যে গানগুলো শুনলে এখনও চোখে জল আসে! (প্রথম পর্ব)
সাইয়িদ রফিকুল হক
বাংলাভাষায় এমনকিছু গান আছে, যা শুনলে এখনও আমার চোখে জল আসে। আর নিজের অজান্তেই মনের কষ্টে না সুখে, চোখ দুটো একেবারে জলে ভরে ওঠে। আমার তাই মনে হয়: এমন সুন্দর গান হয়তো পৃথিবীর আর-কোনো দেশে নাই। কারণ, আমাদের দেশের মতো এতো ঘটনাবহুল ইতিহাসও হয়তো পৃথিবীর আর কোথাও নাই। ভারতবর্ষ কত ধর্মের আর কত জাতির মিলনমেলা! ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলাগানগুলো নিজের যোগ্যতায় এক শক্তিশালী শিল্প-মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এমন সুন্দর গান আর কোথায় খুঁজলে পাওয়া যাবে? আমার জানা নাই। আর কেউ তার ঠিকানা জানলে আমাকে তা জানাবেন।
চোখে জল আসার মতো গানগুলো হলো:
১. ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি,
হাসি-হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী!’
২. ‘আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল,’
৩. ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার ’পরে ঠেকাই মাথা,
তোমাতে বিশ্বময়ীর তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।’
৪. ‘সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহীদ স্মরণে,
আমার হৃদয় রেখে যেতে চায় তাঁদের স্মৃতির চরণে।’
৫. ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি,
মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।’
৬. ‘বনমালী গো পরজনমে তুমি হইয়ো রাধা,’
আমার এই ক্ষুদ্র-জীবনে ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি,’ আর ‘আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল!’ গান দুটি যতবার শুনেছি ততবারই বিষণ্ণ এক ভালোবাসায় ভুগেছি। আর সঙ্গে চোখের জল তো আছেই। এখনও এই গান দুটি শুনলে মনটা যেন কেমন-কেমন করে! আর মনের কোণে একটুখানি মায়াজন্মে দেশপ্রেমিক-বীরপুরুষের জন্য। মনটা কেমন হু-হু করে! আর সবসময় মনে হয় সে ছিল আমাদের একজন—আর সে আমাদের পরম আত্মীয়।
ভারতবর্ষের ইংরেজবিরোধী সর্বকনিষ্ঠ প্রতিবাদী-যোদ্ধা ছিলেন ক্ষুদিরাম বসু। দেশপ্রেমের এক সুমহান আদর্শকে বুকে ধারণ করে ভারতবাসীর চিরঅভিশাপ ইংরেজদের বিতাড়ন করার জন্য তিনি যারপরনাই প্রচেষ্টাগ্রহণ করেছিলেন। আর তার কেবলই মনে হতো যেকোনোমূল্যে এই পাপিষ্ঠ ও অত্যাচারী ইংরেজদের ভারতবর্ষ থেকে চিরতরে বিতাড়ন করতে হবে। তাই, ইংরেজদের মনে আতংকসৃষ্টি করতেই তিনি তৎকালীন অত্যাচারী-বড়লাটকে মারার জন্য বোমা ফাটিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বোমায় বড়লাট না মরে কয়েকজন সাধারণ ইংরেজ মারা যায়। আর এতেই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় সমগ্র ভারতবর্ষে বড়ই বেদনাবিধুর পরিবেশসৃষ্টি হয়।
(ক্রমশঃ)
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২০/০৪/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫