প্রতিদিন পেপার খুললেই নারী, শিশু এমনকি মধ্যবয়স্ক মহিলা ধর্ষণ , যৌতূকের কারনে গৃহবধূ হত্যা ইত্যাদি খবর দেখা আমাদের অভ্যাসে দাড়িয়ে গেছে । এখন নতুন খবর যা দেখা দিয়েছে তা হল মেয়ে / প্রেমিকার ( গোপনে / জোর করে) অশ্লীল ভিডিও করে তা দিয়ে ব্লাকমেইল , হুমকি ও অবশেষে ফাঁস।
আপনি বলবেন মেয়েগুলাই খারাপ ; বিয়ের আগে অনৈতিক সম্পর্ক কেন করতে গেছে । তাহলে আপনাকে মনে করিয়ে দেই যে এক হাতে কখনও তালি বাজেনা। মেয়েদের উপর দোষ চাপিয়ে পুরো সমস্যাটা আপনি ভুলে যেতে পারেন না কারন আপনি সমাজের বাইরের কেউ নন । এই মেয়েগুলোর মধ্যে কেউ আপনার বোন ও হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হল এসব ঘটনার কারন কি ?
আপনিও বলবেন যে _ ' নৈতিক অবক্ষয় '
এই নৈতিক অবক্ষয়ের পিছনে কারন কি?
আপনার নানা মত থাকতে পারে। আমার মতে _
১) পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাব।
২) ধর্মীয় সিক্ষার অভাব ও ধর্মীয় গোঁড়ামির প্রভাব।
গুনিজন বলেন _ মধ্যম পন্থাই সর্বৎকৃষ্ট পন্থা ।
জীবনে চলার পথেও এ কথা সত্য অথচ বর্তমানে আমাদের দেশে কোথাও ধর্মীয় শিক্ষার অভাব ( বিশেষ করে শহর অঞ্চলে) আবার কোথাও ধর্মীয় গোঁড়ামির প্রভাব ( বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে ) দেখা দিয়েছে।
আমার স্পষ্ট মনে আছে ছোটবেলায় প্রায়শই আব্বু আমাদের অনেক রকম গল্প বলতেন। তাতে ভালো মন্দের তফাৎ, আদর্শ ও মূল্যবোধের শিক্ষা, সততা ও নিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা, স্রধা ও ধৈর্যের গুন এসবই উঠে আসতো। আজ বাবা মার বাচ্চাদের জীবনের শিক্ষা দেবার এত সময় কোথায় ?
আজ মানুষ শুধু চিন্তা করে ছেলেমেয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে, কত টাকা উপার্জন করবে ইত্যাদি । এছাড়া, একান্নবর্তী পরিবারে দাদা, দাদি, ফুফু, চাচা সবার সাথে মিলেমিশে থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যায় একক পরিবারে সে শিক্ষা কোথায় ?
অথচ সত্তিকারের জীবনের অর্থ প্রতিযোগিতা নয় সহযোগিতা ।।
এর উপর বোঝার উপর শাঁকের আটির মতো টিভিতে ডিশলাইন, ইন্টারনেট এ পর্ণ ছবির সহজলভ্যতা পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করেছে। বর্তমান জেনারেশন পাশ্চাত্য মূভি দেখে কল্পনার এই জগত কেই বাস্তব মনে করছে। অন্যদেশের সংস্কৃতির সাথে গুলিয়ে ফেলছে আমাদের সংস্কৃতি। পর্ণমুভি মানসিকতাকে করে দিচ্ছে বিকৃত ! মূল্যবোধ ও শ্রধাবোধ মুখ থুবড়ে পড়ছে।
এর ফলাফলই হল ধর্ষণ, ইভটিজিং, ভিডিও ফাঁস, অনৈতিক সম্পর্ক, পারিবারিক ভাঙ্গন ও অশান্তি প্রভিতি ।
এ সবই একই সুতায় গাঁথা ।।
ভালো / খারাপ খুবই আপেক্ষিক ব্যাপার। কোনও সমাজে যা ভালো অন্য সমাজে তা খারাপ। জাতি, স্থান, ব্যক্তি ভেদে ভালো মন্দের তফাৎ হবেই।
তবে আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তবে আমি বলব _ যা কিছু মানুষের ক্ষতি সাধন করে তা সবই খারাপ।
কোনও শিশুই অপরাধী হয়ে তো জন্মায় না ।
তাই আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি মানুষের ভিতর ভালোর দিকটাই বেশি। শুধু সময়ের সাথে সাথে ভালো জায়গাটুকুতে ধুলা পড়তে থাকে ; তখন অস্পষ্ট ও ঝাপসা হয়ে আসে। তখন শুধু খারাপটাই মাথাচাড়া দিয়ে দাড়ায়। আস্তে আস্তে দখল করে নেয় মনুষ্যত্বটুকু। তাই নিজেকে পুরোপুরি হারিয়ে ফেলার আগেই সতর্ক হন।
পরিশেষে বলব _ ' দৃষ্টিভঙ্গি বদলাও ; জীবন বদলে যাবে "
সম্পর্কিত লিঙ্ক ঃ
১) Click This Link
২) Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০২