সমকালীন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ূন আহমেদ।তার তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা ছিল আছে থাকবে।এই কারনে তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা বেশী।একটি ব্যাপার স্পর্শকাতর তাহলো হুমায়ূন আহমেদ আস্তিক নাকি নাস্তিক।এনিয়ে বিতর্ক করার কোন কারন দেখছিনা।তবে আমি হুমায়ুন আহমেদের আস্তিকতা নাস্তিকতা নিয়ে আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা তুলে ধরব।
হুমায়ূন আহমেদ কে যদি মিসির আলী হিসেবে ধরে নিই তাহলে তিনি নাস্তিক।তবে মিসির আলীর সাথে হুমায়ূন আহমেদের সব বৈশিষ্ট্য মিলে না।
হুমায়ূন আহমেদ যুক্তিবাদী ছিলেন।যেহেতু নাস্তিকতা মানে ঈশ্বর নেই এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই যৌক্তিকতাও নেই সেহেতু এনিয়ে তার কনফিউশন ছিল বলে মনে হয়।
বিখ্যাত মহাকাশ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং
গত বছর সষ্ট্রা সম্পর্কে বলেছিলেন,
তার ভাষ্য
"মত্যুর পর কোন বেহেশত নেই মন্তব্য করে হৈচৈ ফেলে দেন।তিনি বলেন যারা মৃত্যুকে ভয় পায় তারা এই রুপকথা বানিয়েছেন।তিনি আরো বলেন মহাবিশ্বে সৃষ্টি ও তার বিকাশের ধারা তা অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত।এর পেছনে কোন স্রষ্টার হাত আছে বলে তিনি মনে করেননা।"
সূত্রঃ ৮ জানুয়ারী ২০১২ কালের কন্ঠ
হকিং এর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ।তার 'রংপেন্সিল'এ আমরা দেখতে পাই তিনি বলেছেন বিজ্ঞানীদের কাজ তথ্য তত্ত্ব ও যুক্তি দিয়ে কোন কিছু প্রমান করা।হকিং প্রমান করতে পারেনি যে ঈশ্বর নেই সেক্ষেত্রে এটা অবৈজ্ঞানিক।
হুমায়ূন আহমেদের গল্পে আমরা দেখতে পায় যে তিনি ইসলামী মাওলানাদের সম্মান দেখিয়েছেন।অনেক গল্পে আমরা দেখেছি কোন ইমাম মাওলানার দোয়ার কারনে গল্পের চরিত্র গুলো বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছে।
বাংলা ভাষার বেশীর ভাগ লেখকই ইসলামের অপব্যবহার গুলোকে বেশী হাইলাইট করে কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ ইসলামের ভাল দিক গুলো বেশী হাইলাইট করেছেন।
তার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস শ্যামল ছায়ার কেন্দ্রিয় চরিত্রে ছিল একজন মুসলিম ইমাম।এবং একজন আদর্শ মুসলিম ইমামের প্রকৃত রুপ সেখানে ফুটে উঠেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে কতটা ধর্ম পালন করত তা আমার অজানা।
আমার ধারনা এবং বিশ্লেষণ বলে তিনি নাস্তিক ছিলেননা।
যাই হোক তার আস্তিকতা নাস্তিকতা আমার বা আমাদের পাঠকদের দেখার বিষয় না।আমরা মুগ্ধ হয়ে তার লেখা পড়ি পড়ব।ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানাটানির যৌক্তিকতা নেই।
তার ৬৫তম জন্মদিনে রইল শুভেচ্ছা।আল্লাহ পরকালে তাকে সুখে রাখুন।