আমি খাবারের ছবি, রেসিপি পোস্ট দেই বলে অনেকেই আমাকে পেটুক বলে ভাবতে পারেন। সত্যি বলছি! আমি পেটুক নই। আমি খাদ্য রসিক। অল্প খাবারই খাই। কিন্তু সেই অল্পটুকুও মুখরোচক হতে হবে। দিল্লীতে গিয়ে আমার খাবারের সমস্যা হয়নি। মুরগী আমি খাইনা, ওখানে মাছ বিক্রি হতে দেখেছি, কিন্তু কোনো হোটেলে মাছের কোনো আইটেম বিক্রি হতে দেখিনি। ওদের সবজি বলতেই আলু, মটর, পনির, মিষ্টি কুমড়া মুলা, লাউ দিয়ে ঘ্যাট, সাথে ঐ মটর। খেতে খারাপ নয়। তবে কুম্ভকর্ণের পেটে মটর সহ্য হয়না বলে অনেক খুঁজেও যখন তার প্রিয় সবজি গোবি+কদ্দু পাচ্ছিলনা। তখন হোটেলের ক্যান্টিনেই খাবারের বন্দোবস্ত করলেন। ওরা খুব ভালোই রান্না করতো।
একদিন দিল্লীর বিখ্যাত কারিমস এ খেতে গেলাম। গলি তস্য গলি পার হয়ে তারপর কারিমস এর সন্ধান পেলাম। বিদেশী টুরিষ্টদের ভিড়ে গিজগিজ করছিলো।
এই কারিমসের পুর্ব-পুরুষেরা নাকি মোগলদের রান্নার কাজে নিযুক্ত ছিলো। আমার রসনা কিন্তু তৃপ্ত হয়নি। ঐ যে কথায় বলেনা, সারমেয় এর পেটে ঘি হজম হয়না। ঠিক ঐ রকম!
কারিমসের নান আর পায়া।
একদিন চাঁদনীচক মার্কেট থেকে ফিরছি। হঠাৎ নজরে পড়লো রাস্তার বা-দিকে হলদিরামের বিখ্যাত মিষ্টির দোকান। কুম্ভকর্ণের নজরে আনতেই আমাকে একটি গুরু দোয়ারার সামনে রিক্সায় বসিয়ে চলে গেলো। প্রায় ঘন্টা-খানিক পর এক প্যাকেট নিয়ে ফিরে এলো। হোটেলে এসে দেখি গোলাপ জামুন, মুগ ডালের হালুয়া, আর রাবড়ি নিয়ে এসেছে। নিজেতো মিষ্টি ছুঁয়েও দেখেনা। তার সাথে থাকতে থাকতে আমারও মিষ্টি প্রিতি কমে গিয়েছে। সাড়ে আটশো টাকার মিষ্টি দেখে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝে উঠতে পারিনি। অল্প হালুয়া, একটা গোলাপ জামুন, আর একটা রাবড়ি খেয়ে বাকি সব হোটেলের বয়দের খাইয়ে দিলাম। তখন ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম। তাই গুগল থেকে ছবিগুলো দিলাম।
গোলাব জামুন।
মুগ ডালের হালুয়া।
রাবড়ি।
এই হলো বিখ্যাত দিল্লীকা লাড্ডু। অতিরিক্ত চিনি দেয়ায় খেতে গেলে কচ কচ করে উঠে। মাথা ভন ভন করে দাঁত কনকন করতে শুরু করবে। এরকমই দেখতে মোতিচুরের লাড্ডু খেতে অনেক মজার। কিন্তু ওটা তো আর দিল্লিকা লাড্ডু নয়।
বিকেল থেকে পুরনো দিল্লীর রাস্তার পাশে বিভিন্ন কাবাব, পরটা ভাজার গন্ধে ভুর ভুর করতে থাকে। পথের পাশের ঐ সব খাবার দেখে যতই লোভ হোক, খাওয়ার সাহস হয়নি। মানুষ ভীড় করে ঐসব গরম গরম তেলেভাজা, কাবাব খাচ্ছে।