামলার আশংকা কেন?যদি গোয়েন্দা তথ্য হয়ে থাকে তবে মাননীয় মন্ত্রি চাঁদে দেখা প্রসঙ্গ টানলেন কেন?
আমি মোটামুটি নিশ্চিত এখনো যদি কোনভাবে সাঈদীর ফাঁসির হুকুম হয় তাহলে সেই আগের পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
বিশ্বের অনেক দেশেয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়!
দায়িত্বশীল মন্ত্রি হিসেবে কিছু দেশের নাম উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল।
মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয় জামায়াতিদের যোগাযোগ বন্ধ করতে।
আমার মনে হয় জামায়াত শিবিরের অনলাইন জ্ঞান সম্পর্কে সরকারের নূন্যতম ধারনা নেই।তারা অনলাইন জ্ঞানে সরকারের চেয়ে অনেক এগিয়ে।এবং তাদের যোগাযোগ করার জন্য তারা অন্য অনেক বিকল্প আগে থেকেই ভেবে রেখেছে,আর অন্য অনেক উপায়ও আছে।
মূলত যারা ইন্টারনেট বলতে বুঝে শুধু ফেসবুক আর হোয়াটস আপ(বাংলাদেশে এদের সংখ্যাই বেশি) তারা ছাড়া বাকি সবাই সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম আরামছে ইউজ করেছে।
ট্রাফিক কম বলে পর্যবেক্ষণ সহজ হয়েছে,এই যুক্তি অতি সাধারন সস্তা যুক্তি।
আর ফেসবুক বন্ধের কারনেই নাকি বেশ কয়েকজন কে গ্রেফতার করা গেছে,
তাহলে এর আগে যাদের কে ফেসবুক বন্ধ করা ছাড়াই সাইবার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা কে কি বলবেন?
কার্যত এগুলোর সাথে ফেসবুক বন্ধের কোন সম্পর্ক আছে বলে যুক্তিযুক্ত মনে হয় না।
ফেসবুক বন্ধ করায় জঙ্গি তৎপরতা কমেছে বলে দাবী করেছেন,গত দুদিনের পত্রিকা পড়লে সে গুড়েও বালি।
তারানা হালিম ধন্যবাদ দিয়েছেন যারা দেশের স্বার্থে ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ রেখেছে,
তাহলে দেখেনিন কারা কারা দেশের স্বার্থে এই ত্যাগ করেনি মানে ফেসবুক বন্ধ রাখেনি,
১।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ
2|জুনায়েদ আহমেদ পলক(আইসিটি মন্ত্রী)
৩।প্রথম আলো,কালের কন্ঠ,বিডিনিউজ২৪ সহ দেশের সকল পত্রিকার ফেসবুক পেইজ।
কি বলবেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী?
তবে উনি এ মন্ত্রনালয়ে নতুন বলে বিকল্প ব্যবস্থা ভাবতে পারেন নি সে বিষয়ে খোলাখুলি বলেছেন।এর জন্য তাকে ধন্যবাদ।এবং পলক সাহেব কে খোঁচা দিলেন বলেও মনে হয়।
সব শেষে বলা যায় এই আধুনিক বিশ্বে কয়েকটি সফটওয়্যার বন্ধ করে দিয়ে দেশের পরিস্থিতি ঠান্ডা রাখা যাবে কিংবা জঙ্গি দমন করা যাবে, এসব শিশুসুলভ ভাবনা দূর না করলে ডিজিটাল দেশের স্বপ্ন রাতেই আসবে বাস্তবে নয়।
যাদের জন্যে ফেসবুক বন্ধ করেছেন তারা কিন্তু ঠিকই ফেসবুক চালিয়ে যাচ্ছে,বরং ক্ষতি হচ্ছে দেশের ফ্রিল্যাঞ্চারদের।যাদের প্রতি এই সরকারের সহযোগীতা বেশি বলে মনে করা হয়।
সরকারের প্রতি অনুরোধ দ্রুত সরকারিভাবে সব সফটওয়্যার খুলে দেওয়ার জন্যে।নিজের দেশে অপরাধীর মতো ফেসবুক ব্যবহার করতে ভাল লাগে না।