(বুঝতে পারছি না,এহেন পরিস্থিতিতে, এই বাচ্চাটার সাথে কিভাবে ট্রিট করব যাতে ও
এরকমভাবে ভেঙে না যায়?মেনে নিতে পারে,বুঝতে পারে!)
বাচ্চাটা মাত্র ক্লাস ফোরে পড়ে। আমার খুব প্রিয় একটা আর প্রচন্ড
মেধাবী একটা স্টুডেন্ট!অসম্ভব মায়াবী আর তীক্ষ্ণ চেহারার অধিকারী!
খুব কম মানুষের চেহারাতে এই ২টা বৈশিষ্ট্য একসাথে থাকে!
বাচ্চাটা বেশ শক্ত টাইপের।সহজে হাসে না,সহজে কাদেঁও না।
প্রথম প্রথম একদম চুপচাপ থাকত।
আস্তে আস্তে আমার সাথে ইজি হওয়া শুরু করল।
প্রথম থেকেই ওর প্রতি আমার দুর্বলতা ছিল।
এখন থেকেই সে ধর্মের ব্যাপারে সচেতন আলহামদুলিল্লাহ্।
এই সমাজে অনেক সাবালক ভায়েরা
হিজাব নিয়া মুখে ফেনা তুলে ফেলতেসে লেকিন নিজের প্যান্ট
টা যে গোড়ালির উপরে তুলতে হবে সে ব্যাপারে বেখবর!
অথচ আমার এই ১০বছর বয়সী স্টুডেন্ট টা এখন ই
মা~শাল্লাহ এই সুন্নাহ মেনে চলে!
আমি মুগ্ধ হয়ে ওকে বলেছিলাম,
"ভাইয়া, তুমি এটা কিভাবে শিখলা?"
"আপু,আব্বু শিখায়ছে!"
শব্দটা এখন শিখিয়েছিল হবে।
একটা শব্দে মানুষ টা অতীত হয়ে যাবে!
প্রায় ১বছর হল,ওর বাবা মারা গেছে।সরকারি
বাসায় আর ২মাস হয়ত থাকতে পারবে।
ওর সামনে বাবা শব্দটা উচ্চারণ করা
যায় না।আমি যতটা সম্ভব ওর সামনে
এভয়েড করি।অথচ সিলেবাস ভরে
আছে,বাবার কাছে টাকা চেয়ে
পত্র,পরীক্ষার প্রস্তুতি জানিয়ে পত্র!
বাচ্চাটার নাম ফাহাদ।
আজ আমার একটা মেয়ে স্টুডেন্ট ওকে, ওর
বাবার কথা জিজ্ঞেস করল।আমি
ছিলাম না।জুম্মার আযান দিচ্ছে
দেখে,ব্রেক দিলাম!
ছোট বোন এসে
বলল,"কিরে,তোর স্টুডেন্ট তো কাঁদছে! "
ছুটে গেলাম।মেয়েটার উপর মেজাজ কন্ট্রোল করলাম।
ফাহাদ টেবিলে মুখ গুঁজে আছে।
আমার না খুব কষ্ট লাগছিল!
আল্লাহর উপর অভিমানও চাপল। হতাশ
হয়ে বাইরে তাকালাম!
"হে আল্লাহ,
আমি এখন কি করব?"
মুয়াজ্জিন বলছে,
"হাইয়া আলাল ফালা
হাইয়া আলাল ফালা,,,"
আমি স্টুডেন্টদের বললাম,"বলতো, এর জবাবে কি বলতে হয়?"
ফাহাদ মুখ তুলে বলল,"লা হাওয়া ওলা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
আমি বললাম,"হুম,একমাত্র আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন কাজ
করাই সম্ভব না!"
মুয়াজ্জিনের কন্ঠে এবার ধ্বনিত হচ্ছে,
"আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার!"
আমার অভিমানী সত্ত্বা বিদীর্ণ হয়ে বলল,
"হে মহিমান্বিত প্রভু,
আমি ওকে সান্ত্বনা
দিতে পারি নি।
তুমি ওকে বেঁচে থাকার শক্তি দিও!"