তোমাকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলী জীবনের শেষ বেলা
জীবন এবং মরণের এই কঠিন সন্ধিক্ষণে
তোমার জন্য শুভকামনা, করি আজ প্রাণমনে ।
জীবনের দামে জ্বালিয়েছিলে তুমি যে আলোর শিখা
সে আলোয় আজ আলোকিত সারা দক্ষিন আফ্রিকা
মানচিত্রের সীমানা পেরিয়ে তোমার আলোর জ্যোতি
শান্তিকামী বিশ্ববাসীকে দিয়েছে চলার গতি
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তুমি ছিলে বীর সৈনিক
তোমার নামের সুনাম তাইতো বিশ্বে চতুর্দিক
কালো মানুষের অধিকার আদায়ে তুমিছিলে প্রতিবাদী
তোমার কাছে পরাজিত তাই হয়েছে বর্ণবাদী ।
ভালোবেসেছিলে অরণ্য তুমি , ভালোবেসেছিলে মানুষ
তোমার উপরে হায়েনা দলের এ কারনে ছিলো রোষ
নেকড়ে দলের প্রলোভনে তুমি করোনি কখনো সন্ধি
সুদীর্ঘকাল খাঁচার ভিতরে তাইতো রয়েছো বন্দী
জেলের ভেতর অন্ধ কুটিরে কেটেছে রাত্রিদিন
তবুও তোমার দেশাত্ববোধ হয়নি মোটেও লীন
শৃংখল পায়ে গেয়ে গেছো তুমি মুক্তির জয়গান
সে গানের সুরে অরণ্য জুড়ে ঝরেছে অগ্নিবান
তোমার কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে কোটি পল রবসন
শান্তসুবোধ মানুষের মনে তুলে ছিলো জাগরন
সেই জাগরণে একদিন অবশেষে
খাঁচা ভেঙে তুমি বেরিয়ে এসেছো বিজয়ী বীরের বেশে ।
জেলের ভেতরে পাথর ভেঙেছো, ভাঙেনি তোমার মন
শত্রুর কাছে লৌহমানব তুমি ছিলে নেলসন ।
নেকড়ের সাথে পাঞ্জা লড়ে জীবন হয়েছে ক্ষয়
বিশ্ব কাঁপিয়ে অরণ্যে তুমি এনেছো সূর্যদয় ।
মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছিলো, ছিলো যে মমতাবোধ
আফ্রিকাবাসী তাইতো করছে এখনো সে ঋণ শোধ ।
তোমাকে বলেছে সন্ত্রাসী যারা অতীতে বিশ্ব সভাতে
শান্তিপদক এরাই আবার দিয়েছে তোমার হাতে !
জনম তোমার সার্থক হলো হে আমার প্রিয়জন
তোমাকে রাখবে মনে আজীবন সারাটা বিশ্ব ভুবন
তাইতো তোমার বিদায় লগ্নে অশ্রু সিক্ত নয়ন
স্বজনের শোকে বিষাদে নুয়েছে সবুজ বৃক্ষবন ।
শান্তির দুত শান্তি তোমাকে করুক আলিঙ্গন
সদুর থেকে জানাই আজকে প্রাণের অভিবাদন
আমার সকল ভালোবাসা ভরে সফেদ রঙের খামে
পাঠিয়ে দিলাম জোহানার্সবাগে আজকে তোমার নামে ।