somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইয়িদ রফিকুল হক
আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

এখন মনে প্রশ্ন জাগে: একজন শ্যামল কান্তি ভক্ত কি আসলেই নির্দোষ? আর তিনি কেন এভাবে জনসমক্ষে কানধরে উঠবস করতে গেলেন?

১৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এখন মনে প্রশ্ন জাগে: একজন শ্যামল কান্তি ভক্ত কি আসলেই নির্দোষ? আর তিনি কেন এভাবে জনসমক্ষে কানধরে উঠবস করতে গেলেন?
সাইয়িদ রফিকুল হক

শিক্ষক জাতির নমস্য। সর্বকালে সর্বযুগে আর সর্বদেশে শিক্ষকের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত। আর আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষক মানে পিতামাতার পরেই যার স্থান। তাই, শিক্ষক হতে গেলে অবশ্যই একজন মানুষকে পিতামাতার মতো হতে হবে। আর শিক্ষক তিনিই হবেন যার মেরুদণ্ড আছে। কোনো অমেরুদণ্ডীপ্রাণী কখনও কোনো জাতির শিক্ষক হতে পারে না। আরও স্পষ্টভাষায় আজ বলতে চাই: কোনো কাপুরুষ কখনও শিক্ষক হতে পারে না।

একজন শিক্ষক তার শিক্ষকতার জীবনে একাধিক শিক্ষার্থীকে কানধরে উঠবস করিয়েও (আবার কাউকে তা না-করিয়েও বা কাউকে কানে না-ধরিয়েও) তিনি আদর্শ শিক্ষক হতে পারেন। আর তিনি একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎমঙ্গলের কথা ভেবে তাকে কখনওসখনও লঘু-গুরু-দণ্ড দিতে পারেন। শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা চিরকাল কানধরে উঠবস করেছে। এটিই ভারতীয় উপমহাদেশের ট্র্যাডিশন। আর বাংলাদেশে এই প্রথম দেখলাম একজন শিক্ষক কথিত-নষ্ট-ছাত্রসমাজের কথায় কানধরে উঠবস করলেন! এটি রীতিমতো আশ্চর্যের বিষয়! কারণ, তিনি যাদের কথায় জনসমক্ষে এভাবে কানধরে উঠবস করেছেন, তারা তাঁর ছাত্র-সমতুল্য।

এতোদিন এইব্যাপারে তেমনকিছু বলিনি। রাজনীতির মাঠ গরম ছিল। কারণ, শ্যামল কান্তি বাবুকে নিয়ে এতোদিন মিডিয়া থেকে শুরু করে ফেসবুকে-ব্লগে কিছুসংখ্যক মানুষ খুব সরব ছিল। সত্যিকথা কি এতোদিন এই নিয়ে একটা রাজনৈতিক চালও চেলেছে অনেকে। তাদের মনে হয়তো অন্যরকম বাসনা ছিল। কিন্তু তাদের সেই আশায় হয়তো গুড়েবালি! অনেকটা তাদের এতোদিনের বাড়া ভাতে ছাই!

আজই প্রথম শুনলাম শ্যামল কান্তি বাবুকে তার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, তিনি আবার স্বপদে (হেডমাস্টার হিসাবে) বহাল হয়েছেন। খুব ভালো কথা। দেশের একটা গ্যাঞ্জাম মিটে গেছে। কিন্তু আমাদের মনের ভিতরে একটা প্রশ্ন সবসময় খচমচ-খচখচ করে আমাদের খুব জ্বালাতন করছে। আর তা হলো: একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত মহাশয় কেন জনসমক্ষে কানধরে উঠবস করতে গেলেন? কেন? কেন? কেন?

কেউ-কেউ হয়তো বলবেন: তিনি পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন! তার অন্য কোনো উপায় ছিল না! কিন্তু তাই বা কেন? তিনি কেন এমন একটি লজ্জাজনক কাজ করতে গেলেন?
তাঁর এতো কীসের ভয়? কার রক্তচক্ষুকে তিনি ভয় পান? আর তাই, তাদের কথায় তাঁকে এভাবে জনসমক্ষে কানধরে উঠবস করতে হবে! সমীকরণটি মিলছে না।

একজন শিক্ষক হবেন মেরুদণ্ডসম্পন্ন মানুষ। তিনি দুনিয়ার কাউকে ভয় পাবেন না। কারও কাছে মাথানত করবেন না। কারও ভয়ে তিনি আপস করবেন না। তিনি ভাঙ্গবেন কিন্তু কখনও মচকাবেন না। তাকে জেল-জুলুম-মৃত্যু-হুলিয়া ইত্যাদির ভয়প্রদর্শন করলেও তিনি একচুল-পরিমাণ টলবেন না। তা-না-হলে তিনি কীসের শিক্ষক। আর একজন শিক্ষকের কাছে তাঁর জীবনের চেয়ে সম্মান অনেক বড়। তিনি সেদিন কানধরে উঠবস না করলে তাঁকে কে কী করতো? তাঁকে মেরে ফেলতো? তাই কী? তিনি শহীদ হতেন। তবুও তাকে সারাজীবন এই অগৌরব বহন করে বেড়াতে হতো না। আর দেশের শিক্ষকসমাজকে এভাবে অপমানিত হতে হতো না। ভুল তিনি করেছেন। কিন্তু কেন এই ভুলটি করলেন?
আর সবচেয়ে বড় ভুল করেছে, সেইসব পাষণ্ড—যারা তাঁকে বিচারের নামে প্রহসন করে তাঁকে কানধরে উঠবস করিয়েছে? আবারও মনে প্রশ্ন জাগে: নাকি তিনি তাঁর অপরাধবোধ থেকেই কানধরে উঠবস করতে রাজী হয়েছিলেন?

পুনশ্চ: একজন শিক্ষক অপরাধ করলে তাকে চোরের মতো শাস্তি দেওয়া যাবে না। তাঁর অপরাধের জন্য তাঁকে থানায়-আদালতে সোপর্দ করতে হবে। দেশের আইনঅনুযায়ী তাঁর বিচার হবে। কিন্তু এভাবে কানধরে উঠবস করানোটা ছ্যাবলামি ছাড়া আর-কিছু নয়। দেশে সকলের মনে শুভবুদ্ধির উদয় হোক।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর ঢাকা, বাংলাদেশ।
১৯/০৫/২০১৬

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×